জুমবাংলা ডেস্ক: করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীদেরকে সাহসের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা। এখন করোনা সংক্রমণের ঝুকি এড়াতে উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে না গিয়ে স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা নিচ্ছেন অধিকাংশ রোগী।
জেলার ৯টি উপজেলায় মোট ২০৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এর মধ্যে সদরে ৩২, কচুয়ায় ১২, মোরেলগঞ্জে ৫১, শরণখোলায় ১৯, মোংলায় ১৩, রামপালে ২৪, ফকিরহাটে ১৬, চিতলমারিতে ১৯ এবং মোল্লাহাটে ১৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এ ক্লিনিকগুলো বেশিরভাগই প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত। প্রতি ক্লিনিকে নিরাপত্তা সামগ্রী পিপিই মাস্ক, সেনিটাইজার, হ্যান্ডগ্লোভস দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশ মতে সপ্তাহে ৬ দিন ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার নিয়মিত সেবা দিচ্ছেন রোগীদের। এছাড়া একজন স্বাস্থ্য সহকারী ও মাঠ পর্যায়ে কাজের জন্য নিযুক্ত ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার অ্যাসিসটেন্ট সপ্তাহে তিনদিন করে ক্লিনিক গুলোতে সেবা দিচ্ছেন।
বাগেরহাট সদর উপজেলার মুক্ষাইট কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মিজানুর রহমান বাসসকে বলেন, করোনা সংক্রমণের আশংকার মাঝেও জীবনের ঝুকি নিয়ে তৃণমূল জনসাধারণকে নিয়মিত সেবা প্রদান করছি। প্রায়ই কিছু রোগী আসেন যাদের সমস্যার সাথে করোনা সংক্রমণের উপসর্গের অনেকটা মিল থাকে। যার ফলে করোনা আক্রান্ত রোগী হলেও তা নির্ধারণ করা আমাদের পক্ষে কঠিন হয়। ক্লিনিকে আসা রোগীদের কাছ থেকে তাদের শারিরীক সমস্যার তথ্য জেনে সিএমইডি এজেন্ট অ্যাপস ব্যাবহার করে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা আছে কিনা তা নির্ধারণ করি। তাদেরকে সচেতনতামুলক পরামর্শ প্রদান করে থাকি। সুরক্ষা সামগ্রী ব্যাবহারের মাধ্যমে যতটা সম্ভব নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে সেবা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এখন আগের থেকে রোগীও বৃদ্ধি পেয়েছে।
শরণখোলা উপজেলার চৌমোহনা কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার তুষার মুন্সী বলেন, করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। সাধারণ মৌসুমি জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যাথা, পেট ব্যাথা, মাথা ব্যাথা, বমি ও পাতলা পায়খানা এ ধরণের সমস্যা নিয়ে রোগীরা আসেন আমাদের কাছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি তাদের সেবা দেওয়ার। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও আমাদের ক্লিনিকে রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ক্লিনিকের সেবা সম্পর্কে একাধিক রোগী জানান, কমিউনিটি ক্লিনিক না থাকলে স্বাস্থ্যসেবা পেতে তাদের অনেক দূরে যেতে হত, যাতে সময় ও অর্থ ব্যয় হত এবং দুর্ভোগ বাড়তো।
বাগেরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রদীপ কুমার বকসী বাসসকে বলেন, উপজেলার ৩২টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিকে করোনা সংক্রমণের সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও উপজেলা পরিষদ থেকে প্রাপ্ত পিপিই, মাস্ক, হ্যান্ডগ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রদান করা হয়েছে। শরীর থেকে স্যাম্পল গ্রহণের উপর ১ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে সিএইচসিপিদের। করোনাভাইরাসের এই সংকটময় মুহুর্তে সদর উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো নিরবিচ্ছিন্নভাবে তৃণমুল মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে। সিএইচসিপিদের অগ্রণীয় সাহসী ভুমিকার জন্য যা সম্ভব হচ্ছে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, করোনাকালে কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে প্রতিমাসে ১০ থেকে ১২ হাজার রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সিএইচসিপিদের সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে। আমরাও চেষ্টা করছি কমিউনিটি ক্লিনিকের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।