বক চয়, পাক বা পোক চয় অথবা চীনা পাতাকপি নামেই বেশি পরিচিত। আমাদের দেশে এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ক্যান্সাররোধী গুণাগুণসম্পন্ন এই মজাদার সবজি। ইউরোপের সবজির বাজারগুলোতে নানা পদের সবজির মধ্যে উজ্জ্বল সবুজ বর্ণের পাতা আর মাংসল সাদা রঙের কাণ্ডের সুন্দর এ সবজি চোখে পড়বেই। আর এটাই বক চয় বা পক চয়। এই সবজি চীনা পাতাকপি নামেই সুপরিচিত।
চীনারা সেই পঞ্চম শতক থেকে পুষ্টিকর এ সবজিটির সঙ্গে পরিচিত। জাপান ও কোরিয়ার মানুষেরাও এই সবজির সমাদর করত সেই প্রাচীনকাল থেকেই। সুদূর চীন থেকে তারপর ইউরোপ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছিল সেই ঊনবিংশ শতকের শেষের দিকে। আমাদের দেশেও এখন এই সবজি পাওয়া যাচ্ছে।
খুব সহজে চাষ করা যায় বলেই বর্তমানে পৃথিবীর বহু দেশে এর চাষ করা হয়। রৌদ্রোজ্জ্বল স্থান পছন্দ হলেও সরাসরি সূর্যালোক সইতে পারে না। অতিরিক্ত স্যাঁতসেঁতে জমিতে এর নরম শিকড়ে পচন ধরে। ইউরোপে জুলাই মাসের শেষের দিকে চাষ করে, সেপ্টেম্বর থেকেই বাজারে আসতে শুরু করে।
অনেকটা আমাদের দেশের পালং শাকের মতন, তবে স্বাদে ভিন্নতা আছে। খুবই সামান্য ঝাল আছে। যাঁরা ঝাল খেতে মোটেও অভ্যস্ত নন, তাঁরা এমন ঝালের মৃদু আঁচ অনুভব করতে পারবেন। ফরাসিরা কাঁচা এবং রান্না, দুভাবেই খেয়ে থাকে। সবুজ পাতা আঙুরের বিচির তেল, খানিকটা আখরোট এবং পনির মিশিয়ে স্যালাডে খেয়ে থাকে। এমনিতে অল্প জলপাই তেল বা মাখন দিয়ে, খানিকটা রসুন কুচি এবং কচি আদার রসে হালকা আঁচে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভেজে খেতেই ফরাসিদের বেশি পছন্দ। আবার অনেকেই এই খাবারের সঙ্গে একটুকরা সুস্বাদু ক্যামোমবার্ত পনির জুড়ে দিয়ে আলাদা রসনা ব্যঞ্জনার সৃষ্টি করে।
আমাদের দেশে বক চয় সবজিটি সম্পর্কে অনেকেই আগ্রহী নন। কারণ, এর চাষপদ্ধতি এবং পুষ্টিগুণ নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি। অথচ চীন, জাপান এবং কোরিয়ায় বক চয় বেশ জনপ্রিয়। কারণ, এর স্বাদের সঙ্গে পুষ্টিগুণ।
প্রচুর শক্তিশালী অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট বিটা ক্যারোটিন আছে এ সবজিতে। আর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট মানেই শরীরে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে, অনেক রোগ এড়ানো যায়। প্রদাহ হ্রাস করে।
বিশেষ করে ক্যারোটিন ও ক্লোরোফিল ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। ত্বকের যত্নে এবং রূপলাবণ্য ধরে রাখতে বিটা-ক্যারোটিন খুব ভালো কাজ করে। প্রচুর আঁশ অর্থাৎ ফাইবার রয়েছে। বিভিন্ন খনিজের সঙ্গে ভিটামিন সি, বি-৬, ই এবং সেই সঙ্গে পটাশিয়ামের চমৎকার উৎস বলে যাঁরা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন, পুষ্টিবিদ এবং চিকিৎসকরা তাঁদের বক চয় খেতে পরামর্শ দেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।