জুমবাংলা ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিল্পনগরী নরসিংদী যাচ্ছেন। রবিবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে মোসলেহ উদ্দিন স্টেডিয়ামে জনসভায় যোগ দেবেন তিনি। এ ছাড়া প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার ১১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো নরসিংদী। অনুষ্ঠানস্থল ও আশপাশের এলাকায় এসএসএফ, র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ১০ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নরসিংদী মোসলেহ উদ্দিন স্টেডিয়াম ও আশপাশের এলাকা এবং পলাশের ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা এলাকায় নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১১টায় পলাশ এশিয়ার বৃহত্তম গ্রিন ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন শেষে এক সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। দুপুর আড়াইটায় তিনি নরসিংদী সার্কিট হাউসে মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেবেন। এরপর নরসিংদী মোসলেহ উদ্দিন স্টেডিয়াম থেকে অনলাইনে ৪৭ কোটি ১৪ লাখ ৬৯ হাজার ১২৬ টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাকি ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
প্রকল্পগুলো হলো নরসিংদী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজ, বাঁশগাড়ী নিউ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজ, পলাশ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়কে চতুর্থ তলায় উন্নীতকরণের কাজ, সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের ষষ্ঠতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজ, কাজী মফিজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজ, গোয়ালদী ছাকিয়াতুন্নেছা দাখিল মাদ্রাসার চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজ, বাঘার দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজ, বেলাব টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজ, পলাশ উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত ভবন ও উপজেলা পরিষদ হলরুম নির্মাণকাজ এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর (ক্ষুদ্র সেচ) কার্যালয় (চারতলা ভবন)। স্টেডিয়ামে জনসভায় তিনি ভাষণ দেবেন।
জেলা আওয়ামী লীগ জানিয়েছে, ১৯ বছর পর এ এলাকায় প্রধানমন্ত্রী আসছেন। জনসভায় বিপুলসংখ্যক লোকের সমাগম হবে বলে আশা করছি। সভাস্থলের প্রবেশ পথগুলোতে সন্দেহভাজন যানবাহন ও ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে পুরো জেলায়। পোস্টার, ব্যানার-ফেস্টুন, বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে পুরো জেলা। ধুয়ে মুছে চকচকে করা হয়েছে রাস্তাঘাট ও রোড ডিভাইডার। প্রতিদিনই কেন্দ্রীয় নেতারা আসছেন এখানে। তারা মাঠ পরিদর্শনসহ বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। জেলাজুড়ে চলছে মাইকিং। সমাবেশস্থলে নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে সভামঞ্চ। পাশেই মিডিয়া, মুক্তিযোদ্ধা ও অতিথি কর্নার। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে করা হয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেন জানান, জেলাবাসী জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বরণ করতে প্রস্তুত। মতভেদ ও মান-অভিমান ভুলে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নরসিংদীর সর্বস্তরের মানুষ প্রধানমন্ত্রীর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। প্রধানমন্ত্রী এখানে ১১টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। পাশাপাশি নরসিংদীবাসীর পক্ষ থেকে একটি পাবলিক লাইব্রেরি, মেডিকেল কলেজ ও কয়েকটি হিমাগার নির্মাণের দাবি করা হবে।
নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরসিংদীর যেসব স্থানে যাবেন, সেসব স্থানে এরই মধ্যে এসএসএফের অগ্রগতি দল রেকি করেছে। এসএসএফের দুটি দল সার্বক্ষণিক পলাশে ও নরসিংদীতে অবস্থান করছে। মঞ্চ ও হেলিপ্যাড তৈরি, রাস্তাঘাটের সংস্কারকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন এ প্রোগ্রামটির সমন্বয় করছে। নরসিংদী ব্র্যান্ডিং প্রডাক্ট জিআই পণ্য যেমন কলা, লটকন, তাঁতের শাড়ি, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, শহীদ আসাদসহ উল্লেখযোগ্য ইতিহাস তুলে ধরতে জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্র্যান্ডিং কার্যক্রমও সম্পন্ন হয়েছে।
নিরাপত্তা প্রস্তুতি সম্পর্কে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম বলেন, জনসভাস্থল, পুরো শহর এবং সার্কিট হাউস—পুরোটাই আমরা সিসিটিভির কাভারেজে এনেছি। পর্যাপ্তসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য শহরজুড়ে থাকবে। তাদের সঙ্গে থাকবে স্বেচ্ছাসেবকরাও।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলী বলেন, জনসভা সফল করতে দলের প্রত্যেক নেতাকর্মীর সহযোগিতা পাচ্ছি। পাশের তিনটি জেলা থেকেও নেতাকর্মীরা আসবেন। আশা করছি, এ জনসভায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।