সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাতের আকাশে আগামী ৫ নভেম্বর দেখা যাবে বছরের সবচেয়ে বড় ও উজ্জ্বল পূর্ণচন্দ্র—‘বিভার সুপারমুন’। এই দিনে চাঁদ সাধারণ সময়ের তুলনায় প্রায় ১৪ শতাংশ বড় এবং ৩০ শতাংশ বেশি উজ্জ্বল দেখাবে বলে জানিয়েছে দুবাই অ্যাস্ট্রোনমি গ্রুপ (ডিএজি)।

ডিএজি-র অপারেশনস ম্যানেজার খাদিজা হাসান আহমেদ বলেন, ‘এই সুপারমুন হবে বছরের সবচেয়ে বড় জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনা। এ সময় চাঁদ পৃথিবীর কক্ষপথে সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে থাকবে, যাকে বলা হয় পেরিগি। ফলে এটি অনেক বড় ও উজ্জ্বল দেখাবে।’
এই বছর তিনটি সুপারমুন দেখা যাবে। এর প্রথমটি ছিল ৭ অক্টোবরের ‘হান্টারস সুপারমুন’, দ্বিতীয়টি ৫ নভেম্বরের ‘বিভার সুপারমুন’ এবং শেষটি ৫ ডিসেম্বরের ‘কোল্ড সুপারমুন’, যা বছরের শেষ পূর্ণচন্দ্রও বটে।
বিভার সুপারমুন নামের উৎস
খাদিজা জানান, প্রতি বছর নভেম্বর মাসে ‘বিভার মুন’ দেখা যায়। প্রাচীন আমেরিকান ও ঔপনিবেশিক যুগে এই সময়কে বলা হতো বিভারদের শীত প্রস্তুতির সময়—তারা তখন বাঁধ তৈরি করে ও খাদ্য মজুত করে। এই ঋতু-ভিত্তিক পর্যবেক্ষণ থেকেই নামটি এসেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি বছরই নভেম্বর মাসে বিভার মুন হয়, কিন্তু সুপারমুন হয় তখনই যখন পূর্ণচন্দ্র পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে অবস্থান করে। এই দুই সময়ের মিলন খুবই বিরল, কয়েক বছর পরপরই ঘটে।’
কখন দেখা যাবে
খাদিজার মতে, ৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৫টা ১৭ মিনিটের দিকে চাঁদ ওঠার সময় বিভার সুপারমুন সবচেয়ে বড় ও রঙিন দেখা যাবে।
‘চাঁদ ওঠার সময় এটি কমলা বা সোনালি আভা ধারণ করে। এরপর ধীরে ধীরে আকাশে উপরে উঠলে তা সাদা ও আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে,’ বলেন তিনি।
খোলা জায়গা বা পূর্ব দিকের দিগন্ত পরিষ্কার দেখা যায় এমন স্থান থেকেই এই দৃশ্য উপভোগ করা যাবে। খালি চোখেই দেখা সম্ভব, তবে টেলিস্কোপ ব্যবহার করলে চাঁদের গহ্বর ও পর্বতমালা স্পষ্টভাবে দেখা যাবে।
জনসাধারণের জন্য পর্যবেক্ষণ অনুষ্ঠান
এই বিশেষ মহাজাগতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুবাই অ্যাস্ট্রোনমি গ্রুপ আল আওয়ির সেকেন্ড পার্কে এক তারামেলা আয়োজন করছে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে এ অনুষ্ঠান। টিকিটের দাম রাখা হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ দিরহাম, যা বুকিং করা যাবে আল থুরায়া অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টারের ওয়েবসাইটে।
অনুষ্ঠান শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায় স্বাগত পর্বের মাধ্যমে। এরপর ৭টা ৩০ মিনিটে বিভার সুপারমুন নিয়ে তথ্যবহুল আলোচনা, রাত ৮টায় প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং ৮টা ১৫ মিনিটে টেলিস্কোপে চাঁদ পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া হবে। পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে থাকবে চাঁদ ও গ্রহগুলোর (বিশেষত শনিগ্রহ ও বৃহস্পতি) ছবি তোলার সুযোগও।
খাদিজা বলেন, ‘খালি চোখে দেখলেও চাঁদের সোনালি আভা ও উজ্জ্বলতা মোহিত করবে। আর টেলিস্কোপে দেখলে দেখা যাবে এর খাঁজ, গহ্বর ও পাহাড়—একটি সত্যিই চমকপ্রদ দৃশ্য।’
চন্দ্র পর্যবেক্ষণের ব্যতিক্রমী বছর
২০২৫ সালকে বলা হচ্ছে চাঁদ পর্যবেক্ষণের ব্যতিক্রমী বছর। টানা কয়েক মাস ধরে একাধিক চন্দ্রঘটনা ঘটছে, যা জ্যোতির্বিজ্ঞানপ্রেমীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ। এ বছর সেপ্টেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণও দেখা গেছে।
খাদিজা বলেন, ‘কয়েক বছরের মধ্যে পরপর এতগুলো উল্লেখযোগ্য চন্দ্রঘটনা দেখা পাওয়া বিরল। এটি চাঁদের নানা রূপ দেখার দারুণ সুযোগ এনে দিয়েছে।’
সূত্র: গালফ নিউজ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



