স্পোর্টস ডেস্ক: বৃহস্পতিবার অ্যান্টিগার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে এক বিভীষিকাময় ব্যাটিং নিদর্শন দেখাল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম দিন সফরকারী বাংলাদেশ ছয় ব্যাটার শূন্য রানে থামেন। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ব্যাটারদের এমন পারফরমেন্সে হতাশ বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কাছে এমন ব্যাটিংয়ের কোনও ব্যাখা নেই।
নিজেদের সর্বশেষ টেস্টে শ্রীলংকার মুখোমুখি হয়েছিলো বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে ঐ টেস্টের দুই ইনিংসের শুরুতে ধস নেমেছিলো টাইগারদের ইনিংসে। প্রথম ইনিংসে ২৪ রানে ৫ উইকেট ও দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়েছিলো টাইগাররা। দু’বারই দলকে লড়াইয়ে ফেরান মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস।
একই চিত্র কাল দেখা গেল অ্যান্টিগার স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ-বাংলাদেশ প্রথম টেস্টে। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৬ রানে ৩, ৪৫ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। দশ ব্যাটারের মধ্যে ছয়জনই শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। দলের ব্যাটারদের পারফরমেন্সের কোন ব্যাখা খুঁজে পেলেন না তৃতীয় মেয়াদে অধিনায়ক হওয়া সাকিব।
প্রথম দিনের খেলা শেষে সাকিব বলেন, ‘এই পারফরমেন্সের কোনো ব্যাখ্যা দেখি না। আমার কাছে কোন ব্যাখ্যা নেই। আমি জানি না, অন্য কারো কাছে আছে কি-না। সাধারণত যেটা হয়, এখানে কোচ-অধিনায়কের কাজটা সহজ। ধরুন কেউ পারফর্ম করলো না, তাকে বাদ দিয়ে দিলাম।
তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে সহজ কাজ কোচ, অধিনায়ক ও নির্বাচকদের। তুমি পারফর্ম করছো না, বাদ দিয়ে দিলাম। আসলে ব্যাটারদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের কাজটা তাদেরই করতে হবে। কেউ এসে তাদের মুখে তুলে খাইয়ে দিবে না। আশা করি সেকেন্ড ইনিংসে এমনভাবে ঘুরে দাঁড়াবে যেন তারা এই ব্যর্থতা থেকে রিকভার করতে পারে। সেই চ্যালেঞ্জটা থাকবে।’
ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও, বোলারদের কারনে প্রথম দিন খুশি সাকিব। প্রথম ১৫ ওভারে মাত্র ১৫ রান তুলতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা। আর প্রথম দিন শেষে ৪৮ ওভার ব্যাট করে ২ উইকেটে ৯৫ রান করেছে ক্যারিবীয়রা। রান রেট ২এর নীচে।
বোলারদের পারফরমেন্স নিয়ে সাকিব বলেন, ‘আজকের দিনে আমি খুবই খুশি। কিছু হাফ চান্স ছিল। ওগুলো নিলে পেসারদের জন্য দারুণ একটা দিন হতো। যেটা আমরা বেশ কিছুদিন ধরেই পাইনি। সব মিলিয়ে পেস বিভাগ খুবই ভালো বল করেছে। জুটিতে ভালো বল করেছে। মুস্তাফিজ দারুণ ছিল। নতুন বলে খালেদও অনেক ভালো বল করেছে। এবাদতও সবসময় ভালো বল করছে টেস্টে। তিনজনই ভালো করেছে। পুরো দল এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে এবং চেষ্টা করছে ভালো বোলিং করতে, যেন ব্যাটারদের কাছ থেকে সমর্থন পেতে পারি, যেটা আমরা পাইনি।’
সাকিব আরও বলেন, ‘আমি বলবো যে, পেসাররা একটু দুর্ভাগা ছিলো। আরও দুটি উইকেট পেলে হয়তো আমরা ভালো অবস্থানে থাকতাম। যদি ১০০ রানে ৪ উইকেট থাকতো তবে কাল (শুক্রবার) আরও ১০০ রানের মধ্যে ওদের অলআউট করলে আমরা ম্যাচে থাকতাম। এখনো যে হবে না তা বলছি না। তাদের কয়েকজন ব্যাটসম্যান রয়েছে, কালকে এসেও আমাদের একই কাজ করতে হবে। আমাদের বোলারদের চ্যালেঞ্জ হবে কেননা কাল যেহেতু উইকেটটা ভালো হবে, আমরা কতটা গোছালোভাবে বল করতে পারি।’
প্রথম দিন শেষে ম্যাচের পরিকল্পনা নিয়ে সাকিব বলেন, ‘দলের দুইটা অপশন আছে। আমরা ছেড়ে দিয়ে খেললাম, ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের মতো যত ইচ্ছা রান করলো। আর আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে শেষ হয়ে গেলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেকটা অপশন হচ্ছে, একশ-দেড়শ-দুইশ, এমনকি আড়াইশ রানের মধ্যে তাদের যদি প্রথম ইনিংসে অলআউট করতে পারি। তখন আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ব্যাটিং করি, তাহলে শেষ ইনিংসে কি হতে পারে তা আমরা জানি না। প্রতিদিনই নতুন, সেই একটা সুযোগ আমাদের কাছে আছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।