মোঃ নুরুজ্জামান, মানিকগঞ্জ : জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জজকোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম সম্পর্কে অশালীন কথার প্রতিবাদ করায় সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জজকোর্টের আইনজীবী সাদিকুল ইসলাম সোহাকে জড়িয়ে গ্লোবাল টিভি নামের একটি অনলাইন টিভি চ্যানেলে মানহানিকর ও বানোয়াট সংবাদ করা হয়েছে।
ওই সংবাদ প্রকাশের পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাবেক এই ছাত্রনেতা সাদিকুল ইসলাম সোহা। তিনি বলেন, ওই অনলাইন টিভির রিপোর্টার আনিসুর রহমান ওরফে সাব্বির তার পেশাগত কারণে নিয়মিত মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকা যাওয়া আসা করেন। মাঝে মাঝেই তার সাথে বহিরাগতরা এসে তার বাসায় থাকেন। গত ২১ এপ্রিল মানিকগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম দাশড়া এলাকায় এলজিইডি পুর্বপাশে ওই রিপোর্টারের বাসায় ঢাকা থেকে বহিরাগত লোক এসেছেন-এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাসায় যান সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য সুভাষ চন্দ্র সরকার, পৌরসভার স্বাস্থ্য পরিদর্শক মীর জসীম উদ্দীন। প্রতিবেশী হিসেবে, খবর পেয়ে তিনিও জান সেখানে।
ঢাকা থেকে কেউ এসেছেন কিনা জিজ্ঞাসা করতেই রিপোর্টার আনিসুর রহমান ওরফে সাব্বির অশোভন ও বিরক্ত সহকারে বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং বিষয়টি ভিন্নখাতে নিতে মানিকগঞ্জ জজকোর্টের পিপি এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালামকে নাম ধরে নানাধরনের অশালীন কথা বলতে থাকে। পিপি সালাম রাস্তা ও ড্রেনের কাজ করে না কেন? পিপি সালাম এলাকায় কিছুই করে না। পিপি সালামের কারণে খুব সমস্যা হচ্ছে-ইত্যাদি। অপ্রাসঙ্গীকভাবে প্রবীণ নেতা সম্পর্কে এমন কথার প্রতিবাদ করেন সাদিকুল ইসলাম সোহা। উপজেলা নির্বাহী অফিসারও তার অসৌজন্যমূলক আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, আনিসুর রহমান সাব্বির সরকার এবং তার সম্মানহানি করতেই তাকে জড়িয়ে এই ধরণের মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ তৈরী করেছেন। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করে ওই রিপোর্টার গোটা সাংবাদিক জগতের সুনাম নষ্ট করেছে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ওই রিপোর্টার তার সংবাদে যেসব ব্যক্তির বক্তব্য দেখিয়েছেন তারা কেউ মানিকগঞ্জবাসী নন। রিপোর্টার ঢাকায় বসে তার শেখানো বক্তব্য তাদের দিয়ে বলিয়েছেন। যে দুয়েকজন ব্যক্তি মানিকগঞ্জের ছিলেন, তারা তার সম্পর্কে কিছুই বলেননি। ভিন্ন ঘটনার বক্তব্য কাটিং করে ওই সংবাদে প্রচার করা হয়েছে।যা ডিজিটিাল নিরাপত্তা আইনের মারাত্নক অপরাধ।
তিনি মনে করেন, ওই রিপোর্টার এবং তার ক্যামেরা পারসন যেভাবে ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জে আসা যাওয়া করেন তাতে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে মানিকগঞ্জবাসী।
তিনি মনে করেন, এই চরিত্রের একজন ব্যক্তি সাংবাদিকতার মতো মহান পেশায় যুক্ত থাকতে পারে না। তার এহেন চরিত্রের কারণে অতীতের সকল প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে বের করে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি আশা করেন গ্লোবাল টিভি কর্তৃপক্ষও তাকে অবিলম্বে বরখাস্ত করে প্রতিষ্ঠানটি তার সুনাম রক্ষা করবেন।
তিনি আরও বলেন, ইতিপূর্বে ওই রিপোর্টার আনিসুর রহমান সাব্বির তার বাসায় ভাড়া থাকতেন। মোবাইল চুরির কারণে তাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। সে, ডেসটিনি নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানিকগঞ্জের অনেক মানুষের টাকা লুট করে দীর্ঘ দিন পলাতক ছিল। এছাড়া, নারীদের ছবি অশ্লিলভাবে প্রচার করে এলাকা থেকে বিতারিত ছিল হয়ে ছিল।
এব্যাপারে আনিসুর রহমান সাব্বির বলেন, তিনি একজন গনমাধ্যম কর্মী। তিনি তার ক্যামেরা পারসনসহ মাঝে মাঝে নিজ বাড়িতে আসেন। কিন্তু সোহা তাদেরকে করোনায় আক্রান্ত বলে এলাকায় প্রচার করে। সেই কারণে তিনি এবং তার ক্যামেরাপারসন এলাকায় নানাজনের প্রশ্নবানে জর্জরিত করে। এছাড়াও সোহার বিরুদ্ধে নানাধরণের অভিযোগ আছে, যা তিনি সংবাদে প্রকাশ করেছেন।
জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সাদিকুল ইসলাম সোহা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। বর্তমানে জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য। রাজীনীতির পাশাপাশি তিনি আইন পেশায় যুক্ত আছেন। ছাত্রজীবনে তিনি রোভার স্কাউটের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বর্তমানে জেলা রোভার স্কাউটস’র আরএসএল প্রতিনিধি হিসেবে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জনকল্যানমূলক কাজে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তাছাড়াও করোনা ভাইরাসের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে অসহায় ও কর্মহীন মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী প্রদান করছেন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক ও বিভিন্ন লিফলেট বিতরণসহ সামাজিক দুরত্ব ও শারীরিক দুরত্ব রক্ষার ব্যাপারে সচেতনতামূলক কাজেও অংশ নিচ্ছেন। যা গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, সাদিকুল ইসলাম সোহা একজন ত্যাগী, সৎ নেতা। তিনি মানবকল্যাণে এবং সমাজের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার মত একজন নিবেদিত নেতাকে নিয়ে এই ধরণের বিভ্রান্তিকর সংবাদ অত্যন্ত দু:খজনক। তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, আনিসুর রহমান সাব্বির জজকোর্টের পিপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সম্পর্কে অশালীন কথা বলায় সাদিকুল ইসলাম সোহা তার প্রতিবাদ জানায়। এই ঘটনায় তিনি নিজেও বিব্রত হয়েছেন বলে জানান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।