ধরা যাক, আমরা বিষুবরেখার কোনো বিন্দুতে অবস্থিত। তাহলে পৃথিবী স্থির থাকলে পৃথিবীর বুকে চাঁদের ছায়া ঘণ্টায় ৩ হাজার ৭০০ কিলোমিটার বেগে পূর্ব দিকে সরত (চাঁদের কক্ষপথ ও ভূপৃষ্ঠ বক্র হলেও কয়েক মিনিটের জন্য আমরা ওই কক্ষপথকে একটা সরলরেখা বলে কল্পনা করে নিতে পারি)।
কিন্তু যেহেতু পৃথিবী ওখানে ঘণ্টায় ১ হাজার ৭০০ কিমি বেগে সেই পূর্ব দিকেই সরছে, সে জন্য আমাদের কাছে মনে হবে, চাঁদের ছায়া বিষুবরেখার কাছে ৩ হাজার ৭০০ – ১ হাজার ৭০০ = ২,০০০ কিমি বেগে পৃথিবীর বুকে ভ্রমণ করছে। বিভিন্ন অক্ষাংশে এই মান বিভিন্ন হবে। যেমন ২১ আগস্টের গ্রহণের সময় যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমে যেখানে গ্রহণের শুরু, সেখানে ছায়ার গতি ছিল ঘণ্টায় ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার, আবার গ্রহণের মাঝামাঝি জায়গায় ঘণ্টায় ২ হাজার ৪০০ কিমি।
এই বিভিন্ন গতিবেগের কারণ পৃথিবীর অক্ষাংশ ও বক্রতা, গ্রহণ শুরু হয় পশ্চিমের বক্র দিকে আর শেষ হয় পূর্বের বক্র দিকে। আর মাঝামাঝি সময়ে ছায়া মোটামুটি সমতলভূমিতে ভ্রমণ করে। আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে এই ছায়া প্রায় ৫ হাজার কিমি পথ প্রায় দুই ঘণ্টা সময়ে পাড়ি দিয়েছে।
অন্যদিকে চাঁদের ব্যাস হলো ৩ হাজার ৪৭৪ কিমি। যেহেতু পৃথিবী থেকে দেখলে চাঁদ ও সূর্যের উভয়েরই কৌণিক ব্যাস ০.৫ ডিগ্রি, তাই আংশিক ও পূর্ণগ্রহণ মিলিয়ে মোট (৩৪৭৪ x ২)/২৪০০ = ৩ ঘণ্টা (প্রায়) সময় লাগবে। এখানে আমরা চাঁদের ছায়ার গতি ঘণ্টায় ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার ধরেছি।
ছায়ার গতিবেগ যত কম হবে, পূর্ণগ্রহণের সময়ও তত বেশি হবে। তাই আমেরিকার পশ্চিমে পূর্ণগ্রহণের সময় ছিল ২ মিনিট আর মাঝখানে ছিল ২ মিনিট ৪০ সেকেন্ড। যেহেতু এবারকার ছায়ার ব্যাস হলো ১০০ কিলোমিটারের মতো, সে জন্য মাঝামাঝি জায়গায় পূর্ণগ্রহণ মাত্র ১০০/২,৪০০ = ০.০৪২ ঘণ্টা বা ২.৫ মিনিট স্থায়ী হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।