মাহাবুর রহমান: গাজীপুরের কাপাসিয়ায় নিজেকে বিএনপি পরিচয় দাবি করে প্রভাব খাঁটিয়ে অন্যের কেনা জমি জবরদখলের চেষ্টায় হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের শ্যামপুর এলাকায় বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে কামাল হোসেন ও আলাল উদ্দিনের ক্রয়কৃত জমি জবরদখলে নেওয়ার মিশনে সংঙ্গবদ্ধ লোক নিয়ে হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে একই ওয়ার্ডের ইকরামের বিরুদ্ধে। এবিষয়ে কাপাসিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী আলাল উদ্দিন। এতে সহোদর মামা সহ তিনজনের লাম উল্লেখ্য করে অজ্ঞাত ১৫-১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ইকরাম (৪২) বারিষাব ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের চেংনা এলাকার মৃত মিয়ার উদ্দিনের ছেলে। তিনি শ্যামপুর মোড়ে রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী।সে নিজেকে বিএনপি দাবি করে। অপর দিকে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আবু তাহের ও ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন দাবি করেন ইকরামকে কোনোদিন বিএনপির কোনো কর্মকাণ্ডে দেখনি এবং বিএনপির সাথে তার কোনো সম্পর্ক আছে এমন প্রমাণ নেই বলে জানান।
একাধিক স্থানীয় জানায়, সহোদর মামা মতিউর রহমান (৫২) এর কাছ থেকে আলাল উদ্দিন ও কামাল হোসেন ২০০৩ সালে সাব কবলা (কাউলা) দলিল মূলে শ্যামপুর মৌজার ১১৫ নং দাগের স্থানীয় মাপে ৪২ গন্ডা জায়গা ক্রয় করেন এবং কাত হিসাবে কামালের বসত বাড়ীর দক্ষিন পাশের জায়গার পরিমাপ দলিলে উল্লেখ রয়েছে। শ্যামপুর মোড়ের রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী ইকরাম গায়ের জোরে প্রভাব খাঁটিয়ে জায়গাটি জবরদখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে স্থানীয়দের দাবি।
সরেজমিন ও অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, শনিবার দিবাগত রাতের অন্ধকারে ইকরাম সংঙ্গবদ্ধ টিম নিয়ে জমিতে থাকা বাউন্ডারি ভেঙে টলীদিয়ে ব্লকের ইট খোলে নিয়ে গেছে। জমি মালিক আলাল উদ্দিন মধ্য রাতে বাউন্ডারি ভাংঙ্গার শব্দ শুনে ডাক চিৎকার করায় তার বসত বাড়িতেও ইকরাম হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পরদিন রবিবার সকালে প্রকাশ্য দিবালোকে আবারও ১৫-১৬ জনের সঙ্গবদ্ধ একটি টিম নিয়ে ভুক্তভোগীদের বসত বাড়ির দক্ষিণ পাশে জায়গা দখলের মিশন নিয়ে বালু ফেলে ইকরাম। এসময় ভুক্তভোগী আলাল উদ্দিনের পঁচাত্তর ঊর্ধ্ব মা নূরজাহান ওরফে শান্তি মারাত্মক আঘাত প্রাপ্ত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে কাপাসিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফেরার করলে ওখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে বলে জানাগেছে।
অভিযুক্ত ইকরাম বলেন, তার ক্রয়কৃত জমিতে বাউন্ডারি ওয়াল করায় সে কামাল হোসেন ও আলাল উদ্দিনের করা ওয়াল ভেঙে দিয়েছে। রবিবার সকালে ১৫-১৬ জন লোক নিয়ে হামলার কথা অকপটে স্বীকার করে ইকরাম বলেন রাতে বসত বাড়িতে হামলার ঘটনা সত্য নয় এবং বাড়ির সামনে টিনের গেইটে কোনো আঘাত করা হয়নি। এটা তাদের সাজানো।
ওয়ার্ড মেম্বার আবু তাহের জানান, ঘটনা সত্য। ইকরাম কিসের বলে এসব করছে বিষয়টি বোধগম্য হচ্ছে না। জায়গা ক্রয় করে থাকলে মতিউর রহমানের কাছ থেকে ক্রয় করেছে। কামালের ক্রয়কৃত জমিতে তার কি। ইকরাম যা করতেছে তা শুধু পেশি শক্তি ও টার জুড়ে করতেছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন ও এডভোকেট মোশারফ হোসেন জানান, মতিউর রহমান একজন ফ্লট, তিনি একই জায়গা একাধিক লোকজনের কাছে বিক্রি করেছেন। প্রথমে আপন ভাগিনাদের কাছে বিক্রি করেছেন, পরে আরও চার জনের কাছে বিক্রি করেছেন। এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছিল। ইকরামুল কে রাস্তার ওই পাশে জায়গার দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়ে ছিলো। যে কোনো ঘটনা মীমাংসিত হওয়ার পরে পুনরায় আবার ইকরাম এখানে আসার কোনো যুক্তিকতা নেই।
এ ব্যাপারে এসআই মনির হোসেন জানান, শ্যামপুর এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা সত্য। পরদিন সকালে ইকরাম পুনরায় ওই জায়গায় সংঘবদ্ধ লোকজন নিয়ে বালু ফেলে দখলে চেষ্টা করতে গেলে একজন আহত হয়, এখন তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছে। এটি একটি নেককারজনক ঘটনা। স্যারের (ওসি) সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।