কোরবানির পশুর চামড়া, দেশের চামড়াশিল্পে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। কিন্তু চামড়া প্রক্রিয়াকরণ ও সঠিক তদারকির অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে হাজারো কোরবানির চামড়া। কখনো বা পাচার হয়ে যাচ্ছে অন্য দেশে। ফলে একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে গরিবরা হারাচ্ছে তাদের প্রাপ্য অর্থ। যেখানে সঠিকভাবে তদারকি করতে পারলে চামড়ার বাজার চাঙা হতে পারে, বিদেশে রপ্তানি বাড়তে পারে কয়েকগুণ, সেখানে শুধু কিছু প্রয়োজনীয় উদ্যেগের অভাবেই লাভের বদলে লোকসান গুনতে হচ্ছে সংশিষ্ট সবাইকে।
চামড়া ছাড়ানোর সময় প্রথমেই পশুর সামনের এক পা থেকে বুকের ওপর দিয়ে অন্য পা পর্যন্ত লম্বালম্বিভাবে এবং পেছনের এক পা থেকে অন্য পা পর্যন্ত লেজের গোড়া থেকে প্রায় ৪-৬ ইঞ্চি ওপর দিয়ে লম্বালম্বিভাবে কাটতে হবে। একই সাথে চামড়ার জবাই স্থান থেকে পেটের ওপর দিয়ে লেজের গোড়া পর্যন্ত লম্বালম্বিভাবে কাটতে হবে।
জবাইয়ের পর চামড়া আড়াআড়ি কাটার জন্য সুচালো মাথার ছুরি এবং চামড়া ছাড়ানোর জন্য অবশ্যই বাঁকানো মাথার ছুরি ব্যবহার করতে হবে।
কোরবানির পশু জবাইয়ের পর রক্তমাখা ছুরি কোনোভাবেই পশুর চামড়ায় মোছা যাবে না, এতে চামড়ার ক্ষতি হতে পারে।
কাঁচা চামড়ার বড় ধরনের ত্রুটি (লেস-কাটা); যা অসতর্ককতা, অজ্ঞতা ও ভুল ছুরি ব্যবহারের মাধ্যমে হয়ে থাকে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, সতর্কতা ও বাঁকানো মাথার ধারালো ছুরি ব্যবহার করে লেস-কাটা হ্রাস করা সম্ভব।
কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ পদ্ধতি
চামড়া ছাড়ানোর পর লবণ দিয়ে সংরক্ষণের পূর্বে অবশ্যই চামড়ায় লেগে থাকা চর্বি, মাংস, রক্ত, মাটি এবং গোবর ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে চামড়ার পানি ঝরিয়ে লবণ প্রয়োগড় করতে হবে।
কাঁচা চামড়া ছাড়ানোর পর সংরক্ষণের জন্য (গরুর চামড়ার ক্ষেত্রে ৭-৮ কেজি এবং ছাগল/ভেড়ার চামড়ার ক্ষেত্রে ৩-৪ কেজি) লবণ প্রয়োগ করতে হবে। লবণ এমনভাবে প্রয়োগ করতে হবে যেন চামড়ার ফ্লেশ সাইডের কোনো অংশ ফাঁকা না থাকে, লবণ সমভাবে চামড়ায় ছড়িয়ে দিতে হবে।
চামড়া ছাড়ানোর ৪-৫ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই লবণ লাগাতে হবে এবং সংরক্ষণের জায়গা একটু ঢালু হতে হবে যেন চামা থেকে পানি ও রক্ত সহজেই গড়িয়ে যেতে পারে।
লবণ দেওয়া চামড়া এমন জায়গায় রাখতে হবে, যেন রোদ বা বৃষ্টির পানি না লাগে এবং বাতাস চলাচল স্বাভাবিক থাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।