নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কলাগাছে দিয়ে তৈরি শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর সেটি লাথি দিয়ে ভেঙে ফেলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়। গতকাল গাজীপুর মডেল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে শাস্তি স্বরূপ শ্রেণি কক্ষ পরিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গাজীপুর মডেল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ দুই শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবককে নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। তারা হলো- একই স্কুলের নবম শ্রেণির মো. সামির ও দশম শ্রেণির আলিফ।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, কিছু না বুঝেই ওই দুই শিক্ষার্থী লাথি মেরে শহীদ মিনার ভেঙে নিজেদের ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে বলে জানিয়েছে। এ কারণে তারা অনুতপ্ত, ক্ষমাও চেয়েছে। তাই তাদেরকে শাস্তি হিসেবে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রতিদিন প্রতিষ্ঠানের সমস্ত শ্রেণি কক্ষ, ব্রেঞ্চ পরিষ্কার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের এ পরিষ্কার কার্যক্রমে যতদিন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট না হবে ততদিন চালিয়ে যেতে হবে।
ইউএনও আরও বলেন, ওই দুই শিক্ষার্থীর বয়স কম হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাই স্কুলের পক্ষ থেকে তাদের ওপর এই মানবিক শাস্তি আরোপ করা হয়।
প্রসঙ্গত, গাজীপুর মডেল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে স্থায়ী কোনো শহীদ মিনার নেই। তাই প্রতি বছর কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
এ বছরও কলা গাছের তৈরি শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর মডেল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে কর্তৃপক্ষ। আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে ওই প্রতিষ্ঠানের দুই শিক্ষার্থী অনেকটা ফিল্মি স্টাইলে লাথি মেরে শহীদ মিনার ভেঙে ফেলে।
এই দৃশ্য ভিডিও করে নিজেরাই গত রোববার ফেসবুকে পোস্ট করে। পরে ২৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিও অনেকে নিজেদের ওয়ালে পোস্ট করে নিন্দা জানায়। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্কুল ড্রেস পরা দুই শিক্ষার্থী মাঠের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। এক পর্যায়ে তারা দুজন মিলে এক সঙ্গে দৌড়ে এসে অস্থায়ী ভাবে কলা গাছের তৈরি শহীদ মিনারে লাথি দেয়।
বিয়ষটি নিয়ে শিক্ষার্থী আলিফের সঙ্গে কথা হয়। সে জানায়, আমি বুঝতে পারিনি। না বুঝে কাজটি করে ফেলেছি। ভুল হয়ে গেছে।
স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা শফিকুল ইসলাম জনী বলেন, আমরা এই ঘটনায় ব্যথিত হয়েছি। বাঙালির আবেগ-অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে। আমরা ওই দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছি। তিন কর্মদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
https://inews.zoombangla.com/%e0%a6%b8%e0%a7%82%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%96%e0%a7%80-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a7%87%e0%a6%b6/
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।