স্পোর্টস ডেস্ক : একসময় অলিম্পিকের শুটিং ইভেন্টে মার্কিন অ্যাথলেটদের নিরঙ্কুশ আধিপত্য ছিল। পদকপ্রাপ্তি কিংবা অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড় সংখ্যায় দেশটির ধারেকাছে কেউই ছিল না। সময় পাল্টেছে, দেশটিরও আধিপত্য কমেছে। আমেরিকার সোনালি পদকে ভাগ বসিয়েছে চীন। টোকিও অলিম্পিক পর্যন্ত শুটিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ১১৬ স্বর্ণ পদকের বিপরীতে চীনের পদকসংখ্যা ১১৬। প্যারিসে তাদের পেছনে ফেলে দিল চীন। উদ্বোধনের পরদিন শনিবার ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের মিশ্র দলগত ইভেন্টে এশিয়ার দেশটিকে সোনালি হাসি উপহার দিয়েছে ইউতিং হুয়াং-লিহাউ শ্যাং জুটি।
এবারের অলিম্পিকে অবশ্য চীন নয়, প্রথম পদক জিতেছে কাজাখস্তান। তা কিন্তু আবার এই ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্ট থেকেই। ব্রোঞ্জ নির্ধারণী লড়াইয়ে নিরঙ্কুশ দাপট দেখিয়ে জামার্নিকে ১৭-৫ পয়েন্ট ব্যবধানে হারিয়েছে উজবেক জুটি আলেক্সান্দ্রা লি আর ইসলাম সাতপেয়েভ। এই যুগলের কল্যাণে ২৮ বছর পর শুটিংয়ে পদকের মুখ দেখেছে কাজাখস্তান। জয়ের পর সাতপেয়েভ বলেছেন, ‘ঠিকবোধ করছি। আমার প্রথম অলিম্পিক প্রতিযোগিতা ছিল ও আমি তৃতীয় স্থান পেয়েছি। তাই আমি খুশি।’
চার বছর আগে টোকিও অলিম্পিকে চীনের হয়ে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে স্বর্ণ জিতেছিলেন ইয়াং কিয়ান ও ইয়াং হাওরান। এবার তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন ইউতিং-লিহাউরা। প্যারিসের চ্যাটেউরক্স শহর থেকে তিন ঘণ্টার পথ শাতুহু শুটিং সেন্টার রেঞ্জে এবারের আসরে প্রথম পদকের ভাগ্য নিষ্পতি হয়। চীনের হয়ে এবার পদক ধরে রাখার ভার ছিল ইউতিং-লিহাউ জুটির ওপর। শনিবার সকালে মিশ্র দলগত ইভেন্টের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল দক্ষিণ কোরিয়া।
হাড্ডাহাডি লড়াইয়ের শুরুতে চার পয়েন্ট লিড নেয় ইউতিং-লিহাউ জুটি। শেষতক হাজুন পার্ক-জিয়েউন কেউম জুটিকে ১৬-১২ পয়েন্ট ব্যবধানে হারিয়ে তারা স্বর্ণপদক জেতেন। অন্যদিকে রৌপ্য পদক দিয়ে পদকের খাতা খুলে দক্ষিণ কোরিয়া। চীনকে প্যারিস অলিম্পিকের প্রথম স্বর্ণ পদক জিতিয়ে লিহাউ শ্যাং অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমি খুবই খুশি। ম্যাচটি কঠিন ছিল। ব্যক্তিগত সেরা সাফল্যের পেছনে সবার ভূমিকা ছিল।’
শুধু প্রথম পদক নয়, আসরে দ্বিতীয় স্বর্ণ পদকটাও গেছে চীনের ঝুলিতে। এবার তো এশিয়ার দেশটি সরাসরি হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে। সিনক্রোনাইজড তিন মিটার স্প্রিংবোর্ড টাইভিংয়ে মূল লড়াইটা ছিল চীন আর যুক্তরাষ্ট্রেরই। তবে পার্থক্য ছিল বিস্তর। পাঁচটি ডাইভেই দুর্দান্ত ছিল চীনের চ্যান আর চ্যাং জুটি। ৩৩৭.৬৮ পয়েন্ট স্কোর করেছে তারা। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সারা বেকন আর কাসিডে কোক জুটি ৩১৪.৬৪ পয়েন্ট স্কোর করে পেয়েছে রৌপ্য পদক।
ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে গ্রেট ব্রিটেন। ৩০২.২৮ পয়েন্ট স্কোর করে দেশটিকে প্রথম পদক উপহার দিয়েছে ইয়াসমিন হারপার ও স্কারলেট মেউ জেনসেন জুটি। ২০০৪ সালের পর অলিম্পিকে এবারের উদ্বোধনী দিনে প্রথম পদক পেয়েছে ব্রিটেন। সেটাও অবশ্য ভাগ্যের জোরে। কেননা পদকটা অস্ট্রেলিয়ারই পাওয়ার কথা ছিল। ম্যাডিসন কেনি ও অ্যানাবেলে স্মিথ জুটি শেষ ডাইভে ৫৮.৬৮ স্কোর করতে পারলেই হয়ে যেত। কিন্তু টাইমিংয়ে গড়বড় করে ফেলেন স্মিথ-কেনিরা। যে কারণে তাদের স্কোর হয় ৪৮.৬। এতে পঞ্চম হতে হয়েছে তাদের। ব্রিটেন পেয়েছে প্রথম পদকের মধুর স্বাদ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।