জুমবাংলা ডেস্ক : ফুটবল খেলতে গিয়ে গাইবান্ধার এক কিশোরির সঙ্গে সিলেটের আরেক কিশোরির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তারা একে অপরকে বিয়ে করতে চাইলে রাজ হয়নি দুই পরিবার। পরিবারের এমন সিদ্ধান্তে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছেন তারা।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুরো গাইবান্ধাজুড়ে ঘটনাটি আলোচনার শীর্ষে। অপরদিকে উৎসুক জনতা গাইবান্ধার ওই কিশোরির বাড়িতে ভিড় করতে থাকে। ফলে লোক লজ্জায় তার পরিবার এখন গাঢাকা দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী গাইবান্ধা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. কামাল হোসেন বুধবার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ওই দুই কিশোরির পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি জানান, গাইবান্ধার কিশোরিটির বাবা রিক্সাভ্যান চালক, মা গৃহিনী। দুই ভাই, এক বোন। ছোটবেলা থেকে ওই কিশোরি লেখাপড়ার ফাঁকে ফুটবল খেলে। খেলার জন্য সে বিভিন্ন জেলায় যায়। কয়েকমাস আগে সে ফুটবল খেলতে ঢাকায় যায়। সেখানে সিলেটের বাসিন্দা আরেক খেলোয়ার কিশোরির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। দুইজনের বয়স প্রায় কাছাকাছি। তখন থেকে তাদের কখনো মুঠোফোনে কখনো সরাসরি যোগাযোগ হয়। এভাবেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
তিনি আরও জানান, সিলেট থেকে কিশোরিটি একাই ২২-২৩ দিন আগে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ফুটবল খেলার জন্য আসে। সেখান থেকে সিলেটে ফিরে না গিয়ে সে প্রেমের টানে গাইবান্ধার কিশোরির বাড়িতে আসে। এখানে সে প্রায় ২০ দিনেরও বেশি অবস্থান করে। এদিকে তাকে খোঁজার জন্য সিলেট থেকে তার মা গাইবান্ধায় আসে। তিনি গাইবান্ধার কিশোরির বাড়িতে এসে কয়েকদিন থাকেন।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে মেয়েকে নিয়ে তাকে বুঝিয়ে সিলেটে যাবার জন্য প্রস্তুতি নেন। কিন্তু এ খবর শুনে গাইবান্ধার কিশোরি তাকে যেতে বাধা দেন। এতে কাজ না হলে ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের সামনেই ঘরের ভিতর গাইবান্ধার কিশোরিটি গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এ সময় সিলেটের কিশোরিটি বাম হাত ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলেন। পরে দুইজনকেই অসুস্থ অবস্থায় গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থা বেগতিক দেখে গাইবান্ধার কিশোরির মা কাউন্সিলর কামাল হোসেনকে ফোন করেন। কাউন্সিলর কামাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে হাসপাতালে যান।
কাউন্সিলর মো. কামাল হোসেন আরও জানান, হাসপাতালে দুইজনকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরদিন শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মেয়েকে সিলেটে নিয়ে যেতে চান তার মা। কিন্তু সিলেটের কিশোরি কোনভাবেই যেতে রাজি হয়নি। তার জেদ, হয় বিয়ে করেই ফিরবে, না হলে মরে যাবে। পরে ওই কিশোরিকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে বাসে রওনা দেন তার মা। বাসটি গোবিন্দগঞ্জে পৌছলে কিশোরিটির জ্ঞান ফিরে। তখন সে বাসের জানালা ভেঙ্গে লাফিয়ে নেমে পড়েন। এতে তার হাত কেটে যায়। পরে তাকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে ওইদিন রাতেই সে গাইবান্ধায় ফিরে আসে। পরবর্তীতে গত সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) মা-মেয়ে সিলেটে ফিরে যায়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বুধবার গাইবান্ধা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুর রউফ বলেন, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দেখেছেন। এনিয়ে সর্বত্র আলোচনাও হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে দুই কিশোরির পরিবারের কেউই থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি।
একই বিষয়ে গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র মো. মতলুবর রহমান বলেন, ঘটনাটি তিনি লোকমুখে শুনেছেন। এদিকে বুধবার সকালে গাইবান্ধার কিশোরির বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের কাউকে পাওয়া য়ায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কিশোরির রিকশাভ্যান চালক বাবার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।