জুমবাংলা ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) সফলভাবে লিভার প্রতিস্থাপন হয়েছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি মন্তেজার রহমান (৫৩) নামে এক রোগীর লিভার প্রতিস্থাপন করা হয় হাসপাতালটিতে। রোগীকে লিভার দান করেন তার বোন। বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্লান্ট বিভাগের তত্ত্ববাবধানে অপারেশনটি সম্পন্ন হয়।
আজ রোববার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ লিভার প্রতিস্থাপন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানান।
ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘লিভার দানকারী শামীমা আক্তারের দেহ থেকে সুস্থ লিভারের ৬০ শতাংশ কেটে ফেলা হয়। মন্তেজার রহমানের সিরোটিক লিভারের পুরোটাই কেটে বের করে ফেলা হয়। পরে শামীমা আক্তারের দেহ থেকে কেটে নেয়া সুস্থ লিভারের ৬০ শতাংশ জোড়া দেয়া হয়। লিভার দাতা শামীমা আক্তারের লিভারটি ধীরে ধীরে রি-জেনারেট করবে। এটি লিভারের একটি বিশেষত্ব। মন্তেজার রহমান লিভারের নন-বি, নন-সি জনিত ইন্ড স্টেজ লিভার ডিজিজে আক্রান্ত ছিলেন।’
মন্তেজার রহমানের লিভার প্রতিস্থাপনে কাজ করেছেন অধ্যাপক মো. মোহছেন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. বিধান চন্দ্র দাস, অধ্যাপক, ডা. আবদুল্লাহ মো. আবু আইয়ূব আনসারী, ডা. সারওয়ার আহমেদ সোবহান, অধ্যাপক মো. জুলফিকার রহমান খান, অধ্যাপক ডা. মো. নূর ই এলাহী, ডা. মোহাম্মদ সাইফ উদ্দীন ও ডা. আশীষ সাহা প্রমুখ।
শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর আনুমানিক ৮০ লাখ রোগী লিভার সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে অন্যতম ইন্ড স্টেজ লিভার ডিজিজ যা হলো ক্রনিক প্রদাহ জনিত লিভারের শেষ অবস্থা, যেখানে লিভার তার কার্যক্ষমতা হারায়। সাধারণত হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি ও ই ভাইরাস সংক্রমণ অথবা লিভারে অতিরিক্ত চর্বিজনিত প্রদাহ থেকে লিভার টিস্যুর পরিবর্তন শুরু হয়, ধীরে ধীরে স্বাভাবিক লিভার টিস্যুর পরিবর্তন হয়ে সিরোটিক লিভার টিস্যু তৈরি হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ বিভিন্ন হেপাটাইটিস ভাইরাসে আক্রান্ত। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, জনসংখ্যার মাত্র ৫-১০ শতাংশ এ ভাইরাসের জন্য টিকা নিয়েছে। যা অত্যন্ত অপ্রতুল। চিকিৎসকরা বলছেন, এর ফলে হেপাটাইটিস ভাইরাস সংক্রান্ত রোগব্যাধী বেড়েই চলেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতি বছর বাংলাদেশে আনুমানিক ৪ থেকে ৫ হাজার রোগীর লিভার ট্রন্সাপ্লান্টেশন চিকিৎসা প্রয়োজন। দেশে আগে লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বছর রোগীদের একটি বিশাল অংশ দেশের বাইরে চিকিত্সার জন্য চলে যাচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশসহ বহির্বিশ্বে লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন একটি ব্যয়বহুল চিকিত্সা। ফলে দেশের স্বল্প আয়ের ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এ চিকিত্সা সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।