দৈনিক চাহিদার দ্বিগুণ ভিটামিন-সি পেতে ক্যাপসিকামের গুরুত্ব

ক্যাপসিকাম

ক্যাপসিকাম, সুইট পেপার, বেল পেপার, কাশ্মীরি মরিচ—বিভিন্ন নামে পরিচিত এই মরিচজাতীয় অত্যন্ত পুষ্টিকর সবজিটির এক কাপেই মিলবে দৈনন্দিন চাহিদার দ্বিগুণ ভিটামিন সি। লাল, হলুদ বা কমলা রঙের ক্যাপসিকাম বাজারে মিললেও সবুজ ক্যাপসিকামই আমাদের দেশে বেশি সহজলভ্য। কচকচে, দারুণ ফ্লেভারের এই সবজির ব্যবহার অত্যন্ত সর্বজনীন। পাস্তা সালাদসহ বিভিন্ন রকমের সালাদে তো বটেই, পিজ্জা, পাস্তা বা স্টারফ্রাইয়ের মতো বিভিন্ন ওরিয়েন্টাল পদে ক্যাপসিকাম অনন্য স্বাদ এনে দেয়। স্যান্ডউইচ বা রোলের পুরে ক্যাপসিকাম দেওয়া যায়। আবার বানানো যায় পুর ভরা ক্যাপসিকামের দোলমা।

ক্যাপসিকাম

যেকোনো মাংসের পদে শেষে কাঁচা মরিচের মতো ক্যাপসিকাম যোগ করলে তরতাজা ফ্লেভারের সঙ্গে পাওয়া যাবে বাড়তি পুষ্টি। তবে যেভাবেই খাওয়া হোক, ক্যাপসিকাম কোনোভাবেই বেশিক্ষণ রান্না করা যাবে না। এতে স্বাদ যেমন ভালো থাকে তেমনি ভিটামিন ‘সি’সহ পুষ্টি উপাদানগুলোও থাকে অক্ষুণ্ণ।

অত্যন্ত কম ক্যালরিবিশিষ্ট ক্যাপসিকাম ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে দারুণ কার্যকর। এক কাপ ক্যাপসিকাম মানে মাত্র ৩০ ক্যালরি। তবে সেই সঙ্গে  বিভিন্ন পুষ্টিগুণে একেবারে ঠাসা এই মরিচ জাতীয় উপাদেয় সবজিটি। ভিটামিন ও মিনারেলের মধ্যে ক্যাপসিকামে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ ও সি। এক কাপ ক্যাপসিকাম খেলে দিনের প্রয়োজনের ২৬ শতাংশ ভিটামিন এ পাওয়া যায়। আর এতে ভিটামিন সি মেলে দৈনিক চাহিদার ২১২ শতাংশ।

ভিটামিন ই, ভিটামিন বি-সিক্স ও ভিটামিন কের সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণ ফোলেট, পটাসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ পাওয়া যায় ক্যাপসিকামে। এক কাপ ক্যাপসিকামে তিন গ্রামই ফাইবার। এই খাদ্য আঁশ বা ফাইবার বেশি থাকায় হজমে সহায়ক এটি। বিভিন্ন রকমের অ্যান্টি অক্সিডেন্টের খনি বলা যায় ক্যাপসিকামকে। লাইকোপিন, বিটা ক্যারোটিন, লুটেইনার আর জিয়াজ্যানথিনের মতো পরীক্ষিত ক্যারোটিনয়েড থাকায় নিয়মিত ক্যাপসিকাম খেলে ক্যানসার প্রতিরোধ থেকে শুরু করে হৃদ্‌যন্ত্র চোখ আর ইমিউন সিস্টেম ভালো থাকার মতো উপকার মিলবে বলে স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা বলেন।

এখন বাজারে ক্যাপসিকাম পাওয়া যাচ্ছে প্রচুর। দামও বছরের অন্য সময়ের চেয়ে কম। বেশি করে কিনে সংরক্ষণ করার এখনই সময়। তবে এ ক্ষেত্রে পুষ্ট, নিখুঁত আর দাগবিহীন তরতাজা ক্যাপসিকাম নির্বাচন করতে হবে। ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে এগুলো প্রথমেই। এবার ছুরির আগার সাহায্যে ভেতরের বীজ বের করে জিপলক ব্যাগে ভরে ডিপফ্রিজে রেখে নিশ্চিন্তে খাওয়া যাবে অন্তত ছয় মাস পর্যন্ত।

বিচি ফেলে কুচি করেও রাখা যায়। আবার পরিষ্কার, শুকনা ও আস্ত ক্যাপসিকাপ ফুটন্ত পানিতে এক মিনিট সেদ্ধ করা বা ব্লাঞ্চ করে বরফ পানিতে দিয়ে ঝরিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। তবে ডিপফ্রিজে সঠিক কায়দায় সংরক্ষিত ক্যাপসিকামে পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকলেও টেকশচার বদলে যায় কিছুটা।