লাইফস্টাইল ডেস্ক : চোখের সামনে কারও হার্ট অ্যাটাক হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে। কিন্তু ঘুমের মধ্যে যদি হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যায়, তখন কী করবেন? হৃদরোগে যত মানুষ মারা যান, তাদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশের মৃত্যু হয় হঠাৎ, অনেক সময় ঘুমের মধ্যেই। যাকে ‘সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ’ বা ‘সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ বলে। ৬ মাসের কম বয়সী বাচ্চারা সাধারণত ‘সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম’-এ মারা যায়।
৩০ বছরের পর থেকে এর ঝুঁকি বাড়তে থাকে এবং ৪০-৭৫ বছর বয়সে হাজারে ১-২ জন মানুষ এভাবে মারা যান।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়াই আচমকা হার্টের অন্যান্য দিক থেকে হৃদস্পন্দন একই সঙ্গে তৈরি হয়। ফলে হৃদস্পন্দন অনেক বেড়ে যায়। একে বলে ‘ভেন্ট্রিকুলার ট্যাকিকার্ডিয়া’। তার অল্পক্ষণের মধ্যেই হার্ট এত কাঁপতে থাকে যে পাম্পিং প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। একে বলে ‘ভেন্ট্রিকুলার ফিব্রিলেশন’। অক্সিজেনের অভাবে প্রথমে রোগি জ্ঞান হারায়। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ৫-৭ মিনিটের মধ্যেই রোগির মৃত্যু নিশ্চিত। আবার সামান্য কিছু ক্ষেত্রে হৃদস্পন্দন তৈরি হতে না পেরে হার্ট থেমে যায়। দুই ক্ষেত্রেই রোগির হার্টে আগে থেকেই কিছু না কিছু গোলমাল থাকে। তবে কিছু ব্যবস্থা নিলে এই হঠাৎ মৃত্যু কিছুটা ঠেকানো যায়।
যেভাবে ঠেকাবেন ‘সাডেন ডেথ’
► ‘ইস্কিমিয়া’ নামের হৃদরোগ হলো সাডেন ডেথের অন্যতম কারণ। হার্ট অ্যাটাক হলে আশঙ্কা আরও বাড়ে। বিপদ ঠেকাতে প্রেশার-সুগার-ওজন ইত্যাদিকে সামলে রাখুন। শরীরচর্চা ও স্ট্রেস ম্যানেজ করুন, সঠিক খাবার খান। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।
► খুব ভালোভাবে চিকিৎসা না হলে ১০-১৫ শতাংশ হার্ট অ্যাটাক রোগীর সাডেন ডেথ হতে পারে। কাজেই ভালোো পরিষেবা আছে এমন জায়গায় চিকিৎসা করান।
► হার্ট অ্যাটাক হয়ে হার্টের পাম্প করার ক্ষমতা ৩৫ শতাংশের নীচে নেমে গেলে বিপদের আশঙ্কা বেশি। সঙ্গে অনিয়মিত হৃৎস্পন্দনের অসুখ থাকলে আরও বিপদ। এ সব ক্ষেত্রে হৃদবিশেষজ্ঞের কথা মতো চলুন।
► হার্ট ফেলিওর থাকলে ভালো করে চিকিৎসা করে তাকে আয়ত্তে রাখুন।
► অ্যায়োর্টিক ভাল্ভের অসুখকে হেলাফেলা করবেন না।
► জন্মগত হৃদরোগ ও কিছু জেনেটিক অসুখ থাকলে বিপদ আছে। সমস্যা সামলাতে ইমপ্ল্যান্টেবল কার্ডিওভার্টার ডিফিব্রিলেটর নামের পেসমেকার বসাতে হয়।
► প্রায়শই বুক ধড়ফড়, মাথা ঘোরা বা ব্ল্যাক আউট হলে কার্ডিওলজিস্ট দেখান।
► শরীরে ঘন ঘন সোডিয়াম-পটাশিয়াম লেভেলের হেরফের হলেও সমস্যা হতে পারে। সে দিকে নজর রাখুন।
► রক্তের সম্পর্কযুক্ত আত্মীয়দের মধ্যে কেউ কম বয়সে হৃদরোগে হঠাৎ মারা গেলে, কোনও কষ্ট না থাকলেও মাঝেমধ্যে চেক আপ করান।
চিকিৎসা
► হাসপাতালে শক দিয়ে হার্ট চালু করে ওষুধ দিয়ে রোগীকে স্থিতিশীল করা হয়। তার পর হয় পরীক্ষানিরীক্ষা। গোলমালের মূলে রক্তে ইলেকট্রোলাইটের কম-বেশি বা কোনও ওষুধের হাত থাকলে সহজেই সমস্যা মিটে যায়।
► হৃদরোগ সন্দেহ হলে করা হয় ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাফি, করোনারি অ্যাঞ্জিওগ্রাফি বা ইপি স্টাডি। কারণ পাওয়া গেলে ওষুধ বা অপারেশন করে তা সামলানো হয়।
► কারণ না পাওয়া গেলে দ্রুত আইসিডি নামের পেসমেকার বসাতে হয়। আইসিডি হার্টের ওপর নজর রাখে। হার্ট রেট মারাত্মক বেড়ে গেলে শক দিয়ে তা স্বাভাবিক করে। আবার হার্ট রেট কমে বিপজ্জনক পরিস্থিতি হলে এর ব্যাক আপ পেসমেকার সার্ভিস সেটা সামলে দেয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।