স্পোর্টস ডেস্ক: ঢাকায় আগামী ১৪ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হকি টুর্নামেন্ট। ছয় জাতির এ টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বড় দ্বৈরথ গ্রুপ পর্বেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ।
দেশের হকি খুব আশাব্যঞ্জক জায়গায় না থাকলেও হকির সমঝদার দর্শকের জন্য বড় সুখবর হলো, ঢাকা এসে পৌঁছেছে ভারত ও পাকিস্তান দল। এশিয়ার হকির দুই পরাশক্তি শিরোপার প্রতিশ্রুতি দিয়েই এসেছে এশিয়ান হকি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে। ১৭ ডিসেম্বর মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। ঢাকার মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি।
সর্বশেষ ২০১৭ সালে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকায় এসেছিল এশিয়া কাপ হকি উপলক্ষে। সেবারের শিরোপা জয়ী ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের ম্যাচটি হয়েছিল খুব একপেশে। সেই ম্যাচে ৪-০ গোলে হারা পাকিস্তান হয়েছিল তৃতীয়। চার বছর পর নিশ্চয়ই একটা বারুদে ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় থাকবে দর্শক। দুই দেশের হকির অবশ্য ঘাসের মাঠের সুদিন নেই। খেলা কৃত্রিম টার্ফের মাঠে যাওয়ার পর থেকে তাদের আধিপত্যও খর্ব হয়েছে বিশ্ব হকিতে। তবে সেই আধুনিকতার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে তারাও ঝুঁকেছে পাওয়ার হকির দিকে। যেমন পাকিস্তানের যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী রাজ তৈমুর খান ভাট্টি দিন পাঁচেক আগে হকি দলের সঙ্গে সভা করে বলেছেন, ‘আমরা পাঞ্জাবে হকির আধুনিক হাই পারফরম্যান্স সেন্টার তৈরি করব।’ এরপর ঢাকাগামী দলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, ‘এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দলের সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করছে পুরো জাতি।’
গতকাল রাতে ঢাকা এসেছেন পাকিস্তান দলের ২২ সদস্য। স্কোয়াডে যে দুজন গোলরক্ষক ছিলেন তাঁরা কেউই আসেননি। দুজনই জুনিয়র দলের হয়ে খেলতে গেছেন অন্য কোথাও। নতুন করে ভিসা নিয়ে আরো পাঁচজন আসবেন আগামী ১৫ তারিখ। তবে এই পাকিস্তান দলে তারুণ্যের মেলা। পাকিস্তান আসলে হকির নতুন দিন শুরু করতে চাইছেন আর সে জন্য ডাচ কোচ সেইগফিড আইকমানকে আনা হয়েছিল। তবে এখানে কোচের দায়িত্বে থাকবেন খাজা জুনাইদ।
পাকিস্তানের তুলনায় ভারতীয় দল খানিকটা অভিজ্ঞ, তবে জোর বেশি তারুণ্যের ওপর। তারা বেশ আগে থেকেই বিদেশি কোচ গ্রাহাম রেইডের দিকে ঝুঁকেছে। পাওয়ার হকিতে ধাতস্থ হতে তারা এই অস্ট্রেলিয়ানকে এনেছে। তাতে সাফল্য মিলেছে, অনেক দিন পর টোকিও অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জেতে ভারতীয় হকি দল। সেই দলকে আরো শানিত করতেই নাকি এখানে এসেছেন ভারতের এই অস্ট্রেলিয়ান কোচ, ‘নতুন খেলোয়াড়দের মধ্যে যাদের ভবিষ্যৎ আছে তাদের নিয়েই দল গড়া হয়েছে। আমরা একটা শক্তিশালী দল গড়তে চাই। তাই কিছু নতুন খেলোয়াড়কে সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’
টোকিও অলিম্পিকে ব্র্রোঞ্জ জেতার পর এই প্রথম ভারত কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলতে দেশের বাইরে পা রেখেছে। সেই দলের বড় তারকা ৩৩ বছর বয়সী গোলরক্ষক পি আর রাজেশ নেই ঢাকার দলে। তাঁর জায়গায় ভারত নিয়ে এসেছে দুই নতুন গোলরক্ষক কৃষাণ বাহাদুর পাঠক ও সুরজ কারকেরাকে। এই দল নিয়েও তাদের অস্ট্রেলিয়ান কোচ আশাবাদী, ‘দল নিয়ে একরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বিশ্বমানের ইভেন্ট। এখানে এশিয়ার দলগুলো খেলে তৈরি হওয়ার সুযোগ পাবে। এই সুযোগটা আমরাও নিয়েছি এবং এই টুর্নামেন্টকে আমরা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি।’
এশিয়ান চ্যম্পিয়নস ট্রফি হকি আসলেই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়াও উন্নতির সিঁড়ি ভাঙছে। স্বাগতিক বাংলাদেশ বাদ দিলে টুর্নামেন্টের বাকি পাঁচ দলই হকির আধুনিকতাকে আলিঙ্গন করে সামনে এগোচ্ছে। তাই মাঠের লড়াই জমিয়ে তোলার সব রসদ আছে এই টুর্নামেন্টে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।