খায়রুল আহসান মানিক, ইউএনবি: কুমিল্লার কালাডুমুর নদী। এই নদীর পানি দিয়ে ধান চাষ করছে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলার চার উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের কৃষকরা। কিন্তু নদীর পেটে পলি ও কচুরিপানা থাকায় কমে গেছে পানি ধারণ ক্ষমতা। যার প্রভাব পড়েছে নদীকে ঘিরে ৫০ হাজার বিঘা জমির চাষাবাদ।
নদীর প্রাণ ফেরানোর পাশাপাশি পর্যাপ্ত সেচ সুবিধা নিশ্চিতে নদীর গৌরিপুর থেকে ইলিয়টগঞ্জ সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার এলাকা খনন করা হলে প্রায় হাজার হাজার কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদীটির উৎসমুখ গোমতী নদীর গৌরিপুর এলাকা। এটিকে গোমতীর শাখা নদীও বলা হয়। দীর্ঘদিন খনন না হওয়ায় নদীটি মরার উপক্রম হয়েছে।
নদীর দুই পাড়ে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর, ঝিংলাতলী, ইলিয়টগঞ্জ উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নের রায়পুর, বানিয়াপাড়া, চান্দ্রা, আদমপুর, বিটমান, টামটা, সিংগুলা, বিটতলা ও নয়াকান্দি, মুরাদনগর উপজেলার বাবুটিপাড়া ইউনিয়ন, চান্দিনা উপজেলার সুহিলপুর ও বাতাঘাসী ইউনিয়ন, চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সাচার এলাকাসহ বিভিন্ন গ্রামের ১০ হাজারের অধিক চাষী এ নদীর পানির উপর নির্ভরশীল। বোরো মৌসুমে নদী থেকে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া গেলে উৎপন্ন হবে ১২ লক্ষাধিক মণ ধান।
সিংগুলা গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দিন জানান, কৃষি কাজে সেচ, গোসলসহ গৃহস্থালি কাজের জন্য পানির চরম সংকটে পড়েছেন নদী পাড়ে বসবাসকারীরা।
এছাড়া, পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নদীতে মাছ ধরারও সুযোগ নেই জেলেদের। ফলে জরুরি ভিত্তিতে এই নদী খনন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মতিন সৈকত জানান, ‘এই নদী দিয়ে এক সময় পাল তোলা নৌকা চলতো। দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যেতো নদীতে। দীর্ঘদিন নদীটি খনন না হওয়ায় পলি জমে পানি নেই বললেই চলে। নদীর পেট পলি আর কচুরিপানা দখল করে নিয়েছে। কবে নদীটি খনন হয়েছে তা কারো মনে নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘নদীটি খননের জন্য আমরা স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি। নদীটি খনন হলে এ এলাকায় প্রতি বোরো মৌসুমে ঘরে ঘরে ধান তোলার উৎসব লাগতো।’
দাউদকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.সারোয়ার জামান বলেন, ‘স্থানীয়রা কালাডুমুর নদীর পাড়ের জমিগুলোকে ফসলের গোলা (উৎপাদন অঞ্চল) বলেন। বোরো ফসল উৎপাদনে নদীটি খনন করা জরুরি। সেচ মৌসুমে পানি পাওয়া গেলে এখানের ফসল উৎপান দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল লতিফ বলেন, ‘এবার নদীটি খননের পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করছি, এতে কৃষকদের সেচের সমস্যা কেটে যাবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।