স্পোর্টস ডেস্ক: শেষপর্যন্ত গুঞ্জনটাই সত্যি হলো। আর্জেন্টিনা ও বার্সেলোনার তারকা সার্জিও আগুয়েরো সব ধরনের ফুটবলকে বিদায় বলে দিয়েছেন। মাত্র ৩৩ বছর বয়সেই থেমে গেলেন মেসির এই সতীর্থ। বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) ক্যাম্প ন্যুয়ে অবসরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বেশ কয়েকদিন আগেই জানানো হয়েছিল আজ বিদায় বলবেন। কিন্তু ছলছল চোখে বিদায়ের ঘোষণা দিতে এসে যেন নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন না। দুই চোখ বেয়ে ঝড়েছে অশ্রু। আগুয়েরো বলেন, ‘আমি সব ধরনের ফুটবল আর না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
মেসির সঙ্গে খেলার ইচ্ছায় বার্সেলোনায় পাড়ি জমিয়েছিলেন আগুয়েরো। তবে ইচ্ছে তো পূরণ হয়নিই, উল্টো এই বার্সাতেই নিজের ফুটবল ক্যারিয়ারের ইতি টানতে হলো তাকে। তার হার্টের সমস্যা জটিল আকার ধারণ করায় শেষ পর্যন্ত বিদায় না বলে পারলেন না।
বিদায়বেলায় আগুয়েরোর কথাতেও উঠে এলো সে কথা। তিনি বলেন, ‘প্রথম ব্যাপার হচ্ছে আমার স্বাস্থ্য। আপনারা জানেন এক মাস আগে আমার হার্টে সমস্যা হয়েছিল। ভালো কিছু ডাক্তারের অধীনে চিকিৎসা নিয়েছি। তারা আমাকে বলেছে সবচেয়ে ভালো হয় যদি খেলা বন্ধ করে দেই। আমি এক সপ্তাহ আগে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
লা লিগায় আলাভেসের বিপেক্ষ ম্যাচটাই যে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ হতে যাচ্ছে, তা হয়তো কখনো কল্পনাও করেননি সার্জিও অ্যাগুয়েরো। ওই ম্যাচেই বুকে তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে মাঠ ছাড়েন আর্জেন্টাইন তারকা। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। পরবর্তীতে হৃদযন্ত্রের পরীক্ষা নিরীক্ষার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক কমপক্ষে তিন মাস বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেন তাকে। ফলে মাঠ থেকে দীর্ঘদিনের জন্য ছিটকে যান আগুয়েরো। এরপরেই তার অবসরের গুঞ্জন ওঠে গণমাধ্যমজুড়ে। এবার সেই গুঞ্জনটাই সত্যি হলো।
২০১১ থেকে ২০২১, দশ বছর ইতিহাদে কাটিয়েছেন আগুয়েরো। এর মধ্যে ৫ বছর গুরু হিসেবে পেয়েছেন পেপ গার্দিওলাকে। দু’জনের মধ্যে সম্পর্কের বোঝাপড়াটাও দীর্ঘদিনের। গার্দিওলার সেরা সেনানীদের তালিকায় যে প্রথম সারিতেই ছিলেন আগুয়েরো। তাই প্রিয় কোচ তার অবসরের দিনে পাশে থাকবেন এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কিইবা হতে পারে।
প্রিয় সতীর্থ ও বন্ধু লিওনেল মেসির সঙ্গে একই ক্লাবে খেলবেন বলে গেল দলবদল মৌসুমে বার্সেলোনায় পাড়ি জমান আগুয়েরো। কিন্তু ম্যানচেস্টার সিটি থেকে যে বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে তিনি বিনা পারিশ্রমিকে ন্যু ক্যাম্পে গিয়েছিলেন, তার সেই স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায় লিওনেল মেসির বার্সা ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। তারপরও নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু ইনজুরিটা বারবারই পথের কাটা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বার্সার হয়ে মাত্র ৫ ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছেন এই আর্জেন্টাইন। গোল পেয়েছেন একটি, সেটাও রিয়ালের বিপক্ষে এল ক্লাসিকোতে।
এর আগে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটিতে তার ক্যারিয়ার ছিল সমৃদ্ধ। ২০০৬ থেকে ২০১১ মৌসুমে অ্যাতলেটিকোতে থাকাকালে ১৭৫ ম্যাচ খেলে গোল করেছিলেন ৭৪টি। এরপর ২০১১ তে ম্যানচেস্টার সিটিতে পাড়ি দেওয়ার পর নিজেকে আরো মেলে ধরেন এই স্ট্রাইকার। দশ বছরের ম্যান সিটি ক্যারিয়ারে ২৭৫ ম্যাচ খেলে ১৮৪ গোল করেন ৩৩ বছর বয়সী এই ফুটবলার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।