জুমবাংলা ডেস্ক: সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। এডিস মশাবাহী এ রোগে আক্রান্ত দুই ছেলেকে নিয়ে ভয়াবহ সময় পার করছেন চিকিৎসক দম্পতি রোকসানা পারভিন ও সাঈদ তালুকদার। খবর ইউএনবি’র।
‘আমাদের জন্য এ এক কঠিন সময়,’ ইউএনবি প্রতিনিধিকে বলছিলেন শ্যামলী টিবি (যক্ষ্মা) হাসপাতালের চিকিৎসক রোকসানা।
রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় ঢাকা শিশু হাসপাতালে এ চিকিৎসক দম্পতির সাথে কথা হয় ইউএনবি প্রতিনিধির। এখানে গত রবিবার থেকে চিকিৎসাধীন রয়েছে তাদের ১১ বছরের ছেলে আয়ান ও তিন বছরের আলভিন।
মিরপুরের রূপনগর এলাকায় একটি ইংলিশ ভার্সন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া আয়ান এবার দ্বিতীয়বারের মতো ডেঙ্গুর কবলে পড়েছে। সে চার বছর আগে প্রথম এ রোগের শিকার হয়।
‘দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুর রোগী হওয়ায় আমরা আয়ানকে নিয়ে বেশি চিন্তিত,’ ধরা গলায় বলছিলেন রোকসানা।
হাসপাতালে ভর্তি দুই সন্তানকে দেখাশোনা করতে গিয়ে পল্লবী এলাকায় বসবাস করা সরকারি চাকরিজীবী এ দম্পতিকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। রোকসানার স্বামী সাঈদ তালুকদার রাজধানীর সেন্টার ফর মেডিক্যাল অ্যাডুকেশনে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত।
রোকসানা জানান, শনিবার ডেঙ্গু শনাক্তকরণে এনএস১ পরীক্ষার ফল পজেটিভ আসার পর রবিবার আয়ানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে ডেঙ্গু রোগীদের অতিরিক্ত চাপের কারণে শয্যা পেতে তাদের তিন থেকে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে।
আয়ানকে ভর্তির পর এ দম্পতি দেখতে পান যে তাদের ছোট ছেলে আলভিনেরও জ্বর হয়েছে। পরে তার এনএস১ অ্যান্টিজেন পরীক্ষাতেও ডেঙ্গু ধরা পড়ে। ওই দিনই আলভিনকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান রোকসানা।
তিনি বলেন, আয়ান হয়তো বাসায় বা স্কুলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের পাশের ফ্ল্যাটের দুই শিশুর কয়েকদিন আগে ডেঙ্গু হয়েছিল। আর তাদের পাশে একটি নির্মাণাধীন ভবনও রয়েছে। অর্থাৎ তাদের বাসায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি আছে।
হাসপাতালে ছেলেদের দেখাশোনা করতে দুই দিনের ছুটি নিয়েছিলেন রোকসানা ও তার স্বামী। তাদের ছুটি শেষে স্বামী সাঈদের বোন তার অফিস ব্র্যাক ব্যাংক থেকে এক দিনের ছুটি নিয়ে হাসপাতালে ছিলেন।
সাঈদ বলেন, তারা আয়ানকে নিয়ে চিন্তিত। কারণ দ্বিতীয়বার ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়া সবসময়ই বিপজ্জনক। প্রথমবারের ডেঙ্গুতে বাড়িতে চিকিৎসা নিয়েই আয়ান সুস্থ হয়ে গিয়েছিল বলে জানান তিনি।
‘দুই ছেলেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ায় আমরা শারীরিক ও মানসিক ধকলের মাঝ দিয়ে যাচ্ছি। চিকিৎসক হওয়ায় এ রোগের পরিণতি জানি বলে আতঙ্কিত ছিলাম,’ বলেন তিনি।
সাঈদ জানান, তাদের যৌথ পরিবারে দুই ভাই ও এক বোন রয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন- বাবা, ছোট ভাই ও তার স্ত্রীও চিকিৎসক।
ঢাকা শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১৮০-২০০ শিশুর এনএস১ অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে, তবে ডেঙ্গু ধরা পড়ছে ১০-১২ শিশুর।
‘ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে আসা বিপুল শিশু নিয়ে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ জন্য অনেক কিট প্রয়োজন,’ বলছিলেন হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবদুল হাকিম।
তিনি জানান, ডেঙ্গুর গুরুতর প্রাদুর্ভাবে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ায় হাসপাতালগুলোতে ভিড় করছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।