জুমবাংলা ডেস্ক : বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে গিয়ে ক্রেতার ভোগান্তি যেন কিছুতেই কমছেই না। প্রতি সপ্তাহে কোনো না কোনো পণ্য বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে দাম বাড়ায় চাল, আটা-ময়দা ও ডিম কিনতে ক্রেতাকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। পাশাপাশি পেঁয়াজের দাম কমলেও আদা-রসুন, হলুদ ও জিরার দাম আরেক দফা বেড়েছে। তবে বাজারে এসব পণ্যের কোনো ধরনের সংকট নেই। ভোক্তা তার চাহিদামতো নিতে পারছে। কিন্তু দাম বেশি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, বসুন্ধরা ও রামপুরা কাঁচাবাজারসহ একাধিক খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে এসব পণ্যের দাম বাড়ার চিত্র সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পণ্য মূল্যতালিকায় লক্ষ করা গেছে। টিসিবি বলছে-সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি সরু চাল ৩.৮৫ শতাংশ দাম বেড়েছে। মাঝারি আকারের চালের দাম বেড়েছে ১.৮৫ শতাংশ।
পাশাপাশি প্রতি কেজি খোলা আটার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এক কেজির প্যাকেটজাত ময়দার দাম বেড়েছে ৩.৭০ শতাংশ। সংস্থাটি বলছে সাত দিনের ব্যবধানে প্রতি হালি (৪ পিস) ফার্মের ডিমের ৭.৭৮ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। প্রতি কেজি রসুন (নতুন ও পুরোনো) কিনতে ক্রেতার ১৪.২৯ শতাংশ বেশি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। বেড়েছে দেশি ও আমদানি করা আদার দাম।
টিসিবির তথ্য মতে, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি দেশি আদা ১৪ ও আমদানি করা আদার দাম ১২.৭০ শতাংশ বেড়েছে। তবে এ সময় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম কমেছে সর্বোচ্চ ২.৩৫ শতাংশ
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বাজারে পণ্য কিনতে প্রতিনিয়ত ক্রেতারা ঠকছেন। বিক্রেতারা নানা অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়ায় আবার কমায়।
সময় ও সুযোগ বুঝে বিক্রেতারা অতি মুনাফা করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। যে কারণে প্রতি সপ্তাহেই ক্রেতার একাধিক পণ্য কিনতে বাড়তি টাকা খরচ করতে হয়। এ থেকে মুক্তি পেতে কঠোরভাবে বাজার তদারকি করা দরকার। অসাধুদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা দরকার।
খুচরা বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাত দিনের ব্যবধানে কেজিতে আরও দুই টাকা বেড়ে প্রতি কেজি সরু চাল কিনতে হচ্ছে ৭৪-৭৫ টাকায়। কেজিতে ২ টাকা বেড়ে মাঝারি আকারের চাল ৪৮-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকা, যা সাত দিন আগে ৫২ টাকা ছিল। এক কেজির প্যাকেটজাত ময়দা সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ টাকা বেড়ে ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি হালি ফার্মের ডিম কিনতে ক্রেতার ৫০ টাকা গুনতে হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ৪৬-৪৭ টাকা ছিল।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি দেশি আদা ২১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা সাত দিন আগে ১৮০ টাকা ছিল। সাত দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি আমদানি করা আদা ২০ টাকা বেড়ে ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা, যা আগে ৮০ টাকা ছিল।
কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে আমদানি করা হলুদ ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হয়েছে ৪৬০ টাকা।
রাজধানীর কাওরান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে আসা মো. সালাউদ্দিন বলেন, আবারও চাল অটা-ময়দার দাম বাড়ছে। প্রতি হালি ডিম কিনতে ৫০ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। পাড়া-মহল্লার মুদির দোকানে আরও দুই টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে তদারকি জোরদার করতে হবে।
জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, একজন ক্রেতা ঘর থেকে ব্যাগ নিয়ে বাজারে যাওয়া ও পণ্য কেনার প্রতিটি প্রক্রিয়ায় ঠকছেন। আমরা এই বিষয়ে কাজ করছি।
প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে সভা করছি। সঙ্গে প্রতিদিন বাজারে তদারকি ও অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।