জুমবাংলা ডেস্ক : প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে ভারতের ছেড়ে দেওয়া পানির কারণে বাংলাদেশের সকল নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এবারও বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলায় বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছে দিনমজুর, পাশাপাশি যারা বাড়িতে গরু লালন-পালন করেন তারা।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার রোহদহ গ্রামে বসবাস করেন হানিফ মণ্ডল। প্রতিবছর কোরবানির ঈদের হাটে নিজের পালিত গরু বিক্রি করে আয় করেন কিছু অর্থ। এবারের বন্যায় হানিফের ঘরের চালা পর্যন্ত পানি। অতি যত্নে পালন করা গরু রাখার জায়গা নেই। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে দুটি গরু প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
হানিফ জানান, বন্যার কারণে একে তো রাখার জায়গা নেই, তার ওপর খাবার দিতে না পারায় গরুগুলো শুকিয়ে যাচ্ছিল। এ কারণে বাধ্য হয়েই সেগুলো বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। সাইজ অনুসারে এক লাখ টাকার গরুর দাম কমিয়ে ৮০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন। এর পরও ক্রেতা নেই। শেষে দালাল ধরে দুই দিন আগে ৬৮ হাজার টাকা দরে দুটি গরু এক লাখ ৩৬ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। বললেন, ‘আর কয়েকটা দিন পর কোরবানির পশুর হাটে তুলতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যেত।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্যার পানিতে বসতবাড়ি ডুবে যাওয়ায় পশু রাখার জায়গা না থাকা এবং পশুখাদ্যের অভাব দেখা দেওয়ায় হানিফের মতোই শত শত গৃহস্থ পরিবার তাদের গবাদি পশু নিয়ে সংকটে পড়েছে। এ অবস্থায় বন্যাকবলিত বগুড়ার সারিয়াকান্দি, ধুনট ও সোনাতলা উপজেলার খামারি ও কৃষকরা কোরবানির হাটের জন্য লালন-পালন করা গরু আগেভাগেই বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
সোনাতলা উপজেলার খামারি আনোয়ার হোসেন রাঙ্গা জানান, তাঁর খামারে বেশ কিছু গরু লালন-পালন করা হয়েছে। এগুলোর খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে দেশীয় ঘাস, খড়, খইল, খুদ-কুঁড়া। গরুগুলো ক্রেতাদেরও পছন্দ করার মতোই। কিন্তু কোরবানির হাট পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করতে পারছেন না। কারণ বন্যার পানিতে গরুর শেড ডুবে গেছে। চেষ্টা করছেন গরুগুলো এখনই বিক্রি করে দেওয়ার। অথচ আর কয়েকটা দিন পর বিক্রি করলে ভালো দাম পেতেন।
সারিয়াকান্দির নারচী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন বান্টু তরফদার জানান, চরগোদাগাড়ী গ্রামে ছোট-বড় অন্তত ৩০টি বড় খামার ছিল। সেগুলো এখন বানের পানির নিচে।
ওই গ্রামের মজিদ সরকার নামের এক খামারি আক্ষেপ করে বললেন, ‘এখন নিজেদের পেটেই খাবার নেই, গরুরে খাওয়াব কী। গোচারণভূমিগুলোতেও অথই পানি। এ কারণে বাধ্য হয়ে গরু বিক্রি করে দিচ্ছি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।