জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানীতে রিকশা চালান কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার জহিরুল (৪৮)। বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) আগারগাঁও আইসিটি টাওয়ারের সামনের মুস্তাকিন কাবাব অ্যান্ড বিরিয়ানি হাউজে ৭০ টাকা দিয়ে দুই প্লেট ভাত, ডাল ও একটি রান্না ডিম খেয়েছেন। শুধু রান্না ডিমের জন্যই খরচ পড়েছে ৪০ টাকা, আগে যা ছিল ২০ টাকা। এছাড়া একটি ভাজা ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা করে।
আগের তুলনামূলক সস্তা ডিম খেতে এখন বাড়তি পয়সা গুনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। ডিমের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে দৈনন্দিন ব্যয় বেড়ে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন জহিরুলের মতো সীমিত আয়ের মানুষজন।
জহিরুল বলেন, রিকশা চালিয়ে যা আয় করি তা দিয়ে নিজের খরচ চালানোর পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে শুধু কিস্তির জন্য দেড় থেকে দুই হাজার টাকা বাড়িতে পাঠাই। এছাড়া স্কুলপড়ুয়া দুই ছেলেসহ স্ত্রীর খরচও দিতে হয় রিকশা চালিয়ে।
‘আগে ক্ষুধা লাগলে যেকোনো হোটেলে গিয়ে একটা ডিম, ডাল, ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়ে নিতাম। খরচও পড়তো না খুব বেশি। এখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর ডিমের দামে আগুন লেগেছে। আগের থেকে প্রতি ওয়াক্তে ২০ টাকা বেশি দিয়ে ডিম খেতে হচ্ছে।’
ডিমের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে মুস্তাকিন কাবাব অ্যান্ড বিরিয়ানি হাউজের কর্মচারী আব্দুল হাকিম বলেন, ভাজা ডিম ২৫ ও রান্না ডিম ৪০ টাকা করে বিক্রি করছি। ডিম কেনা পড়ছে ৫৫-৬০ টাকা হালি। এর সঙ্গে তেল, পেঁয়াজ ও মরিচ তো আছেই। আমরা কী করবো? সব জিনিসের দাম বাড়তি। ভাত বিক্রি করি, সেই ভাতের দামও বাড়তি।
ডিমের দাম বাড়তি হওয়ার কারণে ক্রেতাদের সঙ্গে ঝামেলা এড়াতে অনেকে ডিম বিক্রি বাদ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম বিসমিল্লাহ হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁর মালিক কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, হোটেল ব্যবসা চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে। সব কিছুরই দাম বেড়ে গেছে বলে ডিম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। বাড়তি দামে কিনতে হয়, কিন্তু কাস্টমাররা বাড়তি দাম দিতে গিয়ে ঝামেলা করেন।
হোটেল ক্যাশিয়ার মো. সাহাজান হোসেন বাবুল বলেন, প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়তি। কিন্তু কাস্টমারদের স্বার্থে আমরা এখনো দাম বাড়াইনি। আগের দাম রাখতে গিয়ে লোকসানের মধ্যে পড়ছি, কেনাবেচা কমছে।
‘আগে ৩০-৩৫ হাজার টাকা বিক্রি করতাম, এখন তা অর্ধেক হয়ে গেছে। আমার হোটেলে স্টাফই ৪২-৪৩ জন। তাদের নিয়ে কী করবো খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’
রাজধানীর একাধিক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, শুধু ডিমের দাম বাড়ার কারণেই হোটেলে কেনাবেচা আগের থেকে অনেক কমেছে। প্রতিদিনই লোকসান গুনতে হচ্ছে অনেককে। বিশেষ করে, ভর্তা-ভাতের রেস্তোরাঁগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। আগে এসব রেস্তোরাঁয় ২৫-৩০ হাজার টাকা কেনাবেচা হলেও এখন তা অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।