নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: লিড সনদে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে বিশ্বের শীর্ষ পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি অর্জন করেছে এসএম সোর্সিং নামের তৈরি পোশাক কারখানা। ১১০ নম্বরের মধ্যে এসএম সোর্সিং পেয়েছে ১০৬। এর আগে ১০৪ নম্বর নিয়ে ময়মনসিংহের গ্রিন টেক্সটাইল (ইউনিট ৪) ছিলো বিশ্বের শীর্ষ পরিবেশবান্ধব কারখানা।
এসএম সোর্সিং নামের তৈরি পোশাক কারখানা গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। চার বিঘা জমির ওপর গড়ে এই প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের শেষ দিকে তাদের উৎপাদিত তৈরি পোশাক ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) রপ্তানি শুরু হয়। কারখানাটিতে কাজ করেন ৮০০ পোশাকশ্রমিক।
তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমই গত বুধবার জানিয়েছে, শুধু এসএম সোর্সিং ও গ্রিন টেক্সটাইল নয়, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় পরিবেশবান্ধব ১০টি কারখানার ৯টিই এখন বাংলাদেশে। এসএম সোর্সিং ও গ্রিন টেক্সটাইল ছাড়া বিশ্বের শীর্ষ ১০টি কারখানার তালিকায় থাকা বাংলাদেশের অপর ৭টি পরিবেশবান্ধব কারখানা হলো গাজীপুরের নিট এশিয়া ও ইন্টিগ্রা ড্রেসেস, নারায়ণগঞ্জের রেমি হোল্ডিংস ও ফতুল্লা অ্যাপারেলস, গাজীপুরের লিডা টেক্সটাইল অ্যান্ড ডাইং ও লিজ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিজ এবং মানিকগঞ্জের তারাসিমা অ্যাপারেলস।
বিজিএমইএর তথ্যানুযায়ী, তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে বর্তমানে লিড সনদ পাওয়া পরিবেশবান্ধব কারখানা ২০৬টি। তার মধ্যে লিড প্লাটিনাম সনদ পেয়েছে ৭৬টি। গোল্ড ১১৬টি, সিলভার ১০টি এবং সার্টিফায়েড সনদ পেয়েছে ৪টি কারখানা। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সনদ পেয়েছে এসএম সোর্সিং। এর আগে সর্বশেষ গত ৭ ডিসেম্বর গাজীপুরের কাশিমপুরের নাইস কটন লিড প্লাটিনাম সনদ পেয়েছে। ১১০ নম্বরের মধ্যে কারখানাটি পেয়েছে ৮১। ইউএসজিবিসির লিড সনদের টেকসই কারখানা প্রাঙ্গণ ক্যাটাগরিতে এসএম সোর্সিং পেয়েছে ১০-এ ১০; পানির দক্ষ ব্যবহারে পেয়েছে ১২-তে ৯; জ্বালানি ও পরিবেশে পেয়েছে ৩৮-এ ৩৭; উপকরণ ও সম্পদে ৮-এ ৮; অভ্যন্তরীণ পরিবেশ মানে ১৭-তে ১৭, উদ্ভাবনে ৬-এ ৬, আঞ্চলিক অগ্রাধিকারে ৪-এ ৪; অবস্থান ও যাতায়াতে ১৫-তে ১৫।
কারখানা পাশে অবস্থিত চায়ের দোকানদার সফিকুল ইসলাম বলেন, আমার মেয়ে রানী এই কারখানায় সুয়িং সেকশনে অপরেটক হিসাবে কাজ করে। আমি গত ২৫ বছর বিভিন্ন কারখায় কাজ করেছি কিন্তু এসএম সুয়িং কারখানার মতো সুন্দর পরিপাটি এবং কর্মীবান্ধব কারখানা কখনো দেখিনি। বাইরে থেকে দেখে কারখানার পরিবেশ দেখে ভেতরের অবস্থা কল্পনা করা অসম্ভব। আমার মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে বেতন ভাতা নিয়ে কখনো কোনো সমস্যা হয়নি। নির্দিষ্ট সময়ে বেতন দিয়ে দেয়।
কারখানা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে কাজ করে তারা উৎফুল্ল। মালিক যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাদেট সঙ্গে আলোচনা করে নেন। শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধার বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখেন৷
এসএম সোর্সিং কারখানার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের শেষদিকে কারখানাটির উৎপাদন শুরু হয়। পরের বছর লিড সনদের জন্য আবেদন করেন মির্জা শামস মাহমুদ। কারখানাটির ৬০ হাজার বর্গফুটের মধ্যে ১৮ হাজার বর্গফুটের সুইং ইউনিট পরিবেশবান্ধব সনদ পেয়েছে। এই ইউনিটে বাচ্চাদের পোশাক তৈরি হয়। কারখানা চত্বরের বাগানের পুরো নিচের অংশে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই পানি কারখানার বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হবে। তাছাড়া কারখানার ছাদে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।