জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের তিন হাজারের বেশি প্রতিনিধি নিয়ে গতকাল শুক্রবার এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সকালে কক্সবাজারের উখিয়ার লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা শিবিরে এই সমাবেশ হয়। প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার দাবিতে উখিয়া ও টেকনাফের প্রতিটি রোহিঙ্গা শিবিরের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। দ্রুত প্রত্যাবাসনের দাবিতে ডাকা সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতারা দ্রুত দেশে ফিরে যাওয়ার আগ্রহ জানিয়েছেন।
সাড়ে ছয় বছর ধরে রোহিঙ্গাদের বোঝা বহন করায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তাঁরা।
প্রত্যাবাসনের দাবিতে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ
এদিকে টানা আট দিন যুদ্ধাবস্থার পর গতকাল দিনে শান্ত ছিল বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সংলগ্ন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সীমান্ত এলাকা। নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু ও বাইশফাঁড়ি এলাকার বাসিন্দা নূর ছৈয়দ বলেন, গতকাল ভোররাত ৩টার দিকে ওপারের ঢেকুবুনিয়া এলাকায় বেশ কয়েক দফা বিস্ফোরণের শব্দ তাঁরা শুনতে পেয়েছেন।
সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত থাকায় গতকাল সকাল থেকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের এপারে কোনারপাড়া, তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, ফাত্রাঝিরি, রেজু আমতলি ও গর্জনবনিয়া গ্রামের লোকজন অনেক দিন পর নির্ভয়ে কৃষিকাজ করতে পেরেছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। তা সত্ত্বেও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করে জনসাধারণকে নিরাপদে চলাফেরা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতিতে সেখানকার রোহিঙ্গারা যাতে দেশ না ছাড়ে, সেই আহ্বানও জানানো হয় গতকালের সমাবেশে। এতে বক্তব্য দেন রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার কামাল, মৌলভী সৈয়দ উল্লাহ, ফোরকান, যুব রোহিঙ্গা নেতা মুসা ও মং সৈয়দ উল্লাহ।
রোহিঙ্গা যুবনেতা মোহাম্মদ মুসা কার্যকর প্রত্যাবাসনের সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান জানান। রোহিঙ্গা নেতা মং সৈয়দ উল্লাহ রাখাইনের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে বলেন, ‘২০১৭ সালের কঠিন সময়ে যেমন আপনারা দেশকে ভালোবেসে কোথাও যাননি, তেমনিভাবে রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতিতেও আপনারা দেশ ছাড়বেন না। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জীবনের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’
রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশে আমাদের সাড়ে ছয় বছর পার হচ্ছে। একটি ঘনবসতিপূর্ণ ছোট দেশে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বোঝা দিনের পর দিন সহ্য করা কঠিন।
আমাদের নিজেদের দেশ আছে, আমরা সেখানে ফিরে যেতে চাই।’
উল্লেখ্য, প্রত্যাবাসনের দাবিতে এর আগেও বেশ কয়েকটি বড় সমাবেশ করেছিল রোহিঙ্গারা। তবে প্রতিটি শিবিরের প্রতিনিধি নিয়ে এটিই রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সবচেয়ে বড় সমাবেশ। এতে রোহিঙ্গা শিবিরের নারী প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।