জুমবাংলা ডেস্ক: খুলনা বিভাগে মাছ চাষে সেরা যশোর জেলা। এ সাফল্য দীর্ঘদিন ধরে রেখেছেন যশোরের মাছ চাষিরা। এবারও খুলনা বিভাগে মাছ উৎপাদনে প্রথম স্থানে রয়েছে যশোর। প্রতি বছর জেলাটিতে মাছ উৎপাদন বাড়ছে। এ বছর ১০ হাজার টন বেশি মাছ উৎপাদন হয়েছে। যশোর জেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে মাছ উৎপাদন করা হয়েছে ২ লাখ ৪১ হাজার ১০৭ টন। আর ২০২১-২২ অর্থবছরে মাছ উৎপাদন হয় ২ লাখ ৩১ হাজার ১৪৩ টন।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় বছরে মাছ উৎপাদন হয়ে থাকে ৭ লাখ ১৮ হাজার ৪০৫ মেট্রিক টন। এর মধ্যে চিংড়ি মাছ রয়েছে এক লাখ ১১ হাজার ২১৮ মেট্রিন টন।
এরমধ্যে মাছ উৎপাদনে পিছিয়ে রয়েছে মেহেরপুর জেলা। সেখানে মাছ উৎপাদন করা হয় ৮ হাজার ৮৭৫ মেট্রিক টন। বাগেরহাট জেলায় বছরে মাছ উৎপাদন হচ্ছে এক লাখ ২১ হাজার ৩৭৩ মেট্রিন টন, চুয়াডাঙ্গায় ১৬ হাজার ৯৫৪ মেট্রিন টন, ঝিনাইদহে ৩৮ হাজার ৮৭৬ মেট্রিন টন, খুলনায় এক লাখ ১০ হাজার ৯৫ মেট্রিন টন, কুষ্টিয়ায় ৩২ হাজার ২০২ মেট্রিন টন, মাগুরায় ১৩ হাজার ৮৪৫ মেট্রিন টন, নড়াইলে ১৪ হাজার ২৬৬ মেট্রিন টন এবং সাতক্ষীরায় মাছ উৎপাদন হচ্ছে এক লাখ ৩১ হাজার ৮৭১ মেট্রিন টন।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, মাছ উৎপাদনে এই জেলা স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রতিবছর জেলাটিতে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে মাছ উৎপাদন করা হয়েছে ২ লাখ ৪১ হাজার ১০৭ টন। আর ২০২১-২২ অর্থবছরে মাছ উৎপাদন হয় ২ লাখ ৩১ হাজার ১৪৩ টন। জেলায় ২২ প্রজাতির মাছ চাষ হয়ে থাকে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রুই মাছ উৎপাদন হয়। গত বছর রুইমাছ উৎপাদন হয় ৪৯ হাজার ৮৭০ দশমিক ৮৭ মেট্রিক টন। কাতল মাছ ১৪ হাজার ৩৯৮ মেট্রিক টন, মৃগেল ২৫ হাজার ৯৯৯ মেট্রিক টন, সিলভারকার্প ৪১ হাজার ৫৫২ মেট্রিক টন, পাঙ্গাস মাছ ১১ হাজার ৭৮১ মেট্রিক টন, তেলাপিয়া ২০ হাজার ৭৯৩ মেট্রিক টন, অন্যান্য ছোট মাছ ৫ হাজার ৯৯০ মেট্রিক টন।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিশারিজ এন্ড মেরিন বায়োসাইন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সুব্রত মন্ডল জানান, এখানকার মাটি ও পানি মাছ চাষের জন্য উপযুক্ত। যে কারণে ভালোমানের মাছ উৎপাদন হয়ে থাকে। জেলার অন্যতম মৎস্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আফিল অ্যাকোয়া ফিস। ২ হাজার বিঘা জমির উপর ৮টি ইউনিট চালু রয়েছে তাদের। যেখানে প্রতিদিন ১০ মেট্রিক টন মাছ ও মাছের পোনা উৎপাদন করা হচ্ছে। এখানে দুই হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আফিল গ্রুপের পরিচালক মাহবুব আলম লাভলু জানান, শার্শা উপজেলার মান্দারতলার জলবদ্ধ এলাকায় মৎস্য বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে গড়ে তোলা হয় অ্যাকোয়া ফিস ফার্ম। বর্তমানে আফিল অ্যাকোয়া ফিসে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রায় দেশিয় বিপুল মাছ উৎপাদন করা হচ্ছে। যেখানে মাছের গুণগতমান সঠিক রাখা হয়েছে। এতে করে একদিকে যেমন এলাকার মানুষ জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে, তেমনি মানুষের কর্মসংস্থান করা হয়েছে।
ঝিকরগাছা উপজেলার রঘুনাথনগর গ্রামের মৎস্য চাষি এসএস আহমেদ ফারুক জানান, তিনি ৩২ বছর ধরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উৎপাদন করে আসছেন। ৫২ বিঘা জমির উপর তার মৎস্য ঘের রয়েছে। এরমধ্যে পাবদা মাছ বছরে রফতানি করি ৪০ মেট্রিক টন।
জেলা মৎস্য অফিসের সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান জানান, বছরে বেনাপোল দিয়ে মাছ রপ্তানি করা হচ্ছে প্রায় ৬০ লাখ কেজি। যার রফতানি মূল্য দেড় কোটি ডলার।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ জানান, গত তিন বছরে জেলায় চাহিদার তুলনায় ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৫ মেট্রিক টন মাছ বেশি উৎপাদন হয়েছে। মাছ উৎপাদনে খুলনা বিভাগের মধ্যে যশোর প্রথম স্থানে রয়েছে। প্রতিবছর জেলাটিতে মাছ উৎপাদন বাড়ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।