গরম গরম ক্রিস্পি ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, রসালো চিকেন উইংস, নোনতা ফিশ ফ্রাই… ভাজার স্বাদ যেন বাঙালির রক্তে। কিন্তু তেলের ভাপ, গন্ধ, আর ক্যালরির ভয়ে কি বারবার পিছিয়ে আসেন? ফিলিপসের এসেনশিয়াল এয়ারফ্রায়ার HD9252 আপনার এই দ্বন্দ্বের সমাধান হতে পারে। এই ছোট্ট যন্ত্রটি প্রতিশ্রুতি দেয় ৮০% কম তেল ব্যবহারে সেই ঐতিহ্যবাহি ক্রাঞ্চ আর রসের স্বাদ দিতে! বাংলাদেশের রান্নাঘর থেকে শুরু করে কলকাতার বাসা – এই এয়ারফ্রায়ার কি স্বাস্থ্য সচেতন খাদ্যরসিকদের দৈনন্দিন সঙ্গী হতে পারে? আসুন, বাংলাদেশ ও ভারতে এর দাম, ফিচার, এবং ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
🔷 বাংলাদেশে দাম ও মার্কেট বিশ্লেষণ (HD9252 এয়ারফ্রায়ার)
ফিলিপসের অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর রান্স বাংলাদেশ-এর ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য অথরাইজড রিটেইলার চ্যানেল (যেমন: ডারাজ, প্রিকশন ডটকম) অনুযায়ী, ফিলিপস এসেনশিয়াল এয়ারফ্রায়ার HD9252-এর বর্তমান (সেপ্টেম্বর ২০২৪) অফিসিয়াল দাম ৳ ২৪,৯৯০ (চব্বিশ হাজার নয়শত নব্বই টাকা)।
গ্রে মার্কেট/অনঅফিসিয়াল দাম: অনলাইন মার্কেটপ্লেস (যেমন: ফেসবুক মার্কেটপ্লেস, কিছু ই-কমার্স পেজ) বা নিউমার্কেটের কিছু দোকানে আপনি এই মডেলটি ৳ ১৮,০০০ থেকে ৳ ২১,০০০-এর মধ্যে পেতে পারেন।
- সতর্কতা: গ্রে মার্কেটে কেনার ক্ষেত্রে গ্যারান্টি/ওয়ারেন্টি কার্যকর নাও হতে পারে। সার্ভিস ও সাপোর্ট পেতে সমস্যা হতে পারে। প্রোডাক্টটি আসল কিনা বা রিফার্বিশড কিনা তা যাচাই করা কঠিন।
দামের উপর প্রভাবক:
- ইম্পোর্ট ডিউটি ও ট্যাক্স: বাংলাদেশে ইলেকট্রিক অ্যাপ্লায়েন্স আমদানিতে উচ্চ শুল্ক ও ভ্যাট প্রযোজ্য, যা প্রোডাক্টের চূড়ান্ত দাম বাড়ায়।
- ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল: অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে আসা পণ্যের দামে লজিস্টিক্স ও সার্ভিস নেটওয়ার্কের খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে।
- বৈদ্যুতিক খরচ: এয়ারফ্রায়ার তুলনামূলকভাবে বেশি বিদ্যুৎ (এই মডেলটি 1400W) খরচ করে, যদিও রান্নার সময় কম হওয়ায় সামগ্রিক খরচ কম হতে পারে। তবে বাংলাদেশে বিদ্যুতের দামও একটি বিবেচ্য বিষয়।
- চাহিদা ও সরবরাহ: রমজান, ঈদ বা বিবাহের মৌসুমে রান্নার যন্ত্রপাতির চাহিদা বাড়ে, যার ফলে দাম স্থিতিশীল থাকলেও ডিসকাউন্ট কম পাওয়া যায়।
- প্রাপ্যতা: দেশের প্রধান ইলেকট্রনিক্স শপ, রান্স বাংলাদেশের আউটলেট এবং বড় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে সহজলভ্য।
🔷 ভারতে দাম
ভারতে ফিলিপস এসেনশিয়াল এয়ারফ্রায়ার HD9252/90 (মডেল নম্বরে সামান্য ভিন্নতা থাকতে পারে) এর অফিসিয়াল MRP (Maximum Retail Price) সাধারণত ₹ 14,995 (চৌদ্দ হাজার নয়শো পঁচানব্বই রুপি)। তবে, অফলাইন রিটেল শপ এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রচুর ডিসকাউন্ট সহ এটি পাওয়া যায়।
- প্রধান অনলাইন প্ল্যাটফর্মে দাম (সেপ্টেম্বর ২০২৪):
- Amazon India: ₹ 9,999 – ₹ 11,490 (ব্যাঙ্ক অফারসহ আরও কম হতে পারে)
- Flipkart: ₹ 10,499 – ₹ 11,999
- Tata CLiQ: ₹ 11,490
- Reliance Digital: ₹ 12,490
বাংলাদেশ ও ভারতের দামের তুলনা: ভারতের দাম (ডিসকাউন্ট পর) বাংলাদেশের অফিসিয়াল দামের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম (প্রায় ২৫-৩৫% কম)। এটি মূলত আমদানি শুল্ক কাঠামো, ডিস্ট্রিবিউশন খরচ এবং স্থানীয় করের পার্থক্যের কারণে।
🔷 বৈশ্বিক বাজারে দাম
- ইউরোপ (MSRP): প্রায় €140 – €160 (ব্র্যান্ডের হোম মার্কেট, দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল)
- যুক্তরাষ্ট্র (MSRP): $199.99 (বড় ছুটির দিনে Amazon, Best Buy, Walmart-এ $149.99 – $179.99 তে পাওয়া যায়)
- যুক্তরাজ্য (MSRP): £129.99 (Amazon UK, Argos, Currys PC World-এ প্রায়ই £99.99 – £119.99)
- সংযুক্ত আরব আমিরাত: AED 599 – AED 699 (Amazon.ae, Noon.com, Carrefour)
- অস্ট্রেলিয়া: AUD 199 – AUD 249 (Harvey Norman, JB Hi-Fi, Amazon AU)
দামের প্রবণতা: লঞ্চের পর থেকে প্রায় সব মার্কেটেই এই মডেলটির দাম কমেছে, বিশেষ করে নতুন মডেল (HD9650/96 বা XXL মডেল) আসার পর। ব্ল্যাক ফ্রাইডে, প্রাইম ডে, ফ্ল্যাশ সেলের মতো ইভেন্টে সর্বোচ্চ ডিসকাউন্ট পাওয়া যায়।
প্রাপ্যতা: বিশ্বব্যাপী ফিলিপসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, Amazon, Best Buy, Walmart, Argos, Currys PC World, Media Markt, Saturn এবং অন্যান্য বড় ইলেকট্রনিক্স রিটেইলারের মাধ্যমে সহজলভ্য।
🔷 ফিলিপস HD9252 এয়ারফ্রায়ার: ফুল স্পেসিফিকেশন ও ফিচার বিশ্লেষণ
ফিলিপসের “র্যাপিড এয়ার” টেকনোলজির দাবি হল গরম বাতাসকে সুপারফাস্ট স্পিডে সঞ্চালন করে খাবারের চারপাশে একটি ক্রিস্পি লেয়ার তৈরি করা, যাতে তেল ছাড়াই ভাজার মতো টেক্সচার পাওয়া যায়। HD9252 মডেলটি এই টেকনোলজির একটি জনপ্রিয় এবং বাজেট-ফ্রেন্ডলি ভেরিয়েন্ট। আসুন ডিটেলস দেখি:
ক্ষমতা ও ডিজাইন (Capacity & Design):
- খাবারের বাস্কেটের ধারণক্ষমতা: ৪.১ লিটার (প্রায় ৮০০ গ্রাম ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা ৪-৫ জনের জন্য মুরগির টুকরা)।
- ডিজাইন: আধুনিক, কমপ্যাক্ট ডিজাইন (LxWxH: প্রায় 32.8 x 30.8 x 31.1 cm)। বাস্কেট সহজে খুলতে, ঢাকনা সহজে খোলা যায়।
- ওজন: প্রায় ৫.৫ কেজি (নেট ওজন)।
- রং: সাধারণত কালো (Black) কালারে পাওয়া যায়।
পাওয়ার ও পারফরম্যান্স (Power & Performance):
- পাওয়ার রেটিং: ১৪০০ ওয়াট (দ্রুত প্রিহিটিং এবং রান্নার জন্য উচ্চ ক্ষমতা)।
- তাপমাত্রা রেঞ্জ: সাধারণত ৪০°C থেকে ২০০°C (প্রেসেট মোডের উপর নির্ভর করে)।
- রান্নার প্রেসেট: ৫টি প্রি-প্রোগ্রামড সেটিংস (ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, মাছ, মুরগি, মাংস, শাকসবজি)।
- সময় সেটিং: ০-৬০ মিনিট পর্যন্ত টাইমার। স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ।
- ফ্যাট রিডাকশন: ফিলিপসের দাবি, ঐতিহ্যবাহি ডিপ ফ্রাইং এর তুলনায় ৯০% পর্যন্ত কম চর্বি ব্যবহার করে একই রকম ক্রিস্পি রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব। ফিলিপস রিসার্চ এই বিষয়ে দাবি করে।
ব্যবহারযোগ্যতা ও কন্ট্রোল (Usability & Control):
- কন্ট্রোল প্যানেল: ইনটুইটিভ ডিজিটাল টাচ কন্ট্রোল। তাপমাত্রা ও সময় সহজে সেট করা যায়।
- ডিসপ্লে: স্পষ্ট ডিজিটাল ডিসপ্লে (সময় ও তাপমাত্রা দেখা যায়)।
- নন-স্টিক কোটিং: বাস্কেট এবং প্যানে নন-স্টিক কোটিং (ধোয়া সহজ, খাবার আটকে যায় না)।
- ধোয়া ও রক্ষণাবেক্ষণ: ডিশওয়াশার-সেফ বাস্কেট ও প্যান (শীর্ষ র্যাক ব্যতীত)।
- সুরক্ষা ফিচার (Safety Features):
- কুল-টাচ হ্যান্ডল ও এক্সটেরিওর: রান্নার সময় যন্ত্রের বাইরের অংশ অতিরিক্ত গরম হয় না।
- অটোম্যাটিক শাট-অফ: টাইমার শেষ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
- বাস্কেট লক সিস্টেম: রান্নার সময় বাস্কেট নিরাপদে লক থাকে।
বিশেষজ্ঞের দৃষ্টিকোণ: পুষ্টিবিদগণ প্রায়ই কম তেলে রান্নার সুপারিশ করেন হৃদরোগ, স্থূলতা ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধে। এয়ারফ্রায়ার এই দিক থেকে একটি কার্যকরী সরঞ্জাম হতে পারে। তবে, এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে এয়ারফ্রাইড খাবারও ক্যালোরিযুক্ত, বিশেষ করে যদি প্রক্রিয়াজাত বা ব্রেডেড খাবার ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের জনপ্রিয় রান্না শো’র শেফগণ প্রায়ই দ্রুততা এবং তেলের ব্যবহার কমানোর সুবিধার কথা উল্লেখ করে এয়ারফ্রায়ার ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
🔷 একই দামের অন্যান্য ডিভাইসের সঙ্গে তুলনা (HD9252 এয়ারফ্রায়ার)
ফিলিপস HD9252 এর মূল্য পরিসরে বাংলাদেশে আরও দুটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের এয়ারফ্রায়ার পাওয়া যায়: ম্যাজিকাল বায়ালেক্স এবং প্রেস্টিজ (Pristige)।
ম্যাজিকাল বায়ালেক্স (Magicool Biallex):
- দাম (বাংলাদেশ): ৳ ১৬,০০০ – ৳ ২০,০০০ (ক্ষমতা ও মডেল ভেদে)।
- ক্ষমতা: সাধারণত ৩.৫L থেকে ৫.৫L মডেল পাওয়া যায়। HD9252 এর চেয়ে কিছুটা ছোট বা বড় হতে পারে।
- ফিচার: ডিজিটাল ডিসপ্লে, প্রেসেট মোড, নন-স্টিক বাস্কেট। ম্যাজিকাল ব্র্যান্ডটি মূলত স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় এবং দামে আকর্ষণীয়।
- সুবিধা: দাম ফিলিপসের চেয়ে কম। স্থানীয় সার্ভিস নেটওয়ার্ক ভালো হতে পারে।
- অসুবিধা: ফিলিপসের ‘র্যাপিড এয়ার’ টেকনোলজির মতো প্রিমিয়াম হিট ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম নাও থাকতে পারে, যার ফলে ক্রিস্পিনেস বা রান্নার সমতা কম হতে পারে। বিল্ড কোয়ালিটি তুলনামূলকভাবে কম শক্তিশালী মনে হয় অনেক ব্যবহারকারীর কাছে।
- প্রেস্টিজ প্রো ডিজিটাল এয়ারফ্রায়ার (Prestige PDI 4.0):
- দাম (বাংলাদেশ): ৳ ১৮,০০০ – ৳ ২২,০০০।
- ক্ষমতা: ৪.০ লিটার (HD9252 এর সাথে প্রায় সমান)।
- ফিচার: ডিজিটাল টাচ কন্ট্রোল, ৮টি প্রিসেট মেনু, ৬০ মিনিট টাইমার, নন-স্টিক বাস্কেট। প্রেস্টিজ ইন্ডিয়ান ব্র্যান্ড, রান্নার সরঞ্জামে ভালো খ্যাতি আছে।
- সুবিধা: ফিলিপসের চেয়ে কিছুটা কম দামে প্রায় সমান ক্ষমতা। প্রিসেট মেনুর সংখ্যা বেশি।
- অসুবিধা: ফিলিপসের মত ব্র্যান্ড ভ্যালু বা দীর্ঘমেয়াদি পারফরম্যান্সের ব্যাপারে ব্যাপক বিশ্বস্ততা এখনও গড়ে উঠছে বাংলাদেশে। হিটিং মেকানিজমের পারফরম্যান্সে সামান্য পার্থক্য থাকতে পারে।
তুলনামূলক সারাংশ: ফিলিপস HD9252 এর মূল আকর্ষণ হল তার প্রমাণিত ‘র্যাপিড এয়ার’ টেকনোলজি, যা ধারাবাহিকভাবে ভালো ক্রিস্পি রেজাল্ট দেয় বলে ব্যবহারকারীরা জানান। ম্যাজিকাল দামে সেরা, প্রেস্টিজ ফিচারে ভরপুর, কিন্তু ফিলিপস ব্র্যান্ড ট্রাস্ট, বিল্ড কোয়ালিটি এবং কুকিং পারফরম্যান্সের দিক থেকে সামগ্রিকভাবে এগিয়ে থাকতে পারে।
🔷 কেন ফিলিপস HD9252 এয়ারফ্রায়ারটি কিনবেন?
- স্বাস্থ্যকর রান্নার রাস্তা: তেল কমিয়ে ফেলুন, ক্যালরি কমিয়ে আনুন। হার্টের স্বাস্থ্য ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
- দ্রুততা ও সুবিধা: প্রিহিটিংয়ের প্রয়োজন নেই বললেই চলে। মাত্র কয়েক মিনিটে প্রেসেট বাটনে চাপ দিয়ে শুরু করুন। রান্নার সময় অনেক কম।
- বহুমুখিতা: শুধু ফ্রাই নয়, গ্রিল, বেক, রোস্ট করা যায়। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন উইংস, স্প্রিং রোল, মাছ, শাকসবজি, এমনকি ছোট কেক পর্যন্ত!
- পরিষ্কার করা সহজ: নন-স্টিক বাস্কেট ও প্যান ডিশওয়াশারে ফেললেই চলে (শীর্ষ পার্ট বাদে)।
- নিরাপত্তা: ডিপ ফ্রাইংয়ের তেল ছিটকে পড়া, গরম তেলের ঝুঁকি নেই। কুল-টাচ বডি।
- কম্প্যাক্ট ও স্টাইলিশ: ছোট রান্নাঘর বা ফ্ল্যাটের জন্য আদর্শ। আধুনিক ডিজাইন।
- সাশ্রয়ী প্রিমিয়াম অপশন: ফিলিপসের উচ্চ প্রান্তিক মডেলের (HD9650/96 XXL) চেয়ে দাম কম, কিন্তু কোর ‘র্যাপিড এয়ার’ টেকনোলজি একই!
কারা কিনবেন? স্বাস্থ্য সচেতন পরিবার, ব্যস্ত পেশাজীবী (দ্রুত রান্না চাই), ছাত্রছাত্রী (হোস্টেলে সহজ রান্না), ছোট পরিবার (৪.১L ক্ষমতা যথেষ্ট), যারা ডিপ ফ্রাইংয়ের ঝামেলা ও ঝুঁকি এড়াতে চান।
🔷 ব্যবহারকারীদের মতামত ও স্টার রেটিং
বাংলাদেশি ও ভারতীয় ব্যবহারকারীদের রিভিউ (অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেমন ডারাজ, প্রিকশন, আমাজন ইন্ডিয়া থেকে সংগৃহীত ও অনূদিত):
- রেজওয়ানা আক্তার (ঢাকা, ★★★★☆): “তেলের ভাপ আর গন্ধে অতিষ্ঠ ছিলাম। ফিলিপসের এয়ারফ্রায়ার কিনে জীবন বদলে গেছে! চিকেন ফ্রাই ও ফিশ ফ্রাই একদম ক্রিস্পি হয়, তেল প্রায় লাগেই না। শুধু একটু দাম বেশি লাগে। ধোয়া খুব সহজ।”
- সুমিত পাল (কলকাতা, ★★★★★): “প্রায় ১ বছর ব্যবহার করছি। পারফরম্যান্স এক কথায় অসাধারণ। ফ্রোজেন ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ১৫ মিনিটেই গরম গরম ক্রিস্পি হয়ে বের হয়। সবজি রোস্ট করতেও ব্যবহার করি। একমাত্র সমস্যা একসাথে খুব বেশি পরিমাণ বানানো যায় না, বড় পরিবারের জন্য ছোট মনে হতে পারে।”
- আরিফ হোসেন (চট্টগ্রাম, ★★★☆☆): “ক্রিস্পি রেজাল্ট ভালোই দেয়, বিশেষ করে মুরগি। কিন্তু কখনো কখনো খাবার একদিক থেকে বেশি ব্রাউন হয়, আরেকদিক কম। একটু উল্টে দিতে হয়। বিদ্যুৎ খরচ খানিকটা বেশি লাগে। দামটা আরেকটু কম হলে পারফেক্ট হতো।
সাধারণ ফিডব্যাক থিম:
- ইতিবাচক: ক্রিস্পি রেজাল্ট, তেল কম ব্যবহার, ব্যবহারে সহজ, পরিষ্কার করা সহজ, কম্প্যাক্ট সাইজ।
- নেতিবাচক/উন্নতির সুযোগ: দাম (বাংলাদেশে বিশেষত), একসাথে বেশি পরিমাণ রান্নার সীমাবদ্ধতা (৪.১L), কিছু মডেলে তাপ বণ্টন পুরোপুরি সমান না হওয়া, বিদ্যুৎ খরচ।
গড় রেটিং: অনলাইন রিটেইল প্ল্যাটফর্মগুলিতে সাধারণত ৪.২ থেকে ৪.৪ / ৫ স্টার রেটিং পায় (সেপ্টেম্বর ২০২৪ অনুযায়ী)।
বাংলাদেশে কোথায় কিনবেন:
- অফিসিয়াল: রান্স বাংলাদেশ (ওয়েবসাইট ও শোরুম), ডারাজ (Daraz), প্রিকশন (Pickaboo)।
- অন্যান্য নির্ভরযোগ্য রিটেইলার: স্টাইলবাজার (Stylebazar), ইভ্যালি (Evaly), বড় ইলেকট্রনিক্স শপ (ওয়ালটন প্লাজা, মিনা বাজার ইত্যাদি)।
ফিলিপস এসেনশিয়াল এয়ারফ্রায়ার HD9252 শুধু একটি কিচেন গ্যাজেট নয়, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার একটি বাস্তবসম্মত সমাধান। বাংলাদেশের বাজারে এর দাম অবশ্যই একটু চড়া মনে হতে পারে, কিন্তু তেলের সাশ্রয়, স্বাস্থ্য সুবিধা এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের কথা ভাবলে এটি একটি মূল্যবান বিনিয়োগ। ফিলিপসের ব্র্যান্ড রেপুটেশন এবং ‘র্যাপিড এয়ার’ টেকনোলজির কার্যকারিতা ব্যবহারকারীরা সাধারণত ইতিবাচকভাবেই মূল্যায়ন করেন। যদি আপনি তেল ছাড়াই ভাজার স্বাদ ও ক্রাঞ্চ চান, দ্রুত রান্না করতে চান এবং একটি টেকসই ও কার্যকরী যন্ত্রপাতি খুঁজছেন, তাহলে HD9252 এয়ারফ্রায়ার আপনার রান্নাঘরের যোগ্য সঙ্গী হতে পারে। অনলাইন বা অফলাইন শপ থেকে কেনার আগে সর্বশেষ দাম ও অফার যাচাই করে নিন।
❓ ফিলিপস HD9252 এয়ারফ্রায়ার সম্পর্কে প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)
১. বাংলাদেশে ফিলিপস HD9252 এয়ারফ্রায়ারের দাম কত?
অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর (রান্স বাংলাদেশ) এর মাধ্যমে বর্তমানে এই এয়ারফ্রায়ারের দাম ৳ ২৪,৯৯০। তবে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বা শো-রুমে বিশেষ অফারে কিছুটা কম দামে (৳ ২৩,০০০ – ৳ ২৪,০০০) পাওয়া যেতে পারে। গ্রে মার্কেটে দাম আরও কম (৳ ১৮,০০০ – ৳ ২১,০০০) হতে পারে, কিন্তু এখানে গ্যারান্টি ও প্রোডাক্ট অথেনটিসিটি রিস্ক থাকে।
২. এই এয়ারফ্রায়ারে রান্না করলে খাবার কি সত্যিই ক্রিস্পি হয়? তেল লাগে কতটুকু?
হ্যাঁ, ফিলিপসের ‘র্যাপিড এয়ার’ টেকনোলজি উচ্চ গতির গরম বাতাসের সঞ্চালনের মাধ্যমে খাবারের বাইরের স্তর দ্রুত ক্রিস্পি করে তোলে। তেলের পরিমাণ প্রচলিত ডিপ ফ্রাইং এর তুলনায় ৮০-৯০% কম লাগে। খাবার প্রস্তুত করার আগে মাত্র ১/২ টেবিল চামচ তেল বা স্প্রে করে নেওয়াই যথেষ্ট। ফলাফল খাবারের ধরন এবং রান্নার সময়ের উপর নির্ভর করে।
৩. ফিলিপস HD9252 ভারতে কত টাকায় পাওয়া যায়? বাংলাদেশের দামের সাথে তুলনা করলে কেমন?
ভারতে এই মডেলের অফিসিয়াল MRP ₹১৪,৯৯৫, কিন্তু অ্যামাজন ইন্ডিয়া, ফ্লিপকার্ট ইত্যাদিতে ডিসকাউন্টে এটি সাধারণত ₹৯,৯৯৯ থেকে ₹১১,৯৯৯-এর মধ্যে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের অফিসিয়াল দাম (৳২৪,৯৯০ ≈ ₹২৩,০০০ আনুমানিক) ভারতে প্রচলিত দামের চেয়ে প্রায় দুই গুণ বেশি। এই পার্থক্যের প্রধান কারণ বাংলাদেশে উচ্চ আমদানি শুল্ক ও কর।
৪. এই সাইজের (৪.১L) মধ্যে কোন ব্র্যান্ডের এয়ারফ্রায়ার ভালো? ফিলিপস ছাড়া বিকল্প কী?
একই রেঞ্জে (৳২০,০০০ – ৳২৫,০০০) ফিলিপস HD9252 এর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হল প্রেস্টিজ প্রো ডিজিটাল এয়ারফ্রায়ার (৪.০L) (দাম: ৳১৮,০০০ – ৳২২,০০০) এবং ম্যাজিকাল বায়ালেক্সের বড় সাইজের মডেল (দাম: ৳১৬,০০০ – ৳২০,০০০)। প্রেস্টিজে প্রিসেট মোড বেশি, ম্যাজিকাল দামে সস্তা। তবে, রান্নার ফলাফলের ধারাবাহিকতা, বিল্ড কোয়ালিটি এবং ব্র্যান্ড ট্রাস্টের বিচারে ফিলিপসকে সাধারণত এগিয়ে রাখা হয়।
৫. এয়ারফ্রায়ার কি বিদ্যুৎ বেশি খরচ করে?
হ্যাঁ, ফিলিপস HD9252 একটি ১৪০০ ওয়াটের ডিভাইস। এটি একটি প্রচলিত ইলেকট্রিক ওভেন বা টোস্টার ওভেনের মতোই শক্তি খরচ করে। তবে, এয়ারফ্রায়ার রান্নার সময় অনেক কম (সাধারণত ১০-২০ মিনিট) হওয়ায় এবং প্রিহিটিংয়ের দরকার না হওয়ায়, সামগ্রিকভাবে বিদ্যুৎ খরচ ডিপ ফ্রাইং বা বড় ওভেনের চেয়ে কম হতে পারে। একটি ২০ মিনিটের সেশনে প্রায় ০.৪৬ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করতে পারে (গণনা: 1400W / 1000 = 1.4kW * 0.33 hr ≈ 0.462 kWh)।
৬. এয়ারফ্রায়ার কেনার আগে আর কী কী দেখব?
- ক্ষমতা (লিটার): পরিবারের সদস্য সংখ্যা অনুযায়ী বাস্কেট সাইজ চয়েস করুন (৩-৪ জনের জন্য ৪L উপযুক্ত)।
- ওয়াটেজ: উচ্চ ওয়াটেজ (1300W+) দ্রুত ও সমানভাবে রান্না করে।
- কন্ট্রোল টাইপ (মেকানিক্যাল/ডিজিটাল): ডিজিটাল কন্ট্রোল বেশি সুনির্দিষ্ট।
- প্রিসেট মেনু: কতগুলো প্রি-প্রোগ্রামড অপশন আছে?
- পরিষ্কার করা: বাস্কেট/প্যান ডিশওয়াশার-সেফ কিনা?
- গ্যারান্টি: বাংলাদেশে অফিসিয়াল গ্যারান্টি (সাধারণত ২ বছর) কভারেজ নিশ্চিত করুন।
- ব্র্যান্ড ও পরিষেবা: স্থানীয় সার্ভিস সেন্টারের সুবিধা আছে কিনা দেখুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।