অনেকেই নানা কারণে ভাতের বদলে রুটি খেয়ে থাকেন। কেউ কেউ মনে করেন, ভাতের চেয়ে রুটিই বেশি উপকারী। কেউ আবার মনে করেন, ভাতই বেশি উপকারী। বিভিন্ন কারণে অনেকেই ভাত ও রুটির মধ্য কোনটি খাবেন, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। ভাত ও রুটির মধ্যে যে বিশেষ কোনো পার্থক্য রয়েছে তা নয়। ওজন কমাতে গেলে ফাইবার, প্রোটিন ও ফ্যাট জরুরি। রুটিতে বেশি পরিমাণে ফাইবার রয়েছে।
তবে যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে, তাহলে অবশ্যই রুটি খাবেন; কিন্তু যদি বদহজমের সমস্যা থাকে, তাহলে অবশ্য ভাত খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ; কিন্তু বাজারে যে সাদা চাল পাওয়া যায়, তা অত্যন্ত পলিশড, যে কারণে এটির বেশির ভাগ মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট নষ্ট হয়ে যায়। তাই ভাত খেতে হলে লাল চাল বেছে নেওয়াই ভালো।
যদি আপনি খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, তাহলে যে কোনোটিই খাওয়া যেতে পারে; কিন্তু ওজন কমানো, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি লক্ষ্য থাকলে রুটি খাওয়াই ভালো। অন্যদিকে ভাত খেলে আপনাকে তার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সঙ্গে ফাইবারের জন্য শাকসবজির পরিমাণ কিছুটা বাড়িয়ে দিতে হবে।
অপর দিকে আটায় থাকে গ্লুটেন নামের একটি উপাদান। এই উপাদান কিন্তু সবাই হজম করে উঠতে পারেন না। তাই অনেকে আটার তৈরি রুটি খেলেই পেট খারাপ, বদহজম, গ্যাস বা অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভোগেন। এ ধরনের সমস্যার ভুক্তভোগীরা অবশ্য রুটির বদলে ভাতকে প্রাধান্য দিতে পারেন। মনে রাখতে হবে, খাদ্যে দুটি পুষ্টিগুণ প্রায় কাছাকাছি।
তাই ভাত বা রুটি যা–ই খান না কেন, পুষ্টির ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে একদম সাদা ধবধবে চালের ভাত বা একই ধরনের আটার রুটি না খাওয়াই মঙ্গল; বরং সুস্থ থাকতে একটু লালচে চালের ভাত বা লাল আটার রুটি খাওয়াই ভালো। অন্য পাঁচজন মানুষ থেকে ডায়াবেটিসের রোগীদের খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই আলাদা।
রোগটি ধরা পড়লেই অনেকে ভাত ছেড়ে রুটি, পাউরুটি বা আটা-ময়দার তৈরি খাবারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন; কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, গম বা আটায় থাকা গ্লুটেন নামের উপাদান হজম হতে অনেক সময় নেয়। আর গ্লুটেন হজম হওয়া মানেই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে ইনসুলিনের ক্ষরণও বেড়ে যায়। ফলে টাইপ–২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।
যাঁদের পরিবারে ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছেন, চিকিৎসকেরা তাঁদের আটা বা গমের তৈরি খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরাও ভাত খেতে পারবেন। তবে অবশ্যই তা হতে হবে সঠিক পরিমাণে; এবং সাদা ভাত হলে চলবে না। বেছে নিতে হবে লাল চালের ভাত। রুটির ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই, খেতে হবে পরিমাণ মতো।
ভাতে ফ্যাট থাকে ০.১ গ্রাম এবং আটা বা রুটিতে ফ্যাট থাকে ০.৫ গ্রাম। ভাতে ফাইবার থাকে ০.১ গ্রাম, আটা বা রুটিতে থাকে ০.৭ গ্রাম। ভাতে আয়রন থাকে ০.২ মিলিগ্রাম, রুটিতে থাকে ১.৫ মিলিগ্রাম। একই পরিমাণ ভাতে ক্যালসিয়াম থাকে ৩ মিলিগ্রাম, আটা বা রুটিতে থাকে ১২ মিলিগ্রাম। ভাতে এনার্জি থাকে ১০০ ক্যালোরি এবং আটাতেও থাকে ১০০ ক্যালোরি। এনার্জির হিসাব অনুযায়ী ভাত ও রুটি মূলত একই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।