জুমবাংলা ডেস্ক : মুন্সীগঞ্জে পদ্মা নদীতে এক সপ্তাহ ধরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। দামও কমেছে। তবে মাছ বেশি ধরা পড়ায় দাম কমার প্রভাব পড়ছে না জেলেদের ওপর। সরবরাহ বেশি থাকায় জেলার লৌহজংয়ের মাওয়া মৎস্য আড়তে বেড়েছে ভিড়। বিভিন্ন আকারের ইলিশ কিনতে প্রতিদিন সকাল থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার পাইকার ও সাধারণ ক্রেতারা আসছেন এখানে।
জেলা মৎস্য কার্যালয় জানায়, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং, শ্রীনগরের ভাগ্যকুল এবং সদর উপজেলা মিলিয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটারজুড়ে রয়েছে পদ্মা নদী। এ ছাড়া সদর ও গজারিয়া উপজেলার ৩৫ কিলোমিটার পড়েছে মেঘনা নদীতে। এসব নদীতে সাড়ে তিন হাজারের বেশি জেলে ইলিশ আহরণ করেন।
স্থানীয় মিজানুর রহমান ঝিলু জানান, বর্তমানে মুন্সীগঞ্জের পদ্মা নদীতে ইলিশ ধরতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন জেলেরা। প্রতিদিন তাদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। মাওয়া মৎস্য আড়তে ছোট, বড় ও মাঝারি আকৃতির এসব ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে তাই মুখর এই এলাকা।
মাওয়া মৎস্য আড়ত ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম জানান, এই মৎস্য আড়তে রয়েছে ৩২ জন আড়তদার। এসব আড়তে লৌহজং, শরীয়তপুর, মাদারীপুরের শিবচর, নড়াইলের মহাজন, পাবনা, চাঁদপুর ও সিরাজগঞ্জের অন্তত ১০ হাজার জেলে মাছ বিক্রি করতে আসেন।
তিনি আরও জানান, সপ্তাহখানেক আগে এক থেকে দেড় কেজির ইলিশ এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছিল। সেই ইলিশ এখন এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকৃতির ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশের দাম ছিল এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ টাকা। এখন ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ ভালো থাকায় কেজিতে দাম কমেছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। এতে ক্রেতার উপস্থিতিও বেড়েছে।
খুচরা মাছ বিক্রেতা রুবেল মিয়া জানান, মাওয়া আড়তে এখন সব পদ্মার ইলিশ। জেলেরা দিনরাত মাছ ধরে ভোরে আড়তে বিক্রি করতে আসেন। পাইকারির পাশাপাশি এখানে খুচরায়ও ইলিশ বিক্রি চলছে।
জেলে আক্তার হোসেন বলেন, নদীতে এখন ছোট-বড় সব আকারের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। দাম আগের চেয়ে কিছু কমেছে। তবে মাছ বেশি পাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে না।
রাজধানীর মধ্য বাসাবো এলাকার বাসিন্দা রাসেল মিয়া বলেন, টাটকা ইলিশ কেনার জন্য সোমবার ভোরে আড়তে এসে মাছ কিনেছি। ছয় দিন আগে যে মাছ পাঁচ হাজার টাকায় কিনেছি, সোমবার সেই আকৃতির মাছ চার হাজার টাকায় কিনেছি। দাম কম থাকায় আগের চেয়ে বাজারে ভিড় বেড়েছে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শামসুল করিম বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর পদ্মায় ইলিশ বেড়েছে।
অভয়াশ্রমের জন্য ১ মার্চ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও বরিশাল জেলার নদীতে মাছ ধরা ও জাল ফেলায় নিষেধাজ্ঞা চলছে। ফলে ইলিশ সাগর থেকে কোনো বাধা ছাড়াই পদ্মা নদীতে চলে আসতে পারছে। এ কারণে পদ্মার মুন্সীগঞ্জ অংশে আগের চেয়ে ইলিশ বেশি ধরা পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, জাটকা ধরা বন্ধ হলে মাছ আরও বাড়বে। তাই জেলেদের নিজ স্বার্থেই ২৫ সেন্টিমিটারের নিচে সব ধরনের জাটকা ধরা বন্ধ করতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।