জুমবাংলা ডেস্ক: বৈশাখ মানেই ভিন্ন সাজে গ্রাম-বাংলার প্রকৃতি। আকাশে গনগনে সূর্য। কাঠফাটা রোদে তপ্ত বাতাস। এতে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা প্রাণিকুলের। গ্রীষ্মের এই নিষ্প্রাণ রুক্ষতা ছাপিয়ে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বিভিন্ন খাল-বিল, নদী-নালা, পুকুর-ডোবা ও কাঁদাজলে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কচুরিপানা ফুল। এ ফুলের সৌন্দর্য প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে ভিন্ন নান্দনিকতা। সাদা, হালকা গোলাপি আর বেগুনি রঙের এ ফুলের মুগ্ধতায় মাতোয়ারা ফুলপ্রেমীরা। একদম এড়ানো যাচ্ছে না এই সৌন্দর্য।
সরেজমিন দেখা যায়, শিশু-কিশোররা এ ফুল তুলে এনে খেলা করছে। সৌন্দর্য বর্ধনে অনেক তরুণী খোপায় বাঁধছেন। জলাশয়ের ন্যায় দেখা যায়, কিশোরগঞ্জ সদর ইউপির রাজিব গ্রামের ওপর দিয়ে বহমান সেচ ক্যানেলের ধারের ডোবায় ফুটেছে হাজারো কচুরিপানা ফুল। অনেকে এর সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে নিজেকে করছেন ক্যামেরাবন্দি।
কিশোরগঞ্জ মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষক জ্যোতি কৃষ্ণ রায় বলেন, কচুরিপানা ফুলের যেমন সৌন্দর্য আছে তেমনি এ উদ্ভিদ বহুবিধ উপকারে আসে। দেশীয় মাছের বংসবিস্তার, খাদ্য, তাপদাহ থেকে রক্ষা, উৎকৃষ্ট জৈব সার, বিভিন্ন অবকাঠামো জমাট বাঁধানোর জন্য, পানি ধরে রাখতে, জ্বালানি, গোয়াল ঘরে বিছানো, ভাসমান কচুরিপানার ওপর হরেক সবজির চাষসহ বিশেষ করে বন্যার সময় গো-খাদ্যের চাহিদা মেটাতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
উপজেলার আয়ুর্বেদ চিকিৎসক বেলাল হোসেন জানান, কচুরিপানায় আ্যান্টি-ইনফেমেটরি, আ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং আ্যান্টি-ব্যাটেরিয়াল উপাদান রয়েছে। কচুরিপানা সিদ্ধ, রান্না কিংবা রস যেকোনোভাবে খাওয়া যায়। যা রস বা খাবার শরীরকে শক্তিশালী ও সুস্থ রাখতে, বার্ধক্য রোধ করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, পেট ফাঁপা, গলা ব্যথা-ফোলা, কানের সমস্যাসহ এসব রোগ নিরাময়েও রয়েছে দারুণ কার্যকারিতা। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসার ভিড়ে এ ভেষজ চিকিৎসা হারিয়ে যাচ্ছে।
রাজিব ক্যানেল পাড়ের বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম রাশেদ বলেন, গ্রাম-বাংলার অতি পরিচিত একটি জলজ উদ্ভিদ কচুরিপানা। তার মধ্যে যে ফুল ফোটে তা দেখতে সত্যি মনোমুগ্ধকর।
ওই ডোবার চোখ জুড়ানো ফুলের নান্দনিকতা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে তা দেখতে আসা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী স্বপ্না শান্তা বলেন, কচুরিপানা ফুল যে এত নয়নাভিরাম আগে জানতাম না। এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। প্রাণ ভরে উপভোগ করছি এ ফুলের মুগ্ধতা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, কচুরিপানা বহু-বর্ষজীবী ভাসমান জলজ উদ্ভিদ। এর ক্ষতিকর দিক থাকলেও অনেক ভালো দিকও রয়েছে। সৌন্দর্য বিলানোর পাশাপাশি জৈব সার, ভাসমান পদ্ধতি সবজি চাষ। গো-খাদ্যের চাহিদা মেটানোসহ নানাবিধ কাজে ব্যবহার করে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।