লাইফস্টাইল ডেস্ক : ম্যাগনেসিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যা আমাদের পেশী এবং স্নায়ু কীভাবে কাজ করে তা নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও শরীরের শত শত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে ম্যাগনেসিয়াম। এটি হাড়কে মজবুত রাখে, হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে এবং রক্তে শর্করাকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। অনেক খাবার এবং পানীয়তে ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিপূরক হিসেবেও খনিজটি গ্রহণ করা যায়।
কতোটুকু ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন আমাদের?
একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর প্রতিদিন প্রায় ৩১০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন এবং ৩০ বছর বয়সের পরে প্রয়োজন ৩২০ মিলিগ্রাম। গর্ভবতী নারীদের অতিরিক্ত ৪০ মিলিগ্রাম প্রয়োজন। ৩১ বছরের কম বয়সী প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের প্রয়োজন ৪০০ মিলিগ্রাম এবং ৩১ বছরের পরে দরকার ৪২০ মিলিগ্রাম। শিশুদের বয়স এবং লিঙ্গের উপর নির্ভর করে ৩০ থেকে ৪১০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন হতে পারে।
ম্যাগনেসিয়ামের অভাব হলে কী হয়?
প্রয়োজনের তুলনায় কম ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং মাইগ্রেনসহ বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্ক, মদ্যপানকারী এবং যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস বা হজমের সমস্যা রয়েছে, তাদের খনিজটির অভাব হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
অতিরিক্ত ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করলে কী হয়?
আপনি যদি সুস্থ থাকেন, তাহলে আপনার কিডনি খাবার থেকে পাওয়া অতিরিক্ত ম্যাগনেসিয়াম বের করে দেয়। তারপরেও শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় ম্যাগনেসিয়াম বাড়তি হয়ে গেলে অত্যধিক ক্র্যাম্প বা বমি বমি ভাব হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনোই সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করবেন না।
ম্যাগনেসিয়াম আমাদের কীভাবে সুস্থ রাখে?
শরীর নতুন হাড়ের কোষ তৈরি করতে ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন। হাড়ের ক্ষয়, ভেঙে যাওয়া এবং হাড়ের রোগ অস্টিওপরোসিস থেকে রক্ষা করতে পারে ম্যাগনেসিয়াম।
ম্যাগনেসিয়াম শরীরকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে।
ম্যাগনেসিয়াম হার্টকে রক্ত পাম্প করতে সাহায্য করে। খনিজটির সঠিক মাত্রা অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে। ম্যাগনেসিয়াম রক্তনালীগুলোর দেয়ালকে শিথিল করে এবং রক্তচাপ কম রাখতে সাহায্য করে। এটি আপনার এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতেও সাহায্য করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ম্যাগনেসিয়াম মস্তিষ্কে ব্যথার রাসায়নিকগুলোকে ব্লক বা কম করতে সাহায্য করে এবং রক্তনালীগুলোকে শক্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে। পর্যাপ্ত ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে তাই মাইগ্রেন হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
ম্যাগনেসিয়াম ইনসুলিন নামক হরমোনকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। ইনসুলিন রক্তে শর্করার মাত্রা স্থির রাখতে সাহায্য করে। ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।
কোন কোন খাবারে ম্যাগনেসিয়াম মিলবে?
এক আউন্স বাদাম বা কাজুতে ৮০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম পাবেন। ম্যাগনেসিয়ামের অন্যান্য উৎসগুলোর মধ্যে রয়েছে কুমড়ার বীজ, সূর্যমুখী বীজ, চিনাবাদাম। এগুলোকে সালাদে ছিটিয়ে দিতে পারেন। হার্টের জন্য উপকারী স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও পাবেন এগুলোতে। প্রচুর ফাইবার এবং ম্যাগনেসিয়াম মেলে শস্যজাতীয় খাবারে। ওটমিল ও বাদামী চাল খেতে পারেন পর্যাপ্ত ম্যাগনেসিয়াম পেতে চাইলে। এক কাপ রান্না করা পালং শাকে ১৫০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। এছাড়া গাঢ় পাতাযুক্ত সবুজ শাক থেকে পাবেন উপকারী এই খনিজ। এছাড়া ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন এবং ভিটামিন এ, সি এবং কেও রয়েছে এগুলোতে৷
এক কাপ সয়া মিল্ক ৬০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়ামের জোগান দিতে পারে। ছোলা, মটরশুঁটি, কিডনি বিন ম্যাগনেসিয়ামের দারুণ উৎস। ম্যাগনেসিয়াম ছাড়াও ফাইবার, প্রোটিন, আয়রন এবং জিঙ্কের উৎস এইগুলো।
তথ্য: ওয়েবএমডি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।