জুমবাংলা ডেস্ক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষায় শ্রুতিলেখনের মাধ্যমে প্রক্সি দেওয়ার অভিযোগে জালিয়াত চক্রের দুই সদস্য ও পাঁচ ভর্তিচ্ছুসহ সাতজনকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদ ও বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটভুক্ত ভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের ষষ্ঠ শিফটের পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটে।
জালিয়াত চক্রের আটক সদস্যরা হলেন- সাগর হোসেন রোহান ও মাহমুদুল হাসান শাওন। জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া ভর্তিচ্ছুরা হলেন- দেলোয়ার হোসেন, রাজু আহমেদ, মো. টুটুল হাসান, মো. মেহেদী হাসান ও আওয়াল হোসেন আরাফাত। আটক ভর্তিচ্ছু ও জালিয়াত চক্রের সদস্য শাওন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। আর সাগরকে ভ্রাম্যমাণ আদালত এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ২০০ টাকা জরিমানা করেছেন। তবে ভর্তিচ্ছুদের পরীক্ষা বাতিল করা হলেও মানবিক কারণে বিচার করেনি আদালত।
একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাওনকে ছাত্র-শৃঙ্খলা অধ্যাদেশে বিচারের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাকেও মানবিক দিক বিবেচনা করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ না করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
নিরাপত্তা শাখা ও সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাকক্ষে দায়িত্বরত শিক্ষক অধ্যাপক নুরুল হুদা সাকিবের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দৃষ্টিশক্তিহীন একজন ভর্তিচ্ছুর জন্য শ্রুতি লেখক হিসেবে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ১৩০ নম্বর কক্ষে (গ্যালারি) পরীক্ষা দিচ্ছিলেন রোহান। শ্রুতিলেখক হিসেবে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আসার নিয়ম থাকায় রোহানের শারীরিক গঠন ও মুখাবয়ব দেখে স্কুল শিক্ষার্থী হিসেবে তাকে সন্দেহ হয় অধ্যাপক নুরুল হুদা সাকিবের।
পরীক্ষা শেষে জিজ্ঞাসাবাদের প্রথমে নিজেকে স্কুল শিক্ষার্থী দাবি করলেও পরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী হিসেবে স্বীকার করেন। পাশাপাশি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করেন। তৎক্ষণাৎ বিষয়টি প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা শাখাকে অবহিত করার পর অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে বাকিদের নাম ও বের হয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে তারাও অসদুপায় অবলম্বনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, দায়িত্বরত শিক্ষক কর্তৃক অবগত হয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে সবার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও প্রমাণ মিলেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘আমরা যাদের বিরুদ্ধে শ্রুতিলেখক পরিবর্তন করে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অভিযোগ পেয়েছি, তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী শাস্তি দিয়েছি। যারা এ চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী এর সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে নিয়ম মোতাবেক পদক্ষেপ নেব।’
কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এ সংক্রান্ত তথ্য এখনো আমার কাছে না পৌঁছানো কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’ আর সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, ‘এ ধরণের ঘটনা এবার প্রথম। আমরা আজকে নতুন অভিজ্ঞতার স্বীকার হলাম। বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। কাজ চলমান থাকবে। সামনে অধিকতর সতর্ক থাকব।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।