জুমবাংলা ডেস্ক : পরীক্ষার একদিন আগে এসএসসি নির্বাচনি পরীক্ষার গণিত প্রশ্ন ছাত্রীকে পাঠিয়ে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সুহেল মিয়া নামে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রোববার দুপুর ১২টায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে।
ওই শিক্ষক নেত্রকোনার মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের চৌধুরী তালে হোসেন মিছিলজান একাডেমির প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত আছেন।
স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনার মদন উপজেলার চৌধুরী তালে হোসেন মিছিলজান একাডেমিতে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নির্বাচনি পরীক্ষা চলমান রয়েছে। রোববার দুপুর ২টায় বিদ্যালয়ে গণিত সৃজনশীল পরীক্ষা হওয়ার কথা। সেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র শুক্রবার রাতে এক ছাত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুহেল মিয়া।
পরে ওই ছাত্রীকে নিজের ইমো নম্বর দিয়ে প্রেম নিবেদনসহ আপত্তিকর প্রস্তাব দেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণে ওই ছাত্রী তার পরিবারের লোকজনকে জানালে বিষয়টি সবার নজরে আসে। এ ঘটনায় বোরবার দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে।
ঘটনাটি এলাকার লোকমুখে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই প্রশ্নপত্রটি রোববার সংগ্রহ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) পোস্ট করেন। এতে বিষয়টি ভাইরাল হলে অনেকেই প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানান।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বড় ভাই বলেন, শুক্রবার রাতে সুহেল স্যার আমার বোনকে ফোন দিয়ে ইমোতে ফোন দিতে বলেন। কথা বলার পর ইমো নম্বরে গণিত পরীক্ষার প্রশ্ন পাঠান। পরীক্ষার প্রশ্নের বিনিময়ে আমার বোনের সঙ্গে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। রোববার বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের রুমে আলাদা সময় না দিলে পরীক্ষার খাতায় নম্বর দেবে না বলে জানান। এতে ভয় পেয়ে আমার বোন বিষয়টি আমাদের খুলে বলে। একজন শিক্ষক এমন আচরণ করবে তা আমরা কখনই ভাবিনি। আমরা এই শিক্ষকের বিচার চাই।
জয়-বাংলা গ্রামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জামাল পাশা জানান, এর আগেও তিনি একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন। ফলে অনেক ছাত্রী এই বিদ্যালয় ছেড়ে অন্য বিদ্যালয়ে গিয়ে ভর্তি হয়েছে। এই শিক্ষকের বিচার দাবি করেন তারা।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সুহেল মিয়া বলেন, কে বা কারা আমার ইমো নম্বর থেকে প্রশ্নপত্রটা ছাত্রীর কাছে পাঠিয়েছে তা আমি জানি না।
প্রেম নিবেদন ও অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি সমাধান করার জন্য এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলছি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জিএম শামসুল আলম চৌধুরী কায়কোবাদ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে নিউজ করার দরকার নেই।
মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও মদন শহীদ স্মরণিকা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্কাস উদ্দিন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা একাডেমি সুপারভাইজার জ্যোৎস্না বেগম বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে থাকলে পরীক্ষাটি বাতিল করা হবে। ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিনা শাহরীন জানান, ভুক্তভোগী ছাত্রী বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।