কাস্পিয়ান সাগরকে আপনি হ্রদ বা সাগর উভয় বলতে পারেন। সাগর বলতে পারেন এ কারণে যে এর পানি লবণাক্ত তবে সাগরের মত এতটা লবণাক্ত নয়। আপনি এটিকে হ্রদ বলতে পারেন কারণ এর সাথে সাগর বা মহাসাগরের কোন সংযোগ নেই। এর পূর্বে রয়েছে ককেশাস পর্বতমালা এবং পশ্চিমে রয়েছে তৃণভূমি। এটির মোট আয়তন ৩ লাখ ৭১ হাজার বর্গ কিলোমিটার।

কাজাকিস্তান, রাশিয়া, আজারবাইজান, ইরান এবং তুর্কমেনিস্তান রাষ্ট্রের অধিকার রয়েছে কাস্পিয়ান সাগরের উপরে। আনুমানিক ৫৫ লাখ বছর আগে জলশয়টি পুরোপুরি আলাদা হয়ে যায়। বর্তমানে কাস্পিয়ান সাগরের লবণাক্ততা শতকরা ১.২ ভাগ।
ভলগা নদী এ জলাশয়ের মূল পানি সরবরাহকারী। দক্ষিণ কাস্পিয়ান গড় গভীরতা ৩৩০০ ফুট যা সবথেকে বেশি। ফলে দক্ষিণে রয়েছে শতকরা ৬৬ ভাগ জল। কাস্পিয়ান সাগরের সব কয়টা দ্বীপ উপকূলের কাছাকাছি অবস্থিত।
একাধিক প্রজাতির পাখি সাময়িক সময়ের জন্য এটিকে বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। রাশিয়া, আজারবাইজান রাজধান বাকু কাস্পিয়ান থেকে বেশি দূরে অবস্থিত নয়। অনন্য প্রজাতির কাস্পিয়ান সিল শুধুমাত্র এখানেই পাওয়া যায়।
একটা সময় এখানে ১০ লাখ সিল পাওয়া যেত। মানুষের শিকারের ফলে সংখ্যাটি এখন ১ লাখে নেমে দাঁড়িয়েছে। কিছু অন্যান্য প্রজাতির তিমি মাছ কাস্পিয়ান সাগরে পাওয়া যেত। তবে বর্তমানে তা পৃথিবী থেকে একেবারে বিলীন হয়ে গেছে।

আপনি জেনে অবাক হবেন যে এখানে বিশেষ প্রজাতির বাঘ, চিতা এবং সিংহ পাওয়া যেত। যেমন কাস্পিয়ান বাঘ, এশিয়াটিক সিংহ ইত্যাদি। এদের মধ্যে পার্সিয়ান চিতা বাঘ দেখতে বেশ অদ্ভুত। এখানে স্টারজেন প্রজাতির বিশেষ মাছ রয়েছে যা কাস্পিয়ান ব্যতীত অন্য জায়গায় পাওয়া যায় না।
কাস্পিয়ান সাগরের ইরানের অংশে দেড়শ বিলিয়ন ব্যারেল তেলের মজুদ রয়েছে। এখান থেকে প্রায় নিয়মিত অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আরাহন করছে ইরান। রাশিয়ার অংশে জ্বালানি তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ রয়েছে।
কাস্পিয়ানের আশেপাশে শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার ফলে তার আবর্জনা এখানে গিয়ে পড়ছে। ফলে সাগরের জীববৈচিত্রের ক্ষতি হচ্ছে। সাগরের তীরবর্তী পাঁচটি দেশ নিজেদেরকে নিয়ে সংগঠন তৈরি করেছে এবং দুই বছর পরপর কাস্পিয়ান সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel