১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও ইংল্যান্ড সেমি-ফাইনাল খেলেছিল। ওই ম্যাচ ম্যারাডোনার গোল নিয়ে বেশি বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এত অত্যাধুনিক টেকনোলোজি তখন ছিলো না। তবে বর্তমানে ফিফা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম ও কম্পিউটারের সিস্টেম সফটওয়্যারে অনেক উন্নতি ঘটিয়েছে।
কাতার বিশ্বকাপে কম্পিউটার সিস্টেমে এত নিখুঁত আপডেট আনা হয়েছে যে হাত দিয়ে গোল করা বা অফসাইড কোন কিছুই নজর এড়াবে না। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল ‘ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি’ বা ‘ভিএআর’। রাশিয়াতে প্রথম ব্যবহার করায় ‘ভিএআর’ দিয়ে যেমন দল উপকৃত হয়েছে, তেমনই কিছু সিদ্ধান্ত ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। সেটা গত বিশ্বকাপের থেকে আরও উন্নত ও নির্ভুলভাবে তথ্য দেবে বলে আশা রাখছে এবারের আয়োজকেরা।
কাতারে গরম সমস্যার সমাধান করেছে ‘অ্যাডভান্স কুলিং টেক’ নামে নতুন এক প্রযুক্তি। এবারে মোট ৯টা স্টেডিয়ামে খেলা হবে। তার ভেতরে ৮টা স্টেডিয়ামে এই প্রযুক্তির ব্যবহার করেছে তারা। ফলে গ্যালারিতে থাকা দু’দলের সমর্থক এবং মাঠে থাকা ফুটবলার – সবার জন্য মাঠের তাপমাত্রা সহনীয় মাত্রা থাকবে।
কাতার এবার অভাবনীয় এক স্টেডিয়াম তৈরি করেছে। ‘স্টেডিয়াম ৯৭৪’ বানানো হয়েছে শিপিং কন্টেইনার এবং স্টিলের ফ্রেম দিয়ে। স্টেডিয়াম পুরো লেগোর মতো। বিশ্বকাপের ইতিহাসে স্টেডিয়াম ৯৭৪-ই প্রথম অস্থায়ী স্টেডিয়াম। যেটা বানানে যেমন কম খরচ হয়েছে, তেমনি সাধারণ কোনো স্টেডিয়ামের থেকে কম ধাতব পদার্থ লেগেছে এই স্টেডিয়ামকে বানাতে।
‘আল রিহলা’ নামক এবারের বিশ্বকাপের বল আদতে একটা অভাবনীয় এক প্রযুক্তি। ‘বল টেকনোলজি’ নামের এক পদ্ধতি এই বলের ভেতর থাকার কারণে প্রতি মুহূর্তে ম্যাচের তথ্য ভিএআর রেফারির কাছে পাঠাবে। যেহেতু ভেতরে গতি বুঝতে পারার সেন্সর রয়েছে, এছাড়াও ফিফার নতুন ‘সেমি-অটোমেটেড অফসাইড টেকনোলজি’কে বাস্তবায়ন করতে এই নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন বল বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
অ্যাডিডাস এবং আরও বেশ কিছু পার্টনার এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাহায্য নিয়ে ফিফা ইতোমধ্যে ‘ভিএআর’কে আরও কার্যকরী করে তুলেছে। আর এবার কাতারে তারা ব্যবহার করতে যাচ্ছে নতুন আরেক প্রযুক্তি: সেমি-অটোমেটেড অফসাইড টেকনোলজি।
ই প্রযুক্তি মাঠে আলাদা ১২টি ক্যামেরা দিয়ে ম্যাচের বলকে অনুসরণ করবে। এবং এই ক্যামেরাগুলো প্রত্যেকটি নিজস্ব বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এরা মূলত ট্র্যাকিং ক্যামেরা। এই বিশ্বকাপ কাতারে আয়োজন করা নিয়ে নানা মুনির নানা মত ছিল। কিন্তু এই বিশ্বকাপ যে প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে নতুন এক দিগন্ত খুলে দিচ্ছে, সেটা বলাই বাহুল্য।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।