আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বব্যাপী গরুর মাংস খাওয়া মাত্র ২০ শতাংশ কমালে আগামী ৩০ বছরের মধ্যে বন উজাড় ও গরুপালনের সঙ্গে সংশি্লষ্ট কার্বন নিঃসরণ অর্ধেক কমবে। বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচার-এ প্রকাশিত সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। গত বুধবার এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়।
প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগেই জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তঃসরকার প্যানেল সতর্ক করে যে বৈশ্বিক উষ্ঞতা বৃদ্ধি প্রাক-শিল্পযুগের চেয়ে সর্বোচ্চ দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখতে বিশ্বের কোথাও লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ চলছে না।
বিশ্বে বন উজাড়ের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী কারণগুলোর একটি গরুর মাংস খাওয়ার অভ্যাস। কারণ ব্রাজিলসহ কিছু দেশে প্রতিবছর গরুর খামার গড়ে তোলার জন্য বন উজাড় করে জমি পরিস্কার করা হয়। আমাজনে প্রায়ই আগুন দিয়ে বন উজাড় করা হয়। পাশাপাশি গরু থেকে নিঃসৃত বিপুল পরিমাণ মিথেন গ্যাসও উষ্ণায়নের অন্যতম কারণ।
জার্মানির পটসড্যাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চের বিজ্ঞানী ও গবেষণার প্রধান লেখক ফ্লোরিয়ান হাম্পেনোডর বলেন, গরুর মাংসের বিকল্প তৈরি করা গেলে তা পরিবেশ সুরক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারে।
এর আগের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মাইক্রোপ্রোটিন নামের মাংসের একটি বিকল্প খাদ্য গ্রহণ করা হলে তা পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ইস্পাতের ট্যাংকে গ্লুকোজ ও অন্য উপাদানের সঙ্গে মাটিতে জন্মানো একটি ছত্রাক গাজন করা হলে এক ধরনের খাবার উৎপাদিত হয়, যা মাংসের বিকল্প হতে পারে। ১৯৮০-এর দশকে যুক্তরাজ্যে এটির প্রচলন হয়। এখন এটা অনেক দেশেই পাওয়া যায়।
পটসড্যামে খাদ্যব্যবস্থা নিয়ে অধ্যয়ন করা ফ্রানজিসকা গাউপ বলেন, গরুর মাংসের বিকল্প হিসেবে মাইক্রোপ্রোটিন ব্যবহার করা যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কার্যকর হতে পারে হামপেনোডর ও তঁার সহকর্মীরা সে বিষয়ে প্রথম ধারণা দিলেন।
গবেষণায় বলা হয়, গরুর মাংস খাওয়ার অভ্যাস ২০ শতাংশ কমিয়ে বিকল্প হিসেবে মাইক্রোপ্রোটিন গ্রহণ করা হলে ২০৫০ সাল নাগাদ মিথেন গ্যাসের নিঃসরণ ১১ শতাংশ কমতে পারে। এ ছাড়া বন ধ্বংস এবং এর সঙ্গে সংশি্লষ্ট অন্য দূষণ অর্ধেক কমতে পারে।
গবেষণায় আরো বলা হয়, গরুর মাংস খাওয়া ৫০ শতাংশ কমিয়ে মাইক্রোপ্রোটিন খাওয়া হলে বন উজাড় ও কার্বন নিঃসরণ ৮০ শতাংশ কমবে। আর ৮০ শতাংশ কমিয়ে মাইক্রোপ্রোটিন খেলে বন উজাড় ও দূষণ ৯০ শতাংশ কমবে।
সূত্র : নেচার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।