আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন এবং তার সদ্য ঘোষিত রানিং মেট কামালা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একজন অযোগ্য নেতা হিসাবে উল্লেখ করে বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বিভক্ত করে রেখেছেন। খবর বিবিসি’র।
তারা দুজনই তাদের নির্বাচনী প্রচারণার প্রথম অনুষ্ঠানটি একসাথে করেছেন। এর আগে, মি. বাইডেন তার রানিং মেট হিসেবে মিস হ্যারিসকে প্রথম সামনে আনেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাদের বক্তব্যের জবাবে বলেছেন ,যে মিস হ্যারিস তার নিজের নির্বাচনী লড়াইয়ে “নুড়ি পাথরের মতো নীচে গড়িয়ে পড়বে”।
মি. বাইডেন নভেম্বরের নির্বাচনে রিপাবলিকান মি. ট্রাম্পের মুখোমুখি হবেন।
ডেলাওয়ারের উইলমিংটনে বুধবারের এই নির্বাচনী প্রচারণা অনুষ্ঠানটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল না, করোনাভাইরাস প্রতিরোধের প্রয়োজনীয়তা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান ৭৭ বছর বয়সী মি. বাইডেন।
উভয় প্রার্থী মুখে মাস্ক পরে মঞ্চে উপস্থিত হন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরা এক দল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের বলছে, দু’জন প্রার্থীকে এক ঝলক দেখতে প্রচারণা অনুষ্ঠান শুরুর আগে হালকা বৃষ্টিতে প্রায় ৭৫ জন লোক বাইরে জড়ো হয়েছিল, যদিও এই ভিড়ে থাকা কয়েকজন মি. বাইডেনের সমালোচক ছিলেন।
অ্যালেক্সিস আই ডুপন্ট হাই স্কুলের জিমনেসিয়াম থেকে বক্তব্য রাখার সময় মি. বাইডেন বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেটর, মিসেস হ্যারিস হলেন প্রথম কোন বর্ণের নারী, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান একটি দলের হয়ে প্রেসিডেন্টের রানিং মেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
মি. বাইডেন বলেছেন: “আমরা এই নভেম্বরে যাকে বেছে নেব, সেই নির্ধারণ করবে আমেরিকার অনেক দীর্ঘ সময়ের ভবিষ্যৎ।”
তিনি আরও বলেন: “ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিমধ্যে এসব বক্তব্যে জবাব দিতে শুরু করেছেন। কামালাকে জঘন্য বলে সম্বোধন করেছেন এবং কামালা তার নিয়োগকারীর দৃষ্টিতে কেমন, সেটা নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন। এটি অবাক হওয়ার কিছু নয় কারণ আমেরিকার ইতিহাসে যে কোনও প্রেসিডেন্টের চেয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প সবচেয়ে ভাল ঘ্যানঘ্যান করেন।”
একজন নারী অথবা কোন একটি বোর্ড জুড়ে থাকা শক্তিশালী নারীদের নিয়ে যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমস্যা আছে, এতে কি কেউ অবাক হয়েছেন?
তিনি মি. ট্রাম্পের করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলা, জলবায়ু পরিবর্তন, বেকারত্বের হার সামাল দেয়ার ব্যর্থতা এবং “তাঁর বর্ণবাদী বক্তব্য ও বিভাজনের রাজনীতি নিয়ে” আক্রমণ করেন।
মি. বাইডেনের পর মিস হ্যারিস মঞ্চে এসে বলেন: “আমি কাজ করতে প্রস্তুত আছি।”
৫৫ বছর বয়সী সাবেক এই আইনপ্রণেতা সাংবাদিকদের বলেন: “আমেরিকার সাথে কী হবে, সেটা নির্ধারণ হতে যাচ্ছে। আমাদের অর্থনীতি, আমাদের স্বাস্থ্য, আমাদের শিশুরা, আমরা যে ধরণের দেশে বাস করছি তার সবকিছুই এর সঙ্গে যুক্ত। ”
মিস হ্যারিস, যিনি কিনা ভারতীয় এবং জ্যামাইকান অভিবাসীর সন্তান- তিনি আরও বলেছিলেন: “আমেরিকা সুযোগ্য নেতৃত্বের জন্য হাহাকার করছে, অথচ আমাদের এমন একজন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় আছেন তিনি শুধু নিজের চিন্তায় আছেন। যারা তাকে নির্বাচিত করেছে তাদের দিকে খেয়াল নেই।।”
তিনি আরও বলেন: “তিনি [মি. ট্রাম্প] বারাক ওবামা এবং জো বাইডেনের কাছ থেকে ইতিহাসের দীর্ঘতম অর্থনৈতিক প্রসার উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন।
“এরপর তিনি, তাঁর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সমস্ত কিছু সরাসরি মাটিতে ছুঁড়ে নষ্ট করেছেন।”
মিস হ্যারিস বলেন: “এমনটাই হয়, আমরা যখন এমন একজন ব্যক্তিকে বেছে নিই যিনি এই কাজের জন্য উপযুক্ত নন- আমাদের দেশকে বিভক্ত করে রাখা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে আমাদের খ্যাতিও বিনষ্ট হয়েছে।”
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া: বুধবার হোয়াইট হাউসের একটি সংবাদ সম্মেলনে মি. ট্রাম্প বলেন, কামালা হ্যারিস যখন ডেমোক্রেটি পার্টির প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন লাভ করতে ব্যর্থ হন তখন মি. বাইডেনকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন।
“আমি দেখেছি তার জরিপের সংখ্যাগুলি বুম, বুম, বুম, করে নামতে নামতে প্রায় শূন্যে পৌঁছে যায়, এবং তিনি রাগে পাগল হয়ে যান”, বলেন মি. ট্রাম্প।
“তিনি (কামালা) বাইডেনের সম্পর্কে ভয়ংকর সব কথা বলেছেন। এমনকি একজন নারী যখন বাইডেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তখন তার কথাও মিস হ্যারিস বিশ্বাস করেছিলেন বলে আমার ধারণা”।
মি. বাইডেনের বিরুদ্ধে এর আগে কয়েকজন নারী অযাচিত ব্যবহার যেন স্পর্শ এবং চুম্বন করার অভিযোগ তুলেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।