জুমবাংলা ডেস্ক: ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে থার্টিফার্স্ট নাইট বা ৩১ ডিসেম্বর রাতে উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান, সমাবেশ, নাচ, গান বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন না করার জন্য নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। একইসঙ্গে আতশবাজি বা পটকাও ফোটানো থেকেও সবাইকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছেন তিনি।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব অনুরোধ জানান।
এছাড়া থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন ঘিরে ডিএমপির ১১ দফা নির্দেশনা মেনে চলার জন্য নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।
প্রেস ব্রিংফিংয়ে নগরবাসীকে ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীতে ইউনিফর্মে ও সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে কোনো প্রকার দুর্ঘটনা না ঘটে। সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড স্ট্যান্ডবাই থাকবে। যে কোনো প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে তাদেরকে মোতায়েন করা হবে। রাজধানীর বিভিন্নস্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করা হবে, যেন কোনো সন্ত্রাসী, জঙ্গি কিংবা গোষ্ঠী নাশকতা করতে না পারে। এছাড়াও, উগ্র জঙ্গিগোষ্ঠী যেন কোনো ধরনের নাশকতা করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা বিশেষ সতর্ক রয়েছি।
তিনি বলেন, রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার বা উন্মুক্ত স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা উৎসব করা যাবে না। উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের ডিজে পার্টির আয়োজন করা যাবে না। তবে হোটেল ও ক্লাবের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ইনডোরে অনুষ্ঠান করা যাবে। কোথাও আতশবাজি, পটকা ফোটানো বা ফানুস উড়ানো যাবে না। ঢাকা শহর অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ, ইতোপূর্বে এই ফানুস নিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এজন্য নগরবাসীকে অনুরোধ করছি ফানুস না উড়ানোর জন্য। যদি কেউ উড়ায় তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ৩১ ডিসেম্বর হতে পহেলা জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের কোনো বার খোলা রাখা যাবে না। ৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৪টা হতে ১ জানুয়ারি সকাল ১০টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সকল প্রকার লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা যাবে না।
তিনি বলেন, গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার পরে বহিরাগত কোনো ব্যাক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। তবে আমতলী ক্রসিং ও কাকলী ক্রসিং দিয়ে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বসবাসকারী যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে। অন্যান্য সকল প্রবেশ পথ বন্ধ থাকবে। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বসবাসরত নাগরিকবৃন্দকে ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার মধ্যে স্ব-স্ব এলাকায় প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুরোধ করা হলো। একইভাবে উপর্যুক্ত সময়ে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যে সকল নাগরিক বসবাস করেন না তাদেরকে বর্ণিত এলাকায় গমনের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হলো।
ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পরে বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে সম্মানিত নাগরিকবৃন্দকে প্রয়োজন সাপেক্ষে কর্তব্যরত সদস্যবৃন্দকে পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক-কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর নির্ধারিত স্টিকার প্রদর্শন সাপেক্ষে নীলক্ষেত ও শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা হতে পরদিন ১ জানুয়ারি ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা/কর্মচারী ব্যতিত অন্য যেকোনো ব্যক্তি/যানবাহন কেবলমাত্র পুরনো হাইকোর্ট- দোয়েল চত্বর-শহীদ মিনার-জগন্নাথ হলের দক্ষিণ গেট-পলাশী মোড় দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। উক্ত এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে অন্যান্য সকল ক্রসিং বন্ধ থাকবে।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, তেজগাঁও, হাতিরঝিল, যাত্রাবাড়ী, গুলশান ও বনানী এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, লাইটিং ইউনিট ও হাতিরঝিল এলাকায় ডুবুরি মোতায়েন থাকবে। ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগের পুলিশ লাইন্সে মেডিকেল টিম মোতায়েন থাকবে। হাতিরঝিল এলাকায় কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কোনো বেপরোয়া গাড়ি চালানো, গাড়ি উৎসব এই ধরনের কোনো প্রতিযোগিতা করতে দেওয়া হবে না। উচ্চ শব্দে গাড়ির হর্ন বাজালে ও বেপারোয়া গতিতে গাড়ি চালালে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাতাল বা অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় যেন কোনো চালক গাড়ি চালাতে না পারে সে লক্ষ্যে ডোপ টেস্ট করা হবে। যেকোনো প্রয়োজনে নিকটস্থ থানা, কর্তব্যরত পুলিশ অথবা জাতীয় জরুরি সেবা বা ৯৯৯ এ ফোন করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কোনো প্রকার হুমকি নেই।’
এ সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম-বার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান বিপিএম-বার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম-বার, পিপিএম(বার); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বিপিএম-বার; যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণ উপস্থিত ছিলেন।
বাড়বে শীতের তীব্রতা: জানুয়ারিতে আরও ৩-৪টি শৈত্যপ্রবাহের আভাস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।