কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ডিউটি ছেড়ে বাড়িতে অবস্থান করছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সামসুল আরেফিন।
গেল ২৬ মার্চ থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত তিনি। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে চাকরি করবেন না বলে জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও জানিয়েছেন, গেল ২৬ মার্চ থেকে ডা. সামসুল আরেফিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসুস্থতার কথা বলেছেন।
এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল আলম বলেন, ছুটি ছাড়া তিনি বাড়িতে অবস্থান করছেন। মৌখিক ও লিখিত কোনোভাবেই তিনি বিষয়টি আমাদের অবহিত করেননি। তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ডাক্তার আরেফিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে গণমাধ্যমে তিনি বলেন, আমার এবং আমার পরিবারের জীবন বাঁচাতে হাসপাতাল ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। কর্তৃপক্ষ জোর করে ডিউটি পালনের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করাই আমি বেশ কিছুদিন ধরে ডিপ্রেশনে ভুগছি। এছাড়া আমার অ্যাজমার সমস্যা রয়েছে। করোনা ভাইরাসটি অ্যাজমা রোগীদের জন্য বেশি ঝুঁকি। এছাড়া আমি শুনেছি, গত ২৪ মার্চ হাসপাতালে দু’জন রোগী শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে এসে মারা গেছেন। তাদের ব্যাপারে কোনো তথ্য আমরা জানার আগেই রোগীর লোকজন মরদেহ নিয়ে চলে গেছে। আমি ওটা দেখেও ভয় পেয়েছি। তাই নিজের এবং পরিবারের লোকজনকে বাঁচাতেই চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। আমি ওখান থেকে এসেই হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছি। তবে বর্তমানে ভালো আছি। পরিবার পরিজনকে বাঁচাতে প্রয়োজনে চাকরি ছেড়ে দেবো।
বাড়িতে থাকার বিষয়টি স্বীকার করে ডা. সামসুল আরেফিন বলেন, আমি ছোটবেলা থেকে রোগে ভুগছি। ডিউটি করতে আর ভালো লাগে না। তাই চাকরি ছেড়ে দেব বলে স্যারদের জানিয়ে দিয়েছি।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার এমকে রেজা বলেন, বর্তমানে ডাক্তারদের জন্য সব ধরনের ছুটি বাতিল ঘোষণা করেছেন সরকার। দেশের এই আপদকালীন সময়ে একজন ডাক্তার হিসেবে তার পালিয়ে যাওয়া সমীচীন নয়। নিজেকে ও পরিবারকে বাঁচানো শুধু নয়, রোগীদের বাঁচানোও একজন ডাক্তারের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
আর হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়া রোগীদের সম্বন্ধে এমকে রেজা বলেন, ওরা যদি করোনা আক্রান্ত রোগী হতো তাহলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্য যেসব চিকিৎসক এবং নার্স রয়েছেন তারা সবাই আক্রান্ত হয়ে পড়তেন। এটা তার একটা অবান্তর ধারণা। এর আগেও তিনি এমনটি করেছেন।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুর রহমান জানান, এ বিষয়ে ডাক্তার আরেফিনের মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে। তিনি এখন কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।