জুমবাংলা ডেস্ক: হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মান কাজ শুরু হচ্ছে চলতি বছরের শেষ দিকে। নির্মাণ শুরু হলে চার বছর সময় লাগবে শেষ করতে। তিনতলা টার্মিনাল বিশিষ্ট এই ভবনের আয়তন দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। এই ভবনটির নকশা প্রস্তুত করেছেন স্থপতি বোহানি বাহারিন। তিনি এনওসিডি-জেভি জয়েন্ট ভেনচার পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের আওতাধীন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিপিজি করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের (সিঙ্গাপুর) স্থপতি।
বেবিচক সূত্র জানিয়েছে, তৃতীয় টার্মিনালে ২৪টি বোডিং ব্রিজের ব্যবস্থা থাকলেও প্রকল্পের প্রথম ধাপে ১২টি বোডিং ব্রিজ চালু করা হবে। বহির্গমনের জন্য ১৫টি সেলফ সার্ভিস চেক ইন কাউন্টারসহ মোট ১১৫টি চেক ইন কাউন্টার থাকবে। এছাড়া, ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ মোট ৬৬টি ডিপারচার ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে। আগমনীর ক্ষেত্রে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেক ইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট এবং ১৯টি চেক ইন অ্যারাইভেল কাউন্টার থাকবে। টার্মিনালে ১৬টি আগমনী ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হবে। এছাড়া, অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজের জন্য চারটি পৃথক বেল্ট স্থাপন করা হবে।
তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পের প্রথম ধাপের সঙ্গে বর্তমান টার্মিনাল ভবনগুলোর কোনও যোগযোগ ব্যবস্থা থাকবে না। তবে প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে কানেকটিং কোরিডোরের মাধ্যমে পুরনো টার্মিনাল ভবনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে বেবিচকের সংশ্লিষ্ট সূত্র।
সূত্র আরো জানায়, তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হবে। সেখানে পার্কিয়ের সুযোগ পাবে ১০৪৪টি গাড়ি। বর্তমানে ভিভিআইপিদের জন্য শাহজালালে পৃথক যে ভিভিআইপি কমপ্লেক্স রয়েছে তা ভেঙে ফেলা হবে। তবে তৃতীয় টার্মিনালে পৃথকভাবে স্বতন্ত্র কোনও ভিভিআইপি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে না। তৃতীয় টার্মিনাল ভবনের অভ্যন্তরে দক্ষিণ পাশে সর্বাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ভিভিআইপি স্পেস রাখা হবে।
জানা গেছে, এখনই কোনও পরিবর্তন আসছে না অভ্যন্তরীণ টার্মিনালটির। নির্মিতব্য তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে গিয়ে অভ্যন্তরীণ টার্মিনালটি সরিয়ে নেওয়া হবে। শাহজালাল বিমানবন্দরের উত্তর পাশে রয়েছে আমদানি ও রফতানি কার্গো ভিলেজ। বর্তমান কার্গো ভিলেজের উত্তর পাশে যথাক্রমে ৩৫ হাজার ৮৬৩ বর্গমিটার ও ২৭ হাজার ১৪৪ বর্গমিটার আয়তনের সর্বাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন দুটি পৃথক আমদানি ও রফতানি কার্গো ভিলেজ নির্মাণ করা হবে।
তৃতীয় টার্মিনালে থাকবে আন্তজার্তিক মানের অত্যাধুনিক অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা। লাউঞ্জ, দোকান, রেস্টুরেন্টসহ সংশ্লিষ্ট অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের যাত্রীসেবার সুবিধাও রাখা হবে। ভবনের সঙ্গে ভূ-গর্ভস্থ সুড়ঙ্গ পথ এবং উড়াল সেতু নির্মাণ করা হবে, যার মাধ্যমে মেট্রোরেল ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের সংযোগের ব্যবস্থা থাকবে।
সূত্র আরো জানায়, বিমানবন্দরে দক্ষিণ পাশে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের হ্যাঙ্গার থাকলেও এটিকে আপাতত সরাতে হচ্ছে না। সরাতে হবে না পদ্মা ওয়েল ডিপোও। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের কাছেই রয়েছে হেলিকপ্টারের হ্যাঙ্গার। এখান থেকেই ফ্লাইট অপারেশন করে থাকে হেলিকপ্টার অপারেটরগুলো। তৃতীয় টার্মিনালের জন্য এগুলো সরিয়ে বিমানবন্দরের উত্তর সীমানা প্রাচীরের কাছে স্থানান্তর করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, প্রতিবছর দেশে আট শতাংশ হারে আকাশপথের যাত্রী বাড়ছে। বর্তমানে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ পরিমাণ যাত্রী ধারণের সক্ষমতা নেই। এজন্য তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি নির্মাণ হলে যাত্রীদের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।