জুমবাংলা ডেস্ক : করোনা আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে আসায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ৪ চিকিৎসককে নিজ দায়িত্বে হোম কোয়ারেন্টেনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (১৮ মার্চ) ঢামেকের খান মো. অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তারা পরীক্ষার পর প্রমাণিত হয়েছে, এমন রোগীদের সংস্পর্শে এসেছিলেন।
সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষসহ বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন এক জরুরি বৈঠকে বসেন। দীর্ঘ দেড় ঘণ্টার বৈঠকে করোনা ভাইরাস নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানান কলেজের অধ্যক্ষ খান মো. আবুল কালাম আজাদ।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ার পর থেকে ঢামেক হাসপাতালে নিউমোনিয়া, জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি নিয়ে প্রচুর রোগী প্রতিদিন আসছে। এদের মধ্যে ৩ থেকে ৪ জন রোগীর বক্তব্য শোনার পর তাদের ঢামেকের বাইরে সরকার নির্ধারিত হাসপাতলে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেখানে ওই রোগীদের করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে। আর তাদের যেসব চিকিৎসক চিকিৎসা দিয়েছেন, এমন চারজনকে তাই হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। চারজনই ঢামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক।
এদিকে গাজীপুরে কোয়ারেন্টাইনে থাকা আরও একজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে বাংলাদেশে এই ভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১১ জনে। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন গাজীপুরের সিভিল সার্জন খায়রুজ্জামান।
খায়রুজ্জামানের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা বলছে, গাজীপুরে কোয়ারেন্টাইনে থাকা এক ব্যক্তির দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এই ব্যক্তিসহ মোট আটজন গাজীপুরে কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। তাদের বেশিরভাগই ইটালি থেকে এসেছেন।
আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঢাকার একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন গাজীপুরের সিভিল সার্জন।
এনিয়ে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১১ জনে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য আক্রান্ত প্রথম তিনজন ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী ধরা পড়ে তিনজন। কয়েকদিন পর আরও কয়েকজন আক্রান্ত হোন। দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১১ জনে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য আক্রান্ত প্রথম তিনজন ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
উল্লেখ্য, চীনে করোনা ভাইরাস প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। কিন্তু চীনের বাইরে অন্যান্য দেশে ব্যাপক আকারে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। এতে বিশ্বব্যাপী প্রচণ্ড আতঙ্ক ও ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে।
করোনা ভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে ৮১৯ জনসহ মোট মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৯৮০ জনের। এর মধ্যে উৎপত্তিস্থল চীনে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ২৩৭। চীনের বাইরে মারা গেছে ৪ হাজার ৭৪৩ জন।
এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩৪৯ জন। এর মধ্যে ৮২ হাজার ৭৬৩ জন সুস্থ হয়েছে বাড়ি ফিরেছেন। চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৮৯৪। দেশটিতে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৯ হাজার ৬১৪ জন। এছাড়া চীনের বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৫ জন মানুষ।
বিশ্বজুড়ে বর্তমানে ১ লাখ ৭ হাজার ৬০৬ জন আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ১ হাজার ১৯০ জনের অবস্থা সাধারণ (স্থিতিশীল অথবা উন্নতির দিকে) এবং বাকি ৬ হাজার ৪১৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আক্রান্তের অনুপাতে মৃত্যুর হার ৯ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৯১ শতাংশ।
এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান ড. টেড্রস আধানম গেব্রেইয়সুস অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, সরকারগুলো এই বৈশ্বিক মহামারি ঠেকাতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তিনি সরকারগুলোকে নিজ নিজ দেশের করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা আরও বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন।
চীনে উদ্ভূত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৬৫টি দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।