সিলেট প্রতিনিধি: পুরো সিলেট নগরী এখন পানির নিচে। যেটুকু এলাকা অবশিষ্ট ছিল সেটুকুও আজ বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে করে আশ্রয় নেওয়ার আর কোনও জায়গা থাকলো না।
আজ সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। এতে অনেক উঁচু এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে নতুন করে নগরীর অন্তত ২৫টি এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, আজ সকালে দেড় ঘন্টার ব্যবধানে নগরীর ভাতালিয়া, লামাবাজার, পাঠানটুলা, পায়রা মহল্লা, ফাজিলচিশত, মীরাবাজার, হাজীপাড়া, আখালিয়া, সুরমা, ভ্যালিসিটি, বাদামবাগিচা, সেনপাড়া, বালুচর, চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার, বাগবাড়ি, বারুতখানা ও জল্লারপাড়সহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মানুষের বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ার পাশাপাশি রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। অসংখ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও পানি ঢুকেছে।
এদিকে, সবধরনের চেষ্টার পরও সচল রাখা যায়নি শহরতলীর কুমারগাঁও পাওয়ার গ্রিড উপকেন্দ্র। বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় বন্ধ করে দিতে হয়েছে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি। ফলে ন্যাশনাল গ্রিড লাইন থেকে সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে।
আজ দুপুর সোয়া ১২টা থেকে পুরো সিলেট জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন বিউবো সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল কাদির।
সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানান, পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে কাজে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনী সদস্যরা নিজস্ব ক্রুজ ও বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার করছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নৌবাহিনীর ৩৫ সদস্যের একটি দল শুক্রবার রাতে সিলেট এসে পৌঁছায়। শনিবার সকাল থেকে ৩৫ সদস্যের দল কোস্টগার্ডের ১টি ক্রুজ ও বিমানবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে।
সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নে একটি টিম সকাল থেকে কাজ শুরু করে। আরেকটি টিম কোম্পানিগঞ্জে কাজ শুরু করেছে।
গত কয়েকদিনে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও হবিগঞ্জসহ বেশ কয়েক জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
ভারতের মেঘালয় ও আসামে ক্রমাগত বৃষ্টি হওয়ায় দেশের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ৭২ ঘণ্টায় বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ, ভারতের আসাম, মেঘালয়ে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এসব পানি বাংলাদেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রাম এলাকা থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে সাগরে নামে। ফলে এসব এলাকার নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।