স্পোর্টস ডেস্ক : ‘তোমার সুর লহরীতে ছন্দ জাগে গ্রহ-তারায়, তোমার ছোঁয়ায় কাঁপন ওঠে ঝর্ণাধারায়। তুমি হাঁটলেই যেন পথ হয়ে ওঠে সুন্দর, দিকহারা জাহাজও খুঁজে পায় কাঙ্ক্ষিত সেই বন্দর’।
লিওনেল মেসিই সেই নাবিক, পথহারা জাহাজকে যিনি এক লহমায় নিয়ে যান কাঙ্ক্ষিত বন্দরে। এবার সোজাসাপ্টাই বলে দেওয়া যায়, ‘সত্যিকারের নেতাকে দেখতে চান, তবে মেসিকেই দেখুন’।
মেসি কেমন নেতা বা কতো ভালো নেতা তা বোঝার জন্য আপনাকে রকেট সাইন্স বুঝতে হবে না। খালি ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আলভারজকে করা মেসির অ্যাসিস্টটা দেখুন। কী সুন্দর করে কাটিয়ে নেওয়া বলটা কী অবলীলায় মেসি আলভারেজের পায়ে তুলে দিলেন। একবারও নিজের খাতায় গোলটা যোগ করার কথা ভাবলেন না!
সতীর্থর পায়ে বল তুলে যেমন দেন মেসি, তেমন নিজেকেও সঁপে দিয়েছেন দলের প্রতি। গোটা বিশ্বকাপে তার নিবেদনের কোনো কমতি নেই। হয়তো ম্যারাডোনার মতো গোল অব দ্য সেঞ্চুরি করা হয়নি তার, তবে তিনি লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট। দলের যেখানে যেমন প্রয়োজন তেমনই করছেন। ফুটবলে তিনি লিডার অব দ্য সেঞ্চুরি নির্ঘাত।
মেসির জন্য সতীর্থরা জীবন দিতেও প্রস্তুত, এই ঘোষণা বারবার এসেছে। নেতা কতোটা ভালো হলে তার জন্য মানুষ জীবন দিতে চায়, সেটা মনে হয় মাঠের মেসিকে দেখেই অনেকে বুঝে গেছেন। ফুটবলার মেসির নিন্দুক আপনি হতে পারেন, কিন্তু নেতা মেসিকে অস্বীকার করবেন সেই সাধ্য কোথায়?
বিনিসুতোয় যিনি সবকিছু বাঁধতে পারেন, ভাঙন থেকেই শুরু করতে পারেন গড়ার কাজ; তাকে যোগ্য কারিগর না বলে উপায় কী? অন্তত এবারের বিশ্বকাপে মেসির মতো সুন্দর সাবলীল কাউকে দেখা যায়নি। ফুটবলে তার মতো সহজাত যেমন কেউ নেই, নেতৃত্বেও না!
নেতার মতো তিনি আচরণে অতো ভারিক্কি নন, সতীর্থদেরও কথায় কথায় ধমকান না। আধিপত্য বিস্তারের কোনো চেষ্টাও করেন না মেসি। তাকে দেখে সতীর্থরা ভয়ে জড়োসড়ো হয় না। উল্টো তার ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে সতীর্থরা বুঝে নেন কার কোনটা করতে হবে। মেসি কাউকে শিখিয়ে দেন না মারধর করে, তিনি শেখান তার চলনে বলনে।
আর ভালোবেসে যে হৃদয় জয় করেন সবার। তাকে ঘৃণা করবে এমন সাধ্য আছে কার?
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।