জুমবাংলা ডেস্ক : পহেলা ফাল্গুন, বিশ্বভালবাসা দিবস, আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মুজিব বর্ষকে সামনে রেখে যশোরের গদখালীর ফুলচাষিরা ৪০ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনার টার্গেট নিয়েছে। আর সেই টাগের্ট অনুযায়ী ৬ হাজার ফুলচাষি ব্যস্ত সময় পার করেছেন বলে গদখালি ফুলচাষী ও ফুল ব্যবসায়ি কল্যাণ সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুর রহিম দাবি করেছেন।
রহিম জানান, ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে গদখালিতে ফুল বিক্রি শুরু হয়েছে। এর আগেই ব্যবসায়িরা ফুল মজুত করে রাখেন। যশোর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক ধরে এগিয়ে গেলে ঝিকরগাছার গদখালীবাজার। ফুলের সম্রাজ্য হিসেবেই এলাকাটির রয়েছে সারাদেশে পরিচিতি। দেশের ফুলের চাহিদার ৬০ থেকে ৭০ ভাগ জোগান দেন এখানকার চাষিরা। বিভিন্ন দিবসে সারা দেশে যে পরিমাণ ফুল বেচা-কেনা হয় তার বেশির ভাগই যশোর থেকে সরববাহ করা হয়।
প্রতিদিন ভোর থেকে গদখালী বাজারে বসে ফুলের পাইকারি বাজার। এইবাজার থেকে গড়ে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার বিভিন্ন জাতের ফুল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পোঁছে যায়। তাই বিশেষ বিশেষ দিবস উপলক্ষে এখানে বেচাকেনা হয় কোটি কোটি টাকার ফুল। এর আগেও তারা ইংরেজী নববর্ষে কয়েক কোটি টাকার ফুল বিক্রি করেছেন চাষিরা।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক ইমদাদ হোসেন জানান, এ বছর গদখালিতে ৬৩৬ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফুলের ফলন ভাল হয়েছে। এছাড়া এই অঞ্চলের অনেক কৃষক বাইরে থেকে ফুল চাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন।
সব মিলিয়ে সচেতন হওয়ায় ফুলের আবাদে কৃষকরা অধিক লাভবান হচ্ছেন। গদখালীর ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, গদখালি ফুলচাষী ও ফুল ব্যবসায়ি কল্যাণ সমিতির সভাপতি এবং বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি কেন্দ্রীয়কমিটির সভাপতি আবদুর রহিম জানান, পহেলা ফাল্গুন, বিশ্বভালবাসা দিবস, ও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে তারা এবার ৪০ কোটি টাকার ফুলবিক্রির টার্গেট নিয়েছেন। গত কয়েকদিনে প্রায় ২০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করেছেন। গদখালীতে ১০০ গোলাপ ১ হাজার টাকা আর গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা প্রতিহাজার। এছাড়া রজনীগন্ধা প্রতি পিস ৪ থেকে ৫ টাকা,জারবেরা প্রতি পিস ৮ থেকে ১৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। চাষিরা এদাম পেয়ে খুশি।
এ অঞ্চলের ফুল চাষের পথিকৃত শের আলী জানান, ১ লা ফাল্গুন, আসতেই সবাই তাকিয়ে থাকেন যশোরের ফুলের দিকে। তাই চাষিদের দম ফেলবার ফুসরত থাকে না। ঝিকরগাছা উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের গোলাম মোস্তফা জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে পলি হাউজে গোলাপ আবাদ করেছিলেন। এতে ফুলের রঙ ও আবাদ ভালো হয়। গত ৯-১৩ ফেরুয়ারি ২০ লাখ টাকার গোলাপ বিক্রি করেছি। পটুয়াপাড়া গ্রামের ইয়াকুব আলী বিক্রি করেছেন ৩ লাখ টাকার গোলাপ ফুল। নারাঙ্গাগি গ্রামের আবু তাহের বিক্রি করেছেন ৫ লাখ টাকার গোলাপ ও এক লাখ টাকার গ্লাডিওলাস।প্রতিদিনই পাইকারি বাজারে দূর-দূরান্তের ক্রেতাআসছেন। কেউ বিকাশে, কেউ ব্যাংকে টাকা দিয়ে ফুলের অর্ডার দিচ্ছেন। তবে, চাষিরা ন্যায্য মূল্যেই ফুল বিক্রি করছে বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে,ফুল নিয়ে অধিক ব্যস্ত সময় পার করছে গদখালীর ফুল চাষিরা। কোনো কোনো কৃষক ক্ষেত পরিচর্যা, কেউ ক্ষেত থেকে ফুল তুলে সাজগোজ করছেন। অনেকে বাজারে ফুল বিক্রি করতে আসছেন। সব মিলে ফুলের সাম্রাজ্য গদখালী এখন কর্মচাল্যে ভরপুর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।