মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে ১৭ বছর ধরে নির্ভরতার একটি স্তম্ভ। তার মুন্সিয়ানায় বাংলাদেশ পেয়েছে একাধিক অবিস্মরণীয় বিজয়। আজ টি-টোয়েন্টি থেকে তিনি বিদায় নিচ্ছেন।
মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের পঞ্চপাণ্ডব অধ্যায় অতীত হয়ে যাচ্ছে। মাশরাফি বিন মুর্তজা, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসানের পর বিদায় নিচ্ছেন রিয়াদও।
শনিবার ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। এটাই হবে মাহমুদউল্লাহর দীর্ঘ ১৭ বছরের ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি হবে হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৭টায় শুরু হবে ম্যাচটি। বিদায়ের দিনটাকে রঙিন করতে হলে এই ম্যাচে ভালো কিছু করতে হবে মাহমুদউল্লাহকে।
এর আগে, ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। হারারেতে ওই টেস্টে ১৫০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে বাংলাদেশ দলকে উপহার দিয়েছিলেন এক দারুণ জয়। হারারেতে বাংলাদেশের সেই টেস্ট জয় আজও স্মরণীয় হয়ে আছে। ভারতের বিপক্ষে জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করতে পারলে মাহমুদউল্লাহর বিদায়টা বর্ণিল হবে। যদিও বাস্তবতা ভিন্ন। টাইগার এ মুহূর্তে মোটেও ছন্দে নেই। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাজেভাবে হেরে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যটিং ব্যর্থতায় বড় ব্যবধানে হেরে সিরিজ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। তবু টি-টোয়েন্টিতে নিজের শেষ ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখবেন, মাহমুদউল্লাহর ভক্তদের এমনটাই প্রত্যাশা।
টি-টোয়েন্টির বিদায়ী ম্যাচে মাহমুদউল্লাহকে রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ম্যাচের আগে বা পরে গার্ড অব অনার এবং ক্রেস্ট দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। বিসিবির একজন কর্মকর্তা জানান, ভারতেই মাহমুদউল্লাহর জন্য বিদায়ী ক্রেস্ট বানানো হয়েছে। তবে এসবের চেয়েও বড় সম্মান দেওয়া হবে ম্যাচটি জিততে পারলে। মাহমুদউল্লাহ কি নিজের শেষ ম্যাচটি বর্ণিল করে যেতে পারবেন?
টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহ
জাতীয় দলে মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। এই সময়ে মাহমুদউল্লাহ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ১৪০টি। ভারতের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেললে সেটি দাঁড়াবে ১৪১টিতে। বাংলাদেশের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি খেলার রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন তিনি।
১৪০টি ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ ১১৭.৫১ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ২ হাজার ৪৩৬। এই ফরম্যাটে তার সর্বোচ্চ রান ৬৪। ক্রিকেটের সংক্ষীপ্ত সংস্করণে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মাহমুদউল্লাহ। সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৫৫১ রান করেছেন সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে অবসর নেওয়া সাকিব।
ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও দেশের জার্সিতে ভূমিকা রেখেছেন এই অলরাউন্ডার। বল হাতে হাত ঘুরিয়ে এই ফরম্যাটে উইকেট নিয়েছেন ৪০টি। সেরা বোলিং ফিগার ১০ রান দিয়ে তিন উইকেট। ফিল্ডার হিসেবেও বাকিদের চেয়ে এগিয়ে সাইলেন্ট কিলার-খ্যাত এই অলরাউন্ডার। বিশ ওভারের ম্যাচে বাংলাদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫০টি ক্যাচ লুফে নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ড মাহমুদউল্লাহর দখলে। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে তার অধিনায়কত্বে মোট ৪৩টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি জয়ও তার। অধিনায়ক হিসেবে ১৬টি ম্যাচ জিতেছেন মাহমুদউল্লাহ। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও লাল-সবুজের নেতৃত্ব দেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।