পুরো ভারত জুড়েই প্রতি বছর মহাসমারোহে উদযাপন করা হয় দীপাবলি উৎসব। প্রদীপ জ্বালানো, আলোকসজ্জার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের পটকা ফাটানো এই উৎবের অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্বাভাবিক কারণেই পটকা ফাটানোর ব্যাপারটি শিশু-কিশোরদের কাছে খুব জনপ্রিয়।

কিন্তু এবারের দীপাবলি উৎসব ঘিরে বেশ ট্রন্ডিংয়ে ছিল একটি খেলনা বন্দুক। দীপাবলিকে টার্গেট করে ব্যাপকভাবে বন্দুকটির মার্কেটিং হয়েছে অনলাইনে। বিকট আওয়াজের কারণে অল্প সময়েই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়ে যায় বন্দুকটি। কিন্তু, নতুন এই খেলনা বন্দুকের কারণেই উৎসবের আনন্দ এখন রূপ নিয়েছে মাতমে।
এই বন্দুক দিয়ে পটকা ফাটাতে গিয়ে ভারতের মধ্যপ্রদেশ ও বিহারে চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছে কমপক্ষে ৬৪ জন শিশু-কিশোর-কিশোরী। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
এবারের দীপাবলিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের শিশু-কিশোরদের কাছে আনন্দের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছিল স্থানীয়ভাবে নির্মিত একপ্রকার কার্বাইড বন্দুক। বন্দুকটি চালাতে প্রয়োজন হয় কেবল সামান্য ক্যালসিয়াম কার্বাইড আর পানি। অল্প খরচ আর আসল বিস্ফোরণের আওয়াজ; দুইয়ে মিলে শিশুদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়ে যায় বন্দুকটি।
তবে, এটি যে বেশ বিপজ্জনক একটি বস্তু, তার প্রমাণ হাতেনাতে পাওয়া গেলো দীপাবলির উৎসবে। গত ২০ অক্টোবর দীপাবলি উৎসব উদাপিত হয়েছে ভারতে। তারপর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত তিন দিনে ভারতের মধ্যপ্রদেশে চোখে গুরুতর আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে শতাধিক শিশু-কিশোর-কিশোরী। তাদের মধ্যে কমপক্ষে ১৪ জন আর কখনও তাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবে না।
বিহারে এই সংখ্যা আরও বেশি। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের তথ্য অনুসারে, শুধু রাজধানী পাটনাতেই স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে কমপক্ষে ৫০ জন শিশু-কিশোর-কিশোরী। বিহার ও মধ্যপ্রদেশের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সামনের দিনগুলোতে স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হারানো শিশু-কিশোরদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ভোপাল মেমোরিয়াল হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের (বিএসএইচআরসি) চক্ষুবিদ্যা বিভাগের প্রধান ডা. হেমলতা যাদব বলেন, এই কার্বাইড বন্দুক কোনও সাধারণ খেলনা নয়। এটা আসলে একপ্রকার রাসায়নিক বোমা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



