জুমবাংলা ডেস্ক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় শিশু ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত এক আসামি উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন পেয়ে গলায় ফুলের মালা নিয়ে বর বেশে বাড়ি ফিরেছেন।
গাড়ি থেকে নামার পর তাকে ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করা হয়। মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার নিয়ে করা হয়েছে শোডাউন। বাদ যায়নি মিষ্টি বিতরণও।
আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের হীরাপুর মিয়াবাড়ির মুক্তো মিয়া (৬৫) মঙ্গলবার জামিনে মুক্ত হওয়ার পর তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে সোনা-রুপার পানি দিয়ে গোসল করিয়ে ঘরে তুলে নেন পরিবারের লোকজন।
এমন ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৮ বছরের শিশু ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের হীরাপুর মিয়াবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মতিউর রহমান ওরফে মুক্তো মিয়া নামে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে গত ১৮ জুলাই মামলা হয়। গত ৯ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত থেকে ওই বৃদ্ধ আগাম জামিন লাভ করেন।
জামিনে মুক্ত হওয়ার পর তার লোকজন ফুল দিয়ে বরণ করেন। এ সময় বৃদ্ধকে সোনা-রুপার পানিতে গোসল করিয়ে ঘরে তুলেন পরিবারের লোকজন।
শিশুটির পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের সীমান্তঘেঁষা হীরাপুর গ্রামে শিশুটি তার মামার বাড়ি থেকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে। গত ১৫ জুলাই সকালে প্রতিবেশী মিয়াবাড়ির সামনে বসে খেলা করছিল শিশুটি। এ সময় মিয়াবাড়ির বাসিন্দা ওই অভিযুক্ত মতিউর রহমান মুক্তো মিয়া তাকে একা পেয়ে মজা খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে ফুসলিয়ে পাশের পরিত্যক্ত একটি ঘরে নিয়ে যান। সেখানে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে শিশুটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে মুক্তো মিয়া পালিয়ে যান।
শিশুটির মা বলেন, এ ঘটনায় গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য চারপাশ থেকে চাপ আসছে। কিন্তু আমি সেটা করব না। আমার সন্তানের সঙ্গে যে ব্যক্তি এমন আচরণ করল, তার আইনগত বিচার করা ছাড়া শান্তি পাব না।
অবশ্য মুক্তো মিয়ার ছেলে অ্যাডভোকেট মিলন মিয়া সাংবাদিকদের জানান, মাদক ব্যবসায় বাধা এবং জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ ও বাড়ির সীমানাকে কেন্দ্র করে আমার গোষ্ঠীর একটি ষড়যন্ত্রকারী মহল দীর্ঘদিন ধরেই আমার বৃদ্ধ পিতাসহ আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে আসছে।
তিনি বলেন, আমার বাবাকে সমাজে হেয়প্রতিপন্ন করতেই সাজানো মামলা ঠুকে দিয়েছে।
অভিযুক্ত মতিউর রহমান বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। এই বৃদ্ধ বয়সে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। যারা আমার ও আমার পরিবারের সম্মান নষ্ট করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমি আইনের কাছে ন্যায়বিচার চাই।
এদিকে ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত আসামিকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা নিয়ে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন, মামলাটির নিষ্পত্তি হয়নি; জামিন হয়েছে।
এমন গুরুতর অভিযোগ যার বিরুদ্ধে তার লোকজনের এভাবে উল্লাস করা ঠিক হয়নি। এতে বিরূপ বার্তা যাবে সমাজে। উল্লাসের এসব ছবি ও ভিডিও মামলার আগামী তারিখে আদালতের নজরে আনা উচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।