জুমবাংলা ডেস্ক : বাগেরহাটে প্রেমের টানে বাড়ি থেকে পালিয়েছেন দশম শ্রেণি পড়ুয়া দুই সহপাঠি। এতে ক্ষুব্ধ মেয়ের বাবা ও তার লোকজন ছেলের বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও ছেলের বাবাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে মেয়েকে ফিরে পেতে বাগেরহাট মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন মেয়ের মা। মেয়ের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত চলছে এবং দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করতে পুলিশের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক।
পলাতক ছেলেটি বাগেরহাট সদর উপজেলার কুড়শাইল গ্রামের জনৈক বর্মনের ছেলে। মেয়েটি পার্শ্ববর্তী আড়পাড়া গ্রামের জনৈক মোড়লের ছেলে। তারা দুইজনই আড়পাড়া-কুড়শাইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১০ শ্রেণিতে পড়াশুনা করতেন।
ছেলের বাবা বলেন, মেয়েটির সঙ্গে আমার ছেলের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। এই অসম প্রেম থেকে বিরত থাকার জন্য বিভিন্ন সময় ছেলেকে বকাঝকা ও মারধরও করেছি। তাতেও ফেরেনি তারা। একপর্যায়ে সোমবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে ওরা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এর জেরে মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে মেয়ের বাবা ও তার লোকজন আমার বাড়িতে এসে কলাপ্সিবল গেট, আলমারি ও টিভি ভাঙচুর করে। এসময় বেশকিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাও নিয়ে যায় তারা। তাদের ভয়ে আমি প্রতিবেশী প্রদীপ মন্ডলের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েও রক্ষা হয়নি। তারা ওই বাড়িতে এসে আমাকে মারধর করে, মেয়ের বাবার দায়ের কোপে আমার বাম হাতের মধ্য আঙ্গুল কেটে ঝুলে গেছে। আমাকে ঠেকাতে এসে অমিত সাহা ও প্রদীপ মন্ডল নামে আরো দুজন আহত হয়েছেন।
ছেলের বাবা বলেন, ছেলে-মেয়ে পালিয়েছে প্রেমের টানে। এতে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। তারপরও আমি এবং আমার আত্মীয় স্বজন ছেলে-মেয়েকে খুঁজতেছি। কিন্তু কোনভাবে সন্ধান পাচ্ছি না। আমরা চাই ছেলে-মেয়ে বাড়িতে ফিরে আসুক।
ছেলের মা বলেন, প্রেমের সম্পর্কের কারণে ছেলে-মেয়ে পালিয়েছে। এতে আমাদের দোষকি। তারপরও মেয়ের বাবা আমার স্বামীকে মারধর করেছে, কুপিয়েছে। গোয়ালের গরু ধরে নিয়ে গেছিল তারা, চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে ফেরত দিলেও আমাদেরকে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে। ভয়ে যুবতী দুই মেয়েকে ঢাকায় পাঠিয়ে দিয়েছি। আমরা চাই যে কোন মূল্যে ছেলে-মেয়ে ফিরে আসুক। আমরা শান্তিতে বসবাস করি।
ছেলের পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করে পলাতক মেয়ের মা বলেন, আমার মেয়ে খুবই সহজ সরল প্রকৃতির। স্মরণ কুমার খুবই বাজে প্রকৃতির ছেলে। সে নিয়মিত নেশা করে। নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে আমার মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছে নেশাখোর। আমি কখনও আমার মেয়েকে ছাড়া থাকিনি, আপনারা যেকোন মূল্যে আমার মেয়েকে এনে দিন- বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার স্বামীর মানসিকভাবে অসুস্থ। মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার খবরে সে একটু বেসামাল হয়ে পড়েছে। যার কারণে তাকে একটু অন্য বাড়িতে রাখা হয়েছে। তবে ছেলের বাড়িতে যেয়ে ভাঙচুর-লুটপাটের ঘটনা সঠিক নয়।
কিশোর-কিশোরীর পলায়ন সম্পর্কে বারুইপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হায়দার আলী মোড়ল বলেন, মেয়ে পালানোর বিষয় জানতে পেরে তার বাবা কিছুটা উত্তেজিত হয়েছিল। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে নিয়ে আমি তাৎক্ষনিকভাবে পরিস্থিতি শান্ত করেছি। এখন সবাই শান্ত রয়েছে। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি যাতে অপ্রাপ্ত বয়স্ক এই শিক্ষার্থীদের সন্ধান পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, আমরা কিশোরীর মায়ের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের তদন্ত চলছে। ঘনিষ্ট সম্পর্কের কারণে ঘর ছাড়া অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোর-কিশোরীকে উদ্ধার করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে বলে জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।