আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে অন্তত ২৫ হাজার মৃত ব্যক্তির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে তার হাতে। দীর্ঘদিন ধরেই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের লাশ সৎকার করেছেন তিনি। নিরলস এই সেবার জন্য এবার ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব পদ্মশ্রী পুরস্কার পাচ্ছেন ৮২ বছর বয়সী মোহাম্মদ শরিফ।
আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের ফৈজাবাদের পরিচিত মুখ শরিফ। সকলের শরিফ চাচা তিনি। পেশায় সাইকেল মেকানিক হলেও নেশা সৎকার। ১৯৯২ সালে ২৫ বছরের তরতাজা ছেলে মারা যাওয়া পর থেকে এ কাজ শুরু করেন মোহাম্মদ শরিফ।
গণমাধ্যমকে শরিফ বলেন, ২৭ বছর আগে ছেলে মোহাম্মদ রইস খান নিখোঁজ হয়। সুলতানপুরে গিয়েছিল কেমিস্টের চাকরি নিয়ে। এক মাস পরে ওর পচাগলা লাশ উদ্ধার হয়। ওকে খুন করা হয়েছিল। ওর লাশটা দেখে স্থির করি, মানুষকে মৃত্যুর পরে এভাবে অসম্মানিত হতে দেব না।
হিন্দু-মুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই মোহাম্মদ শরিফের মনে। তিনি বলেন, নিজ হাতে অন্তত তিন হাজার হিন্দুকে দাহ করেছেন নিয়ম মেনে। পুলিশ স্টেশন হাসপাতাল সর্বত্র যাতায়াত শরিফের। মৃত্যুর ৭২ ঘণ্টা পরে লাশ দাবি করতে কেউ না এলে ডাক পড়ে শরিফের। তিনি গিয়ে লাশগুলো নিয়ে যান যথাস্থানে।
লাশ কবর দেয়ার জন্য খরচ পাঁচ হাজার রুপি। দাহ করতেও লাগে অন্তত সাড়ে তিন হাজার রুপি। সেই টাকা জোগাড় হয় কোথা থেকে? শরিফ জানান, কবরস্থানে হোক বা শ্মশানে, তা অজস্র বন্ধু রয়েছে। কেউ তার থেকে টাকা তো চাননি, উপরন্তু সাহায্য করেন নানাভাবে।
শুধু মৃত মানুষের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া নয়, জীবন বাঁচানোর নজিরও রয়েছে শরিফের। ফৈজাবাদ-লখনউয়ে জিপ উল্টে একই পরিবারের কয়েকজন মারা যায়। একমাত্র জীবিত সদস্যকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এমন অনন্য মানবিকতার পুরস্কার পাচ্ছেন শরিফ। খুশি তার আত্মীয় বন্ধুরাও।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।