চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: বাংলাদেশের ৫০ বছর ও কন্ঠনীড়ের ৭ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাচিক শিল্পচর্চা কেন্দ্র কণ্ঠনীড় আয়োজন করে ‘সুবর্ণে-৭।
১৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে সম্মাননা জানানো হয় একজন বীর মুক্তিযাদ্ধাকে। ছিল একক, দ্বৈত ও বৃন্দ আবৃত্তি-কথামালা-কবিতাপাঠ-সঙ্গীত পরিবেশনা।
এতে অংশগ্রহণ করেন কণ্ঠনীড়সহ আমন্ত্রিত বিভিন্ন আবৃত্তি সংগঠনের শিল্পীরা। দীপান্বিতা চৌধুরী, তাজুল ইসলাম ও তানিয়া নাসরিনের সঞ্চালনায়
সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রিয়ন্তি বড়ুয়া।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে কথামালায় অংশ নেন কবি ও সাংবাদিক ওমর কায়সার, কবি কামরুল হাসান বাদল, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী দেবাশীষ রুদ্র, সম্মিলিত আবৃত্তি জোট চট্টগ্রামের সভাপতি আবৃত্তিশিল্পী হাসান জাহাঙ্গীর ও সম্মিলিত আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী মাহবুবুর রহমান মাহফুজ। আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী বিশ্বজিৎ পাল ও আবৃত্তিশিল্পী শামীমা শিলা।
কবি ওমর কায়সার বলেন, বিজয়ের পঞ্চাশ বছর একদিকে যেমন ভীষণ আনন্দের, অন্যদিকে বিষাদেরও। তিনি বলেন, আমরা একে একে হারিয়ে ফেলছি আমাদের সুর্যসন্তানদের। আমরা অনেককিছুই পাবো কিন্তু শত চেষ্ঠা করেও একজন মুক্তিযোদ্ধা পাবনা। বেগম মুশতারী শফীকে আজ কণ্ঠনীড় যে সম্মান জানালো তাতে তারাই অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেলো তাদের নিজেদেরই।
কবি কামরুল হাসান বাদল ছোটদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদএর হাতেই আগামীর দেশ। তখন হয়ত মুক্তিযোদ্ধারা থাকবেনা, আমরা থাকবও না। তখন এই দেশের যে মূলমন্ত্র তা মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতে হবে তোমাদেরই।
মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা প্রদান করা হয় শহীদ জায়া-শহীদ ভগ্নী, লেখক ও সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা বেগম মুশতারী শফীকে। তিনি অসুস্থ থাকায় তাঁর পক্ষে এ সম্মাননা গ্রহণ করেন তাঁর পুত্র তাহসীন শফী। অনুভূতি প্রকাশ করতে যেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা বাবাকে হারিয়েছি। আমার মা যুদ্ধ করেছেন, নিরন্তর সংগ্রাম করে আমাদের মানুষ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশের সকল সংকটকালেও সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন।
তিনি এ সম্মাননার জন্য মারের পক্ষ হতে কণ্ঠনীড়কে কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, আমার মা এখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে শয্যাশায়ী। তিনি যেন রোগমুক্ত হয়ে সকলের মাঝে ফিরে আসেন এ জন্য দোয়া চেয়েছেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে দীপান্বিতা চৌধুরীর গ্রন্থণা ও নির্দেশনায় ‘মুজিব, মহাবিজয়ের মহানায়ক’ শীর্ষক বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন কণ্ঠনীড়ের শিশুবিভাগের শিল্পীরা।
এতে অংশ নেয় আহনাফ আজমাইন, সমৃদ্ব বড়ুয়া দীপ্র, আতিফাহ আরুব, অনামিকা আচার্য, শারিয়া চৌধুরী, জয় বড়ুয়া, শ্রীযু দে নিলয়, রাইফাহ ওয়াজিনাহ, অরণ্য বড়ুয়া, ও নির্ঝর তালুকদার। দ্বৈত আবৃত্তি দীপান্বিতা চৌধুরী ও সমৃদ্ব বড়ুয়া দীপ্র, উইদাদ ইমাম ও মুনতাকা ইমাম, আল-আমীন ও অর্পিতা পাল। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন কণ্ঠনীড়ের নাহিদা রওশন, তাজুল ইসলাম, ডাঃ জয়া রায় চৌধুরী ও তানিয়া নাসরিন।
আমন্ত্রিত আবৃত্তি সংগঠন হিসেবে আবৃত্তি করেন প্রমা আবৃত্তি সংগঠননের আফসানা ফাইরুজ, বোধন আবৃত্তি পরিষদের সেঁউতি মজুমদার ও অংকিতা ভট্টাচার্য, নরেন আবৃত্তি একাডেমীর পৃথা পারমিতা, নির্মাণ আবৃত্তি অঙ্গনের পুস্পা সর্ববিদ্যা, সুচয়ন ললিতকলা কেন্দ্রের অর্পণা দে, চট্টগ্রাম আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রের মুনমুন বড়ুয়া, উত্তরায়ণ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মৈত্রী সাহা এবং দর্পণ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংঘের মৃদুল ইসলাম।
অন্নদাশংকর রায়ের ‘বঙ্গবন্ধু’ কবিতার সমবেত আবৃত্তির মাধ্যমে শেষ হয় এ অনুষ্ঠান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।