জুমবাংলা ডেস্ক : মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দড়গ্রাম ইউনিয়নের সাফুল্লি গ্রামের বিল্লাল হোসেন সেই ৫২ মণ ওজনের ষাঁড় সিন্দবাদকে অবেশেষে বিক্রি করা হয়েছে। গত বছর কোরবানির ঈদের সময় রাজধানীর গাবতলীর হাটে সিন্দবাদকে এনেও বিক্রি করতে ব্যর্থ হন। ওজনের কারনে বিক্রি করতে না পেরে সিন্দবাদকে নিয়ে যান আপন ঠিকানায়।
এর আগে ২০১৮ সালে কোরবানির ঈদের সময় সিন্দবাদকে গাবতলীর হাটে দেখার পর ছবিসহ খবর সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে প্রচার করা হয়। সে সময় ৫২ মন ওজনের সিন্দবাদ ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। যারাই হাটে গেছেন তারা একবার সিন্দবাদকে কাছে থেকে দেখেননি এমন কেউই নেই।
পর পর দু’বার রাজধানীতে কোরবানির হাটে এনে বিক্রি করতে না পেরে এবার এলাকাতেই বিক্রির সিন্ধান্ত নেন বিল্লাল হোসেন। তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে বিক্রির ব্যাপারে আলোচনা চলছিল। অবশেষে সাটুরিয়াতেই জবাই করে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়।
গতকাল শুক্রবার সকালে দড়গ্রাম ইউনিয়নের সাফুল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ৫২ মন ওজনের সিন্দবাদকে জবাই করা হয়। গোশত ১০৫ ভাগ করে বিক্রি করা হয়েছে। প্রতিটি ভাগের দাম ছিল ১০ হাজার টাকা। ক্রেতাদের জন্য ১২ হাজার টাকায় খাসি কিনে ভোরে জবাই করে রান্না করা হয় কাচ্চি বিরিয়ানি। সিন্দবাদের গোশত যারা কিনেছেন তাদেরকে কাচ্চি বিরিয়িানি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়েছে।
বিল্লাল জানান, কৃষি কাজ ও ধানের ব্যবসার পাশাপাশি তিনি দীর্ঘদিন ধরে গরু পালন করছেন। তবে সিন্দবাদই তার সেরা গরু। সিন্দবাদের জন্য প্রচুর শ্রম ও টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে। ২০১৮ সালের কোরবানির ঈদের সময় রাজধানীর গাবতলী হাটে নিয়ে এসেছিলেন। তখন ওজন ছিল ২৭ মনের কাছাকাছি। দাম সাড়ে ১২ লাখ টাকা বলার পরও বিক্রি না করে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান।
গত বছর ফের সিন্দবাদকে গাবতলীর হাটে নিয়ে যান বিল্লাল। এক বছরে ওজন বেড়ে ৫২ মন হয়। কিন্তু উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় সিন্দবাদ বিক্রি হয়নি। একজন মাত্র ক্রেতা ১০ লাখ টাকার নিচে দাম চাইতে বলেছিলেন। সিন্দবাদকে যত্ন করার জন্য সাড়ে ১২ হাজার টাকা বেতনে একজন রাখাল রেখেছিলেন বিল্লাল। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিন্দবাদের পেছনে ১৯ থেকে ২০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। একেবারে দেশীয় পদ্ধতিতে পালন করা সিন্দবাদের বয়স গতকালই ৫ বছর পূর্ণ হয়।
রুটিন অনুযায়ী তার দীর্ঘ একটি খাবার তালিকা রয়েছে। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ছিল ১০ কেজি ভুসি, দুই কেজি মালটা, দুই কেজি আপেল, ছয় হালি কলা, এক কেজি গুড়, নালি ৫০০ গ্রাম, ভুট্টার গুড়া দুই কেজি, ছোলার গুড়া এক কেজি, মিষ্টি কুমড়া, পাঁচ হালি লেবু এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ঘাস। কিন্তু গত দুই বছর কোরবানির ঈদে বিক্রি না না হওয়ায় লোকসানে পড়ে খাবার কমিয়ে দেওয়া হয়।
বিল্লালের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম জানান, প্রায় আড়াই বছর আগে পার্শ্ববর্তী গোপালপুর থেকে আড়াই বছর বয়সী হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি তিন লাখ ৩০ হাজার টাকায় কেনা হয়। পরে পরিবারের সবাই মিলে গরুটির নাম রাখে সিন্দবাদ। বিশালাকৃতির গরুটি দেখার জন্য আশেপাশের এলাকার অনেক লোক ভিড় করত বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে। কেউ ছবি তুলছে, কেউ ভিডিও করছে গরুটির।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের ভেটেনারি সার্জন ডা. মো. সেলিম জাহান বলেন, সিন্দবাদ ষাঁড়টি হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের। গত বছর কোরনবানির ঈদের সময় সিন্দবাদের দৈর্ঘ্য ছিল ৯৬ ইঞ্চি, উচ্চতা ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি এবং ওজন প্রায় ৫২ মন। তাদের ধারণা, সিন্দবাদই ছিল দেশে ৫২ মন ওজনের সবচেয়ে বড় ষাঁড়। সূত্র : ইনকিলাব
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।